Brahmastra: গোটা ব্রহ্মাণ্ডের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র বানিয়েছিলেন কে? এখন কোথায় লুকানো আছে, জানেন?

Most Powerful Weapon: ব্রহ্মা সৃষ্টির দেবতা। তিনি চারহাতে পুঁথি-পুস্তক, কমণ্ডলু, জপমালা, পদ্ম ধারণ করে বসে থাকলেই এমন ভাবা ঠিক হবে না ব্রহ্মদেবের আশীর্বাদজাত কোনও অস্ত্র-শস্ত্র নেই।

Brahmastra: গোটা ব্রহ্মাণ্ডের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র বানিয়েছিলেন কে? এখন কোথায় লুকানো আছে, জানেন?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 25, 2022 | 6:16 PM

বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্রের নাম এখন সকলেরই জানা। কারণ, সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে বলিউডের বহু প্রতীক্ষিত ছবি ব্রহ্মাস্ত্র (Brahmastra) সিনেমার ট্রেলার। কল্পজগতের অ্যাডভেঞ্চার সিনেমায় রয়েছেন রণবীর কাপুর, আলিয়া ভাট, অমিতাভ বচ্চন. মৌনি রায় প্রমুখ তারকারা। হলিউড মার্ভেল সিনেমার মতই দেশি কায়দায় ঝকঝকে কাহিনির উপস্থাপনা। অনেকেই ভাবেন বিদেশিদের মত ভারতে কেন সুপার হিউম্যান নেই কেন। অনেকেই জানেন না যে, রামায়ণ-মহাভারত থেকেই আমরা আমাদের সুপারহিউম্যান (Super Human) খুঁজে নিয়েছিলাম। রাম, কৃষ্ণ, অর্জুনের মত চরিত্ররা কোনও অংশেই কম যায় না। অসীম ক্ষমতাসম্পন্ন এই চরিত্ররা নানান অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী। তাদের প্রত্যেক চরিত্রের পিছনেই রয়েছে কোনও দৈব যোগ। সঙ্গে বাহন ও অস্ত্র তো রয়েছেই।

গোটা ব্রহ্মাণ্ডের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্রের হদিশ ও নানা কল্পকাহিনি নিয়ে সিনেমা তৈরি হলেও প্রাচীন ভারতের বিভিন্ন গ্রন্থে ও পুরাণে ব্রহ্মাস্ত্রের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ব্রহ্মাস্ত্রের উত্‍পত্তি ব্রহ্মদেব বলে মনে করা হয়। এই মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন স্বয়ং ব্রহ্মা (Lord Brahma)। পুরাণ মতে, সৃষ্টির সমস্ত কাজ নিয়মমাফিক করতে ও নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে ব্রহ্মদেব এই অস্ত্র তৈরি করেছিলেন। এর মধ্যে রয়েছে অসীম অলৌকিক ক্ষমতা। ব্রহ্মাস্ত্র ব্যবহারে নিমিষেই ধ্বংস হয়ে যেতে পারে সমগ্র বিশ্ব ও সৃষ্টি। ব্রহ্মার সৃষ্টি অস্ত্র হওয়ায় একে ব্রহ্মাস্ত্র বলা হয়।

হিন্দুধর্মে উল্লিখিত সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক, শক্তিশালী এবং অপ্রতিরোধ্য অস্ত্র। হ্মশীর্ষ অষ্ট্র একটি অস্ত্র যা বলা হয় মহাবিশ্বকে ধ্বংস করতে সক্ষম, সৃষ্টিকে ধ্বংস করতে এবং সমস্ত প্রাণীকে পরাজিত করতে সক্ষম। আগ্নেয়াস্ত্র, বরুণাস্ত্র, ব্রহ্মাস্ত্র, নাগপাশ এমন অনেক ধরণের অস্ত্রের কথারই পুরাণে উল্লেখ রয়েছে।

