International Kite Festival 2022: উৎসবেও ভাঁটা! ওমিক্রনের কারণে এবারেও অনুষ্ঠিত হচ্ছে না গুজরাতের ঘুড়ি ওড়ানোর উৎসব

এই বছরও গুজরাতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে না ঘুড়ি ওড়ানোর উৎসব। এর পাশাপাশি ফ্লাওয়ার শোও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে গুজরাত রাজ্য সরকারের তরফ থেকে। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে বিগত দু'বছর ধরে বন্ধ রয়েছে আহমেদাবাদের বিখ্যাত ঘুড়ির উৎসব।

International Kite Festival 2022: উৎসবেও ভাঁটা! ওমিক্রনের কারণে এবারেও অনুষ্ঠিত হচ্ছে না গুজরাতের ঘুড়ি ওড়ানোর উৎসব
আন্তর্জাতিক ঘুড়ি উৎসব
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 12, 2022 | 10:02 PM

করোনা ভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের প্রকোপের কারণে আবারও বন্ধ হল মকর সংক্রান্তির উৎসব। এই বছরও গুজরাতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে না ঘুড়ি ওড়ানোর উৎসব। এর পাশাপাশি ফ্লাওয়ার শোও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে গুজরাত রাজ্য সরকারের তরফ থেকে। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে বিগত দু’বছর ধরে বন্ধ রয়েছে আহমেদাবাদের বিখ্যাত ঘুড়ির উৎসব।

মকর সংক্রান্তি সৌর ক্যালেন্ডার অনুসারে নির্ধারিত ভারতীয় উৎসবগুলির মধ্যে একটি। মকর সংক্রান্তি ফসল কাটার মরসুমের শুরুর সংকেত দেয়। সবচেয়ে মজার বিষয় হল, এই উৎসবটি দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে পালিত হলেও বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন পঞ্জাবে লোহরি, তামিলনাড়ুতে পোঙ্গল, অসমে বিহু ইত্যাদি। তেমনই এই উৎসবকে কেন্দ্র করে গুজরাতে পালিত উত্তরায়ণ।

উত্তরায়ণের ধার্মিক ও বৈজ্ঞানিক তাৎপর্য থাকলেও গুজরাতে এই উৎসবের একটি আলাদা মহাত্ম্য রয়েছে। তবে উত্তরায়ণের সবচেয়ে ভাল বিষয় হল মকর সংক্রান্তিকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর গুজরাতে আয়োজিত হয় আন্তর্জাতিক ঘুড়ি উৎসব। এক সপ্তাহ ধরে ছোট থেকে বড় সবাই মেতে ওঠে এই উৎসবে।

প্রতি বছর মকর সংক্রান্তির সময় আহমেদাবাদে আয়োজিত করা হয় এই আন্তর্জাতিক ঘুড়ি উৎসব। কিন্তু গত দু বছর ধরে করোনা ভাইরাসের প্রকোপের কারণে অনুষ্ঠিত হচ্ছে না এই উৎসব। প্রতি বছর সবরমতী নদীর সামনে আশ্রম রোডে আয়োজন করা ঘুড়ি ওড়ানোর উৎসবের। এই বছর ৬ জানুয়ারি থেকে ১৪ জানুয়ারি এই উৎসব অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এই উৎসব বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।

এই সময় আহেমদাবাদে গেলে আপনার নজর কাড়তে বাধ্য রঙ-বেরঙের ঘুড়ি। শুধু রঙ নয়, এমন আকৃতির ঘুড়ি এই উৎসবে ওড়ে যা হয়তো আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। বিভিন্ন পশু পাখির আকৃতির ঘুড়ি থেকে শুরু করে কার্টুন চরিত্রের ঘুড়িও চোখে পড়বে এখানে। এক সপ্তাহব্যাপী এই উৎসবের তোরজোড় শুরু হয় বহু আগে থেকে। বহু নামী-দামী শিল্পীরা ঘুড়ি তৈরি করেন।

ঘুড়ি ওড়ানোর শখ এবং শিল্প ভারতের রাজা-মহারাজার যুগ থেকে চলে আসছে। তবে এই শিল্প কবে থেকে শুরু হয়েছিল তা এখনও অস্পষ্ট। অনেকে মনে করেন যে সব মুসলিম ব্যবসায়ীরা পারস্য থেকে আমাদের দেশে এসেছিলেন, তাঁরাই এই ঘুড়ি ওড়ানোর জন্য ঐতিহ্য সঙ্গে করে নিয়ে আসেন। অন্যদিকে অনেকের ধারণা, চিন থেকে আগত ব্যবসায়ীরা এবং তিব্বতের তীর্থযাত্রীরা এই খেলার সঙ্গে নাকি ভারতীয়দের পরিচয় ঘটিয়েছিল। যেহেতু গুজরাত ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র, তাই মনে করা হয় এখানেই নাকি ঘুড়ি উড়িয়ে ধর্ম ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটানো হয়েছিল। যদিও এই বিষয়ে কোনও সত্যতা নেই এবং বেশির ভাগ মানুষের ধারণা ঘুড়ি ওড়ানোর এই খেলা ভারতে প্রথম থেকেই রয়েছে।

ইতিহাস যাই বলুক না কেন, এখন যদি আপনি মকর সংক্রান্তিতে আহমেদাবাদ যান, তাহলে অবশ্যই সামিল হবেন আন্তর্জাতিক ঘুড়ি উৎসব। ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ঘুড়ি উৎসব ৩১টি দেশ থেকে বিভিন্ন বয়সের মানুষ এসেছিলেন এই উৎসবে অংশ গ্রহণ করতে। সেই বছর তাঁরা নিয়ে এসেছিলাম প্রায় ১৮০ টির বেশি ঘুড়ি। এরপর থেকে আর আয়োজিত হয়নি ঘুড়ি উৎসব।

তবে এই উৎসব ছাড়াও মকর সংক্রান্তির দিন আহমেদাবাদ ছাড়াও গুজরাতের রাজকোট, সুরাট ও বিভিন্ন জায়গায় ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা হয়। এমনকি জয়পুর, উদয়পুর সব রাজস্থানের বেশ কয়েকটি জায়গাতেও মকর সংক্রান্তির দিন আপনি ঘুড়ি উড়তে দেখতে পাবেন।

আরও পড়ুন: ওমিক্রনের কারণে স্থগিত বিকানেরে বিখ্যাত উটের উত্‍সব! জেনে নিন এই উত্‍সব সম্পর্কে অজানা তথ্য