Silk Route: জ়ুলুক যাওয়ার পথে এক রাত কাটিয়ে যান পাহাড়ে ঘেরা আগামলোকে
East Sikkim: রেশমপথের টানে যত উপরে উঠবেন ঠান্ডা বাড়বে। হতে পারে শ্বাসকষ্টও। কিন্তু তার আগে যদি আগামলোকে রাত কাটান তাহলে অনন্য অনুভূতি পেতে পারেন।
সিল্করুটের খবর রাখে না এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া কঠিন। কিন্তু পুরনো সিল্করুট খোঁজ অনেকেই জানেন না। কিন্তু এই পুরনো সিল্করুটের মধ্যেই এমন অনেক পাহাড়ি গ্রাম লুকিয়ে রয়েছে, যা হতে পারে আপনার পরবর্তী ডেস্টিনেশন। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ১১০ কিলোমিটার গেলেই সিল্করুট। রংলি বাজারে মোমো খেয়ে আর পারমিট বানিয়ে এগিয়ে যেতে হবে লিংতামের দিকে। লিংতাম পূর্ব সিকিমের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। লিংতামকে রেশমপথের প্রবেশদ্বার বললেও ভুল হবে না। কাছেই রয়েছে লিংতাম নদী। থাকার জন্য কয়েকটা হোমস্টেও রয়েছে। কিন্তু আজকের ডেস্টিনেশন লিংতাম নয়। লিংতাম থেকে সোজা রাস্তা ধরে এগিয়ে গেলে পৌঁছে যাবেন পদমচেন। এখান থেকে নতুন সিল্করুট যেতে হয়। কিন্তু লিংতাম থেকে ডান দিকের রাস্তা ধরে উপরে উঠে গেলে পৌঁছে যাবেন আগামলোক।
আপার লিংতামের পাহাড়ি গ্রাম আগামলোক। কিন্তু লিংতামের চেয়ে অনেক বেশ নিস্তব্ধ। বরং আগামলোক থেকে পাখির চোখে ধরা পড়ে লিংতাম। আগামলোক সবুজ পাহাড় ও মেঘে ঢাকা এক ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম। ৬০০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত আগামলোকের সৌন্দর্যের তুলনা হয় না। হোমস্টের জানলা খুললে দেখা যায় পূর্ব হিমালয়ের সৌন্দর্য। স্থানীয়দের মুখে জানতে পারবেন, পাহাড়ের পিছন দিকটাই ভুটান।
রেশমপথের টানে যত উপরে উঠবেন ঠান্ডা বাড়বে। হতে পারে শ্বাসকষ্টও। শীতের মরশুমে জ়ুলুক, নাথাং ভ্যালি, কুপুপ গেলে বরফও পেয়ে যাবেন। কিন্তু তার আগে যদি আগামলোকে রাত কাটান তাহলে অনন্য অনুভূতি পেতে পারেন। আগামলোকে খুব বেশি ঠান্ডা নেই, ১০-১২ বছরে হয়তো একবার বরফ পড়ে। তবে, মেঘ ঢেকে থাকায় জায়গা স্যাঁতস্যাঁত, কিছুটা সিকিমের অন্যান্য গ্রামগুলোর মতোই। কিন্তু এখানে যে নিস্তব্ধতা, প্রাকৃতিক নির্জনতা রয়েছে, তা অন্য কোথাও খুঁজে পাবেন না।
এক সময় এই রেশমপথ দিয়েই ভারতের সঙ্গে মধ্য এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ব্যবসা বাণিজ্য চলত। এখন এগুলো পর্যটক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। তবে, আগামলোকে একটি বৌদ্ধ মনেস্ট্রি রয়েছে। লিংতাম থেকেও স্থানীয় মানুষেরা এই গুম্ফাতেই আসেন। চারদিকে ঢেউ খেলানো সবুজ পাহাড়। তার মাঝে ভেসে ভেসে বেড়াচ্ছে সাদা মেঘ। মেঘের কারণে এখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা পাওয়া কঠিন। সুতরাং, এই আশা নিয়ে আগামলোক না যাওয়াই ভাল। তবে, এখান থেকে শান্ত পরিবেশে শোনা যায় লিংতাম নদীর শব্দ। পথে বন্য ফুলের মেলাও দেখা যায়। ধোঁয়া ওঠা কফি কাপে চুমুক দিতে দিতে উপভোগ করতে পারেন আগামলোক।
প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, খাদ্যসামগ্রী কিনতে গেলে রংলি বাজার যেতে হয়। আর থাকার জন্য আগামলোকে হাতেগোনা ২-৩টে হোমস্টে রয়েছে। তার মধ্যে জনপ্রিয় হল সিল্করুট দি বাসেরা রিসর্ট। এখানে থাকা-খাওয়া নিয়ে জনপ্রতি ১,৫০০ টাকা খরচ হতে পারে। এই আগামলোক যেতে গেলেও আপনাকে রংলি বাজার থেকে পারমিট করাতে হবে। পদমচেন হয়ে জ়ুলুক যাওয়ার পথে এক রাত হলেও কাটিয়ে যেতে পারেন আগামলোকে।