Babul Supriyo: রাজনৈতিক নেতাদের কেন মানুষ অপছন্দ করে? নিজের দিকেই ব্যুমেরাং হয়ে ফিরল বাবুল-বাণী
Babul Supriyo: 'দম বন্ধ হয়ে আসা,' 'মানুষের জন্য কাজ করতে না পারা,' একুশের ভোটে বাংলার রাজনীতিতে এই শব্দবন্ধ পরিচিত। আর দলবদলের ঘটনায় আলাদা করেও কেউ আশ্চর্য হন না। মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী, দীনেশ ত্রিবেদী থেকে বিশ্বজিৎ দাস- উদাহরণ অনেক। শনিবারের বারবেলা নয়া সংযোজন বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo)।
কলকাতা: ‘দম বন্ধ হয়ে আসা,’ ‘মানুষের জন্য কাজ করতে না পারা,’ একুশের ভোটে বাংলার রাজনীতিতে এই শব্দবন্ধ পরিচিত। আর দলবদলের ঘটনায় আলাদা করেও কেউ আশ্চর্য হন না। মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী, দীনেশ ত্রিবেদী থেকে বিশ্বজিৎ দাস- উদাহরণ অনেক। শনিবারের বারবেলা নয়া সংযোজন বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo)। তাঁর দলবদলে স্বাভাবিক ভাবেই সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি আক্রমণ শুরু করেছে। নিছক কটাক্ষ বা বিদ্রূপ নয়, বাবুল সুপ্রিয়কে আক্রমণে তো তৃণমূলকে আক্রমণ করে তাঁর গাওয়া গানকেই হাতিয়ার করেছে বঙ্গ বিজেপি। কিন্তু যে দলবদলের রাজনীতি নিয়ে নিজেই বিরক্তি প্রকাশ করেছেন বাবুল, আজ নিজের বেলা কি সেই আত্মসমালোচনা করবেন? কয়েকদিন আগে করা তাঁর একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টই সেই উত্তরের খোঁজ করছে।
গত জুন মাস। আচমকাই তৃণমূলে ঘরোওয়াপসি করেন বিজেপির তৎকালীন সর্বভারতীয় নেতা মুকুল রায়। ব্যাপারটা মোটেই ভাল চোখে নেননি বাবুল। সোশ্যাল মিডিয়ায় তীক্ষ্ণভাবে বিঁধেছিলেন মুকুলকে। তাঁর একটি টুইট ছিল, “আচ্ছা বলুন তো, রাজনৈতিক নেতাদের মানুষ অপছন্দ কেন করবে না? কোনো রাজনৈতিক নেতার থেকে ‘নৈতিক’ কিছু মানুষ (আর) আশা করে না-তাদের দোষও দেব না। দলও অনেকেই বদলায়, সেটাও ঠিক আছে। কিন্তু ব্যাডমিন্টনের শাটল-এর মতো এদিক ওদিক করার একটা বয়সও তো আছে। আত্মসম্মান ব্যাপারটা না হয় ছেড়েই দিলাম।” (বানান অপরিবর্তনীয়)।
আচ্ছা বলুন তো, রাজনৈতিক নেতাদের মানুষ অপছন্দ কেন করবে না•কোনো রাজনৈতিক নেতার থেকে ‘নৈতিক’ কিছু মানুষ (আর) আশা করে না-তাদের দোষও দেব না | দলও অনেকেই বদলায়, সেটাও ঠিক আছে | কিন্তু ব্যাডমিন্টনের শাটল-এর মতো এদিক ওদিক করার একটা বয়সও তো আছে•আত্মসম্মান ব্যাপারটা না হয় ছেড়েই দিলাম
— Babul Supriyo (@SuPriyoBabul) June 11, 2021
বলা বাহুল্য বাবুলের এই টুইট ছিল মুকুলকে নিশানা করে। এখানেই থামেননি তিনি। লিখেছিলেন,”রাজ্যসভার তৃণমূল সদস্য থাকাকালীন রোজ সিগারেটে সুখটান দিতে দিতে (মুকুল) বলতেন, “কবে জয়েন করাবে তোমরা বিজেপিতে? সংগঠনটা বানাতে হবে তো! বেশিদিন কিন্তু টাইম নেই।” সংসদের সেন্ট্রাল হলে গল্প হত। শুধু শিষ্টাচারের খাতিরে তার বিস্তারিত আলোচনায় যাচ্ছি না।”
খালি এটুকু বলতে পারি যে, এখন ‘বানের জলে ভেসে’ই সেই ‘কিছু নেতা’ তৃণমূলে আবার ফিরে গেলে বিজেপির ‘অপকারের’ থেকে ‘উপকার’ই বেশি হবে | অযথা মাতব্বরি করে সময় নষ্ট না করে, এই ‘লোকগুলি’ তাদের ‘শেক’- বাকর’ – চেলা – চামুন্ডা’ দের সঙ্গে নিয়ে তাড়াতাড়ি ‘নিজগৃহ-তৃণমূলে’ ফিরে যাক
— Babul Supriyo (@SuPriyoBabul) June 27, 2021
দলত্যাগ নিয়ে ক্ষুব্ধ এহেন বাবুল নিজের বেলায় কী বলছেন?
রবিবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর দাবি, তিনি তো দলবদল করে কোনও ইতিহাস তৈরি করেননি। তাঁর আগে দলবদলের ঘটনা বহু রয়েছে। অকাট্য যুক্তি। তাছাড়া রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেওয়া চিন্তা করা বাবুল তৃণমূলে যোগ দিতে মাত্র তিনদিন সময় নিয়েছেন বলে জানালেন। তৃণমূলে যোগ দেওয়াকে বড় সুযোগ হিসাবে দেখেছেন তিনি। কিন্তু তাঁর নিজের করা টুইটই ব্যুমেরাং হয়ে ফিরছে আসানসোলের দুই বারের সাংসদের দিকে।
যেমন এক টুইটে দলবদলু মুকুল রায়ের উদ্দেশে তিনি লিখেছিলেন, “যাইহোক, মুকুলদা যে ধরণের ঘোলাজলে সাঁতার কাটতে ভালোবাসেন আর ‘গভীর জলের মাছ’ ধরেন, সেখানে…” সেই সঙ্গে স্বভাবসিদ্ধ ভাবে তৃণমূলকে আক্রমণ করে লিখেছিলেন, “খালি এটুকু বলতে পারি যে, এখন ‘বানের জলে ভেসে’ই সেই ‘কিছু নেতা’ তৃণমূলে আবার ফিরে গেলে বিজেপির ‘অপকারের’ থেকে ‘উপকার’ই বেশি হবে। অযথা মাতব্বরি করে সময় নষ্ট না করে, এই ‘লোকগুলি’ তাদের ‘শেক’- বাকর’ – চেলা – চামুন্ডা’ দের সঙ্গে নিয়ে তাড়াতাড়ি ‘নিজগৃহ-তৃণমূলে’ ফিরে যাক।”
যাইহোক, মুকুলদা যে ধরণের ঘোলাজলে সাঁতার কাটতে ভালোবাসেন আর ‘গভীর জলের মাছ’ ধরেন, সেখানেই খুশি মনে ফিরে গেছেন এটা বেশ ভালোই হয়েছে ! ? All the Very Best to him@BJP4Bengal @BJP4India
— Babul Supriyo (@SuPriyoBabul) June 11, 2021
সেই সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টই এখন নেটিজেনদের ওয়ালে ওয়ালে মিম-ট্রোলের উপাদান হয়ে উঠেছে। তবে এর উত্তর হয়ত মিলবে না বাবুলের কাছ থেকে। কারণ, তিনি এদিনই জানিয়ে দিয়েছেন মোবাইলে ফেসবুক, টুইটারের মতো সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ আর তিনি ব্যবহার করেন না।
আরও পড়ুন: Babul Supriyo: যাঁর হাত ধরে প্রথম সাংসদ হওয়া, গোল করা শেখা, বাবুলের ফুল-বদলে সেই ‘কোচ’ বললেন…