Peacock Valley: ময়ূরদের মাঝে কাটান একটা উইকএন্ড! ঘুরে আসুন ‘বাস্তব-রূপকথা’ পিকক ভ্যালি

Odisha: কম খরচে ময়ূর দেখার স্বপ্ন পূরণ হতেই পারে। রাজস্থান বা গুজরাট নয়, প্রতিবেশি রাজ্য ওড়িশা গেলেই মিলবে সেই সুযোগ।

Peacock Valley: ময়ূরদের মাঝে কাটান একটা উইকএন্ড! ঘুরে আসুন 'বাস্তব-রূপকথা' পিকক ভ্যালি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 20, 2022 | 7:28 PM

ময়ূরের দেখা পেতে অনেকেই রাজস্থান বা গুজরাট ভ্রমণের পরিকল্পনা করেন। কিন্তু এই সব জায়গায় বেড়াতে যাওয়া তুলনামূলকভাবে ব্যয়বহুল। তবে কম খরচে ময়ূর দেখার স্বপ্ন পূরণ হতেই পারে। রাজস্থান বা গুজরাট নয়, প্রতিবেশি রাজ্য ওড়িশা গেলেই মিলবে সেই সুযোগ। ‘উঠল বাই, তো কটক যাই।’ সেই কটক থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার গেলেই পৌঁছে যাবেন পিকক ভ্যালি বা ময়ূর উপত্যকা। খুব একটা জনপ্রিয় না হলেও ওড়িশার এই অঞ্চলে গেলে আপনি প্রায় দেড়শোটি ময়ূরের দেখা পেতে পারেন।

যদিও ওড়িশার এই পিকক ভ্যালি প্রকৃতির দান নয়। তবে কাছেই রয়েছে চন্দকা অভয়ারণ্য। অন্যদিকে, ১৯৯৯ সালের আগে এই জায়গার অস্তিত্ব ছিল ওড়িশার। পিকক ভ্যালি তৈরির পিছনে বিশেষ অবদান রয়েছে তৎকালীন ওড়িশা পুলিশের হোমগার্ড পান্নু বেহেরা। তিনি থাকতে কটক জেলার তালপাড়া গ্রামে। সেই বছর ওড়িশা সম্মুখীন হয় একটি ভয়াবহ সুপার সাইক্লোনের। ঝড়ের পরদিন পান্নু ধ্বংসচিহ্নের মধ্যে খুঁজে পান একটি জখম ময়ূরকে। সম্ভবত চন্দকা অভয়ারণ্য থেকে সে উড়ে এসেছিল ঝড়ের সময়।

সেই জখম ময়ূরের সেবা-শুশ্রূষা করে তাকে ছেড়ে দেয় পান্নু। কিন্তু গল্প এখানেই শেষ নয়। বেশ কয়েকদিন ওই ময়ূরকে পান্নু দেখতে পায় ওই একই স্থানে। এর মাঝেই বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে ওই ময়ূর ও পান্নুর মধ্যে। ভালবেসে পান্নু ওই ময়ূরের নাম রাখেন ‘রাজা’। নিয়ম করে প্রতিদিন ভোরে ও বিকেলে পান্নু রাজাকে ডাকতেন। রাজা ছাড়াও আরও দুটি ময়ূর পান্নুর ডাকে সারা দিয়ে ওখানে আসা শুরু করে। এভাবে সংখ্যাটা দুই থেকে বেড়ে পাঁচ, দশ হতে থাকল। আর ধীরে ধীরে তৈরি হল পিকক ভ্যালি বা ময়ূর উপত্যকা। এখন এই জায়গায় ময়ূরের সংখ্যা প্রায় দেড়শো।

সবচেয়ে মজার বিষয় হল, এই জায়গায় ময়ূরের সংসার থাকলেও এখানে নিয়মিত ওড়িশা পুলিশের ফায়ারিং প্র্যাক্টিস করা হয়। বর্ষাকাল বাদ দিয়ে সারা বছরই এখানে ওড়িশা পুলিশকর্মীরা গুলিচালনা অনুশীলন করেন। কিন্তু ফায়ারিংকে মোটেই ভয় পায় না ময়ূরেরা। তাছাড়া এখানে তাদের কেউ ক্ষতিও করে না। বুঝে গিয়েছে এখানের পুলিশকর্মীদের গুলির লক্ষ্য তাঁরা মোটেই নয়। তারা নিজের মতো করে ঘুরে বেড়ায় মাঠে। নিয়মিত খাবার খাওয়ার জন্য এখানে আসে।

মানুষ আর পাখির সুনিবিড় সম্পর্কের এক বাস্তব-রূপকথা হল পিকক ভ্যালি। ওড়িশা পুলিশের ফায়ারিং গ্রাউন্ড এখন ‘পিকক ভ্যালি’ নামেই পরিচিত। আর হোমগার্ড পান্নু বেহেরা পরিচিত ‘দ্য পিকক ম্যান’ নামে। ২০০৭ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালামের হাত থেকে পুরষ্কারও নিয়েছেন পান্নু। ২০১৭-এ তিনি মারা যান এবং মৃত্যুশয্যাতেও তাঁর চিন্তা ছিল এই জায়গার ময়ূরদের ভরণপোষণ নিয়ে। যদিও এই দায়িত্ব এখন পালন করেন তাঁর নাতি কাহ্নুচরণ বেহেরা। পিকক ভ্যালিতে ময়ূরদের ভরণপোষণের যাবতীয় দায়িত্ব পালন করে বেহেরা-পরিবার।

কীভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন-

হাওড়া থেকে একাধিক ট্রেন রয়েছে কটক যাওয়ার। কটক থেকে পিকক ভ্যালির দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। নারাজ ব্রিজ পার করে সিদ্ধেশ্ব‌র মন্দির যাওয়ার পথে পড়বে ময়ূর উপত্যকা। কটক থেকে গাড়ি ভাড়া করে পৌঁছে যেতে পারেন এখানে। পিকক উপত্যকায় থাকার জন্য সেরকম কোনও হোটেল নেই। রাত্রিযাপনের জন্য আপনাকে কটকেই হোটেল বুক করতে হবে। কটকে ওড়িশা ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট কর্পো‌রেশনের হোটেলও রয়েছে।