হাত বাড়ালেই পাওয়া যাবে শান্তির ঠিকানা! উইকেন্ডে ঘুরে আসুন কলকাতার কাছাকাছি…
গরমের ক্লান্তি দূর করতে হাত বাড়ালেই কোথায় গিয়ে শান্তি পাওয়া যায়, তার খোঁজে রয়েছন? কলকাতার কিছুটা দূরেই রয়েছে মনোরম চারটে ট্যুরিস্ট স্পট। শান্ত- নিরিবিলি লোকালয়ে নিজের সঙ্গে বা পরিবারের সঙ্গে একান্তে সময় কাটাতে এখানে যেতেই পারেন....
একে করোনা, তার উপর ভোটের আবহ রাজ্যজুড়ে। উইকেন্ড প্ল্যানিংয়ের চিন্তা থাকলেও কোথায় যাবেন, তা ভেবে কূল পাচ্ছেন না। কলকাতা থেকে একটু দূরে, নিরিবিলি ও শান্ত জায়গায় সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে কিংবা পরিবারকে নিয়ে একান্তে সময় কাটাবেন, তা সুনিশ্চিত করতে পারছেন না। সেই সমস্যার সমাধানের উপায় আমরা জানাচ্ছি।
ফলতা: ব্রিটিশ সাম্রাজ্য, নবাবি ইতিহাস, ওলন্দাজ কলোনির মতো বর্ণময় অতীত ছাড়াও ফলতার গঙ্গাতীর ধরে রয়েছে মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। ভোটযুদ্ধ আর তপ্ত গরমে পরিস্থিতি যখন বেশ উত্তপ্ত, তখন লং ড্রাইভে পরিবারকে নিয়ে ছোট্ট উইকেন্ড ট্যুর করতে ফলতায় যেতে পারেন। গঙ্গাতীরের সৌন্দর্য তো বটেই, ঘুরে আসতে পারেন পুরনো বন্দর, ডাচ কলোনি, প্রখ্যাত বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বোসের বাড়ি, রায়চক ফোর্টেও।
কীভাবে যাবেন- ট্রেনে করে গেলে একদম কাছের স্টেশন ডায়মন্ড হারবারে নামবেন। সেখান থেকে একঘন্টার রাস্তা। অন্যদিকে গাড়ি নিয়েও যেতে পারেন। কলকাতা থেকে মাত্র ৫০ কিমি দূরে অবস্থিত। ডায়মন্ড হারবার হয়ে মাত্র ২ ঘন্টার পথ। যেকোনও মরসুমেই ফলতায় যেতে পারেন।
দারন্দা গ্রাম: বীরভূমের ইলামবাজার তেহসিলের অন্যতম ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশন দারন্দা গ্রাম। শহরের ব্যস্ততা ছাপিয়ে গ্রামের মনোরম পরিবেশে সময় কাটাতে চাইলে দারন্দাতে যেতে পারেন নিঃসন্দেহে। বোলপুর শহর থেকে মাত্র ১১ কিমি দূরে এই সুন্দরী গ্রামের। ইলামবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্ভুক্ত এই গ্রামে মাত্র ২৯১টি ঘর। তাই জনবসতি কম হওয়ায় এখানকার পরিবেশ শান্ত। লক্ষ্মীসায়র, শান্তিনিকেতন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আশ্রমেও ঘুরে আসতে পারেন। ক্যামেরাবন্দি করতে পারেন সুর্যোদয়ের মুহূর্তগুলিকেও।
কীভাবে যাবেন- কলকাতা থেকে মাত্র ১৬৫ কিমি দূরে এই গ্রাম। গাড়িতে করে গেলে সময় লাগবে মাত্র ৩ ঘন্টা ৪০ মিনিট। ট্রেনেও যেতে পারেন। বোলপুর-শান্তিনিকেতন রেলস্টেশনে নেমে দারন্দা গ্রামে যেতে সময় লাগবে আধঘন্টা। স্টেশন থেকে গাড়ি ভাড়া করে পৌঁছে যাবেন দারন্দাতে।
আসান নগর- নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরের আসান নগর নামে একটি ছোট্ট গ্রাম। আসাননগরের নাম শুনে থাকতে পারেন বইয়ের পাতাতে। বাংলার কুখ্যাত ডাকাত বিশে ডাকাত ছিল এই আসান নগরের বাসিন্দা। লেঠেল দলের সর্দার বিশ্বনাথের নামে বুক কাঁপত জমিদার থেকে দারোয়ানের। আসান নগর ও ভীমপুরের বাসিন্দাদের জনপ্রিয় লালন মেলার সুখ্যাতি নিশ্চয় শুনেছেন। কদমখালির মাঠে এই লালন মেলা হয়। লালন ফকিরের গান, বাংলার বাউলদের নিয়ে মেলা এই উত্সবের অন্যতম অংশ। মায়াপুর, নবদ্বীপ থেকে কয়েক কিমি দূরেই এই ছোট্ট সাজানো গ্রাম।
কীভাবে যাবেন- ট্রেনে করে গেলে কৃষ্ণনগর স্টেশন বা মাঝদিয়া স্টেশনে নেমে স্থানীয় বাস, ই-রিকসায় করে পৌঁছে যাবেন আসাননগরে। কলকাতা থেকে ১৩০ কিমি দূরে এই গ্রাম। গাড়ি করে গেলে সময় লাগবে মাত্র ৪ ঘন্টা ৩০ মিনিট। থাকার বন্দোবস্তও রয়েছে সেখানে।
মিনাখাঁ- বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা মিনাখাঁতে ঘটলেও পরিবারকে নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন নিরাপদে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট সাবডিভিশনের অন্তর্গত সবুজে ঘেরা ছোট্ট এলাকা মিনাখাঁ। ইচামতী ও বিদ্যাধরী নদীর মিলনস্থলে রয়েছে বিশাল মাছের বাজার। মালঞ্চ গ্রামে ঢুকেই নাক সিঁটকাবেন। কিন্তু টাটকা মাছভাজা আর মাছের কারি খেলে বার বার যেতে ইচ্ছে করবে এখানে। সবুজঘেরা জলমগ্ন এলাকায় ভাসমান রিসর্টও রয়েছে।
কীভাবে যাবেন: মিনাখাঁতে যাওয়ার জন্য দুটি স্টেশন রয়েছে। কাঁকড়া মিরজানগর ও মালতীপুর। দুটি স্টেশন থেকে মিনাখাঁর দূরত্ব মাত্র ১৮ কিমি।কলকাতা থেকে বেশিদূরে নয়। গাড়িতে সময় লাগবে মাত্র ১ ঘন্টা ৪০ মিনিট। শীতকালে গেলে ভাল, গরমের মরসুমেও মন্দ নয়।