Goga Navami 2021: সাপের কামড় থেকে রক্ষা করেন গোগাজী! এই বিশেষ দিনটি বাড়িতে কীভাবে পালন করবেন, জানুন
ভারতের উত্তরাঞ্চলে, বিশেষত হিমাচল প্রদেশ, হরিয়ানা এবং পঞ্জাবে তাঁকে যোদ্ধা হিসেবেই পূজা করা হয়। গোগা নবমীর দিন তাঁকে উত্সর্গ করেই পুজো দেওয়া হয়।
হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষের নবমী তিথিতে গোগা নবমী পালন করা হয়। ইংরেজি ক্যালেন্ডারে এই গুরুত্বপূর্ণ উত্সবটি অগস্ট বা সেপ্টেম্বরে মাঝামাঝি সময়েই হয়ে থাকে। গোগা নবমীকে গুগা নবমীও বলা হয়ে থাকে।
হিন্দু মতে, গোগাজী, যাঁকে জহর বীর গোগ্গা নামেও পরিচিত, তিনি একজন জনপ্রিয় বীরযোদ্ধা। ভারতের উত্তরাঞ্চলে, বিশেষত হিমাচল প্রদেশ, হরিয়ানা এবং পঞ্জাবে তাঁকে যোদ্ধা হিসেবেই পূজা করা হয়। গোগা নবমীর দিন তাঁকে উত্সর্গ করেই পুজো দেওয়া হয়। হিন্দুদের বিশ্বাস, এদিন গোগাজীর পুজো করলে বিশেষ আশীর্বাদ পাওয়া যায়। জানা যায়, এই দেবরূপী গোগাজী ভক্তদের সাপের কামড় থেকে রক্ষা করেন। রাজস্থানে গোগা নবমীতে জাঁকজমকপূর্ণ মেলা অনুষ্ঠিত হয় এবং উৎসব তিন দিন ধরে চলে। এ বছর এই গুরুত্বপূর্ণ ব্রত অনুষ্ঠানটি ৩১ অগস্ট পালিত হচ্ছে।
গোগা নবমীর আচার-অনুষ্ঠান
গোগা নবমীতে, ভক্তরা ‘গুগাজি’ মূর্তির পূজা করেন। গোগাজীকে একটি নীল রঙের ঘোড়ায় চড়তে দেখা যায় এবং হলুদ-নীল পতাকা দিয়ে সাজানো হয় তাঁকে। কিছু অঞ্চলে, ভগবান গোগার পূজা করার অনুষ্ঠানগুলি ‘শ্রাবণ পূর্ণিমা’ বা রাখি পূর্ণিমার দিন থেকে শুরু হয় এবং নবমী পর্যন্ত নয় দিন ধরে চলতে থাকে। এই কারণে এটি গোগা নবমী নামেও পরিচিত। ভক্তরা গোগাজী পাঠ করেন। পূজা অনুষ্ঠান সমাপ্ত হওয়ার পর ভক্তদের মধ্যে প্রসাদ হিসেবে চাল ও চাপাতি বিতরণ করা হয়।
গুগা মারি মন্দিরে এই দিনে বিভিন্ন পূজা ও শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। গোগা নবমীতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা যে কোন আঘাত বা ক্ষতির হাত থেকে সুরক্ষার নিশ্চয়তা হিসেবে ভগবান গোগাকে রাখি বা সুতো বেঁধে দেন। এছাড়াও গোগা নবমীর সময় উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম ভারতের গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে মেলা বসে। হিমাচল প্রদেশের হামিরপুর জেলার গুগা নবমী মেলা সবচেয়ে বড় এবং জনপ্রিয়।
শুভ তিথি ও সময়
৩১ অগস্ট রাত ২টোর সময় শুভ তিথির সূচনা হবে, বেলা ৪.২৩ নাগাদ গোগা নবমীর সমাপ্তি ঘটবে। ব্রহ্ম মহরতের সময় ভোর ৪.৩৬ মিনিট থেকে ৫.২৪ মিনিট পর্যন্ত।
ইতিহাস
হিন্দুদের বিশ্বাস, গোগা মহারাজ ভক্তদের সাপের কামড় থেকে রক্ষা করেন। দাদরেওয়াতে অর্থাত্ বর্তমান রাজস্থানের রাজগড়, রাজস্থান তাঁর জন্ম। পিতা ছিলেন রাজা জেওয়ার ঠাকুর এবং মা রানী বাচাল। তিনি দাদরেওয়া রাজ্য শাসন করেছিলেন। তাঁর সঙ্গী ছিল নীল ঘোড়া এবং অস্ত্র বর্শা। বিবাহিত মহিলারা ভগবান গুগার কাছে প্রার্থনা করেন, যাতে তাঁরা তাঁদের সন্তানদের অনিষ্ট এবং যেকোনও ধরনের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারেন। দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে নবমীতে ভগবান গুগার পূজার মাধ্যমে নিঃসন্তান মহিলারা বিশেষ আশীর্বাদ পান।
পুজোবিধি
– কিছু অঞ্চলে শ্রাবণ পূর্ণিমায় আচার-অনুষ্ঠান শুরু হয় এবং ভাদ্রমাসের নবমী দিন পর্যন্ত নয় দিন ধরে চলে। – ভক্তরা ‘গুগাজি’ মূর্তির পূজা করেন। – ভক্তগণ গোগাজী কথা পাঠ করেন। – সব পূজা-অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর চালে প্রসাদ এবং চাপাতি সবার মাধ্যে বিতরণ করা হয়। – গুগা মারি মন্দিরে শোভাযাত্রা এবং মেলার আয়োজন করা হয়। – হিমাচল প্রদেশের হামিