Municipality Recruitment: পুরনিয়োগে চাঞ্চল্যকর তথ্য দফতরেরই অভ্যন্তরীণ রিপোর্টে, কী বলছেন মন্ত্রী ফিরহাদ?
Municipality: পুর নিয়োগে অনিয়ম নিয়ে শোরগোল শুরু হতেই খোদ পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম গোটা বিষয়টি অভ্যন্তরীণভাবে খতিয়ে দেখা নির্দেশ দেন। দায়িত্ব বর্তায় তাঁরই দফতরের প্রধান সচিব-সহ অন্যান্য কর্তাদের হাতে। মন্ত্রীর কাছে নির্দেশ পাওয়ার পর যুদ্ধকালীন তৎপরতায় গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শুরু করেন দফতরের শীর্ষ কর্তারা।
কলকাতা: পুরনিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ। আর সেই অভিযোগের তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এরইমধ্যে পুরদফতরের অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট ঘিরে নয়া মোড়। সূত্রের খবর, সেই রিপোর্টে উঠে এসেছে, নিয়ম না মেনে অন্য একটি সংস্থাকে নিয়োগসংক্রান্ত কাজের বরাত দেওয়া হয়েছিল। পুরনিয়োগ নিয়ে সিবিআইকে তদন্তের ভার দেয় হাইকোর্ট (High Court)। অন্যদিকে এই দুর্নীতির অভিযোগকে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয় অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট তৈরির কাজ। পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের সেই রিপোর্টেই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে বলে সূত্রের খবর।
সূত্রের দাবি, দফতরের অভ্যন্তরীণ রিপোর্টে উঠে এসেছে, পুরসভাগুলির তরফে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের নিয়োগের মাপকাঠির মান্যতা দেওয়া হয়নি। সূত্রের খবর, যে ধরনের নিয়ম-কানুন মানা উচিত, সেটাকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়নি নিয়োগের ক্ষেত্রে। তৃতীয় সংস্থা, যাকে এই নিয়োগ পদ্ধতিতে যুক্ত করার কথাই নয়, তাকে টেন্ডার মারফত ঢোকানো হয়েছে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে। যে কারণে সম্পূর্ণ নিয়োগ পদ্ধতি বর্তমানে আতস কাঁচের তলায় চলে এসেছে। এমনকী দফতরের নির্দেশকে অগ্রাহ্য করে এবং দফতরকে না জানিয়েই নিয়োগের ক্ষেত্রে ‘যা খুশি তাই’ করা হয়েছে বলেও দফতরের অভ্যন্তরীণ তদন্তে প্রাথমিকভাবে উঠে এসেছে বলে খবর।
পুর নিয়োগে অনিয়ম নিয়ে শোরগোল শুরু হতেই খোদ পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম গোটা বিষয়টি অভ্যন্তরীণভাবে খতিয়ে দেখা নির্দেশ দেন। দায়িত্ব বর্তায় তাঁরই দফতরের প্রধান সচিব-সহ অন্যান্য কর্তাদের হাতে। মন্ত্রীর কাছে নির্দেশ পাওয়ার পর যুদ্ধকালীন তৎপরতায় গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শুরু করেন দফতরের শীর্ষ কর্তারা। সেখানেই দেখা যায়, পুরসভাগুলির তরফে নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাপকাঠিকে মান্যতা না দেওয়াতেই কর্মী নিয়োগে আজ এত বড় প্রশ্ন উঠেছে। যদিও এ বিষয়ে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, “দেখতে হবে তারা টেন্ডার মেনে প্রসেস করেছে কি না। এরপর থার্ড পার্টি কী করল তার দায়িত্ব এদের নয়। পুরসভা তাদের প্রসেস মেনে নির্দিষ্টভাবে করেছে কি না সেটাই দেখতে হবে।”
রাজ্যে শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার করা হয় হুগলির প্রোমোটার অয়ন শীলকে। অয়নের সল্টলেকের অফিসে তল্লাশি চালিয়ে বিভিন্ন পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত নথি উদ্ধার করেছিল ইডি। ওই অফিস থেকে পুরসভার বিভিন্ন পদে চাকরিপ্রার্থীদের ওএমআর শিট (উত্তরপত্র) পাওয়া গিয়েছে বলেও দাবি করেছিলেন তদন্তকারীরা। ইডি মনে করছে, অয়নের সংস্থা যে সব উত্তরপত্রের মূল্যায়ণ করেছে, সে সব ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়ে থাকতে পারে। কাঁচরাপাড়া, টাকি, দক্ষিণ দমদম, হালিশহর, বরানগর-সহ বহু পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতিতে অয়ন জড়িত ছিলেন বলে দাবি করা হয়েছে।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রায় ১ হাজার জন চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে অয়ন ৪৫ কোটি টাকা তুলেছেন বলে চার্জশিটে দাবি করেছে ইডি। পুর নিয়োগের জন্য চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে অয়ন ৩৫-৪০ কোটি টাকা তুলেছেন বলে ইডি সূত্রে খবর। পুর দফতরের কর্তাদের মতে, বিগত ৯-১০ বছরের কর্মী নিয়োগের যে তথ্য চাওয়া হয়েছে, সেগুলিকে সঠিকভাবে পর্যালোচনা করলেই বোঝা যাবে অয়ন শীলের সংস্থা ঠিক কীভাবে প্রভাব খাটিয়েছে।
তবে পুর দফতরের প্যারামিটার না মানার বিষয়টি প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, “১০০ শতাংশ সব প্যারামিটার সবাই মানতে পারে না। যখন প্রতিদিনের কাজ করতে হয়, সব প্যারামিটার সব সময় মানা যায় না। ধরা যাক, কোথাও একটা রাস্তা খারাপ হয়েছে, নিয়ম মেনে টেন্ডার করে সেই কাজ করতে অন্তত কয়েক মাস লেগে যাবে। এমারজেন্সি হলে তখন পুরসভাকে তাৎক্ষণিক সেই রাস্তা সারাতে হয়। বিতর্ক হলে তখন এসব প্রকাশ্যে আসে। আদালত এখন একটা অর্ডার দিয়েছে তাই সমস্ত প্যারামিটারের প্রশ্ন আসছে। আমার বিশ্বাস, পুরসভায় যারা পরিচালনা করে তাদের দ্বারা এসব হয়নি। দেখা যাক তদন্ত হচ্ছে।”