National Handloom Day: ভারতীয় হ্যান্ডলুম এবং ফ্যাশান ঐতিহ্যে পালাবদল যে ভাবে হয়েছে…

Handloom Saree: প্রতি বছর ৭ অগস্ট দিনটি পালন করা হয় জাতীয় তাঁত দিবস হিসেবে। স্বদেশী আন্দোলনের কথা স্মরণে রেখেই এই দিনটি পালন করা হয়...

National Handloom Day: ভারতীয় হ্যান্ডলুম এবং ফ্যাশান ঐতিহ্যে পালাবদল যে ভাবে হয়েছে...
জাতীয় তাঁত দিবস
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 07, 2022 | 10:36 PM

যতই বাজারে সিল্ক, শিফন, লিনেন, জর্জেট আর অরগ্যাঞ্জার কদর থাক না কেন হ্যান্ডলুমের কাছে সবই যেন ফিকে। সকালের যে কোনও অনুষ্ঠানে যেমন পরা যায় হ্যান্ডলুমের শাড়ি তেমনই সন্ধ্যেতেও পরা যায়। এছাড়াও যে কোনও শুভ অনুষ্ঠানে প্রথমেই হ্যান্ডলুমের শাড়ি থাকে তালিকায় সবচেয়ে উপরে। হ্যান্ডলুমের শাড়ি বললে প্রথমেই মাথায় আসে তাঁতের শাড়ির কথা। তাঁতের আনুমানিক বয়েস ৫০০ বছরেরও বেশি। বলা হয় মোঘল সাম্রাজ্যের সময় তাঁতের খ্যাতি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায়। রাজবাড়িতে ব্যবহৃত হত মসলিনের কাপড় আর সাধারণ মানুষের জন্য বরাদ্দ থাকত তাঁতের মোটা কাপড়। পরবর্তী সময়ে ভারতে যখন ব্রিটিশ রাজ শুরু হয়, তখন ইংরেজদের চক্ষুশূল হয়ে দাঁড়ায় তাঁত শিল্প। ম্যাঞ্চেস্টারে তৈরি কাপড়ে তখন ভারতের বাজার ভরিয়ে দিতে থাকে ইংরেজ সরকার। সেই সঙ্গে তাঁত বোনা এবং তাঁদের কাপড় পরাও নিষিদ্ধ হয়ে যায়। অনেক কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে পেরিয়ে এলেও হাল ছাড়েনি তাঁতিরা। লড়াই করে নিজেকে টিকিয়ে রেয়েছে বাংলার এই প্রাচীন ঐতিহ্যশালী শিল্প। এরপর বঙ্গভঙ্গ হয়েছে, ওপার বাংলা থেকে প্রচুর তাঁতি চলে আসেন এপার বাংলায়।

তাঁত তৈরি হয় সুতি থেকে। উৎপাদিত সুতো প্রথমে রাসায়নিক ভাবে ধোয়া হয়, তারপর সেগুলি রোদে শুকিয়ে নেওয়া হয়। তারপর আবারও রঙিন সুতো সাদা করা হয় রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। তাঁতের শাড়িতে আংচল জুড়ে নকশা থাকে, আর এই নকশাগুলি কিন্তু আঁকেন তাঁতিরাই। একটা পুরো তাঁতের শাড়ি বানাতে ১০-১২ ঘন্টা পর্যন্ত সময় লাগে। কোনও ক্ষেত্রে নকশা জটিল হলে পাঁচ-ছ’দিন সময়ও লাগতে পারে। যে অঞ্চলে তাঁত বোনা হয় এবং যেই অঞ্চলের নকশার উপর ভিত্তি করে তাঁতের শ্রেণীবিভাজন করা হয়। ফুলিয়া, শান্তিপুর, ধনেখালি, বেগমপুর, কালনাতেই এখন সবচেয়ে বেশি তাঁত বোনা হয়।

প্রতি বছর ৭ অগস্ট দিনটি পালন করা হয় জাতীয় তাঁত দিবস হিসেবে। স্বদেশী আন্দোলনের কথা স্মরণে রেখেই এই দিনটি পালন করা হয়। সেই সঙ্গে তাঁত শিল্পীদের উৎসাহ দেওয়াও এর লক্ষ্য। তাঁত শিল্পীদের উৎসাহ দিতে এখন প্রতি বছর উদ্যোগ নেওয়া হয় তাঁত মেলারও। তাঁতের তৈরি গামছা, ধুতি, শাড়ি পছন্দ করেন না এমন মানুষের সংখ্যা খুব কম। যে কোনও শুভ অনুষ্ঠানের সূচনা হয় তাঁতের গামছা, শাড়ি, ধুতি, তাঁত বস্ত্র দিয়েই। তাঁতেরও এখন আধুনিকীকরণ হয়েছে। সফট ঢাকাই, হ্যান্ডলুমের কদর বেড়েছে। তাঁত এবং হস্তশিল্প ভারতের গর্ব। তাকে বাঁচিয়ে রাখতে উদ্যোগী হতে হবে আমাদেরই।