ব্রহ্মা সৃষ্টির দেবতা। তিনি চারহাতে পুঁথি-পুস্তক, কমণ্ডলু, জপমালা, পদ্ম ধারণ করে বসে থাকলেই এমন ভাবা ঠিক হবে না ব্রহ্মদেবের আশীর্বাদজাত কোনও অস্ত্র-শস্ত্র নেই। ব্রহ্মদেবের আশীর্বাদজাত অস্ত্র তিনটি– ব্রহ্মাস্ত্র, ব্রহ্মশিরাস্ত্র ও ব্রহ্মদণ্ডাস্ত্র। ভয়ংকর সেগুলোর বিধ্বংসী ক্ষমতা। তিনটি অস্ত্রই মহারথীরা ব্যবহার করেন। এ তিনটি অস্ত্র লাভ করতে হয় কঠোর তপস্যার দ্বারা। গুরু-শিষ্য পরম্পরায় এ তিনটি অস্ত্র প্রবাহিত হয়। একজন গুরু, তিনি স্বয়ং ব্রহ্মদেবও হতে পারেন, তার শিষ্যকে শুধু এগুলো দান করতে পারবেন।

কঠিন ও কঠোর তপস্যার পরে এগুলো লাভ হয়। বলা হয়, দিনে একবারই কেউ এগুলো নিক্ষেপ করতে পারবেন এবং একবার এগুলো আহ্বায়িত হলে নিক্ষেপ না করে উপায় নেই। ব্রহ্মাস্ত্রের বিধ্বংসী ক্ষমতা যে কারো হাড় কাঁপিয়ে দেবে। এটি অনেকটা পারমাণবিক বোমার মতো। যেখানে নিক্ষেপিত হবে, পুরো এলাকা পুড়ে ছাই হয়ে যাবে, চৌদ্দ বছর সেখানে কোনো ফসল ফলবে না, সেখানকার জীবেরা বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম দেবে। ব্রহ্মশিরাস্ত্র ব্রহ্মাস্ত্রের তুলনায় চারগুণ শক্তিশালী।

এ অস্ত্রগুলোর সম্মুখভাগে স্বয়ং ব্রহ্মা গিয়ে অধিষ্ঠিত হন বলে এগুলো অমোঘ ও অব্যর্থ। ব্রহ্মার চার মাথা ব্রহ্মশিরাস্ত্রের চারটি মাত্রা প্রকাশ করে। ব্রহ্মদণ্ডাস্ত্র এগুলোর চেয়েও শক্তিশালী। কথিত আছে, ব্রহ্মাস্ত্র ও ব্রহ্মশিরাস্ত্রকে ঠেকানোর ক্ষমতা আছে একমাত্র ব্রহ্মদণ্ডাস্ত্রের। তবে, ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে এটি নিক্ষেপিত হলে চোখের পলকে এটি পুরো সংসারকে ধ্বংস করে দিতে পারে। পুরাণ, রামায়ণ, মহাভারতের যুদ্ধগুলোতে এ তিনটি অস্ত্রের ব্যবহার দেখা গেছে। ব্রহ্মদেবের তপস্যা করে অসুরেরা এ অস্ত্রগুলো লাভ করে দেবতাদের পরাজিত করত। এই কথা পুরাণে পাওয়া গেলেও কোথায় এবং কখন দেবতারা ব্রহ্মাস্ত্রের ব্যবহার করেছিলেন, তার উল্লেখ বিশেষ স্পষ্ট ভাবে পাওয়া যায় না।

মহাভারতে অশ্বত্থামা একবার পাণ্ডব বাহিনীর উপরে এটি প্রয়োগ করলে কৃষ্ণ সবাইকে বৈষ্ণবাস্ত্রের সামনে নিজেদের সঁপে দিতে বলেন। সবাই নিজেকে সঁপে মুক্তি পেলেও ভীম তা করেন না। এতে অস্ত্রের পুরো প্রভাব তার উপরে গিয়ে পড়ে। শেষে, কৃষ্ণ বৈষ্ণবাস্ত্রকে নিজের গলায় মালা বানিয়ে ধারণ করলে ভীম সেটির প্রকোপ থেকে রক্ষা পান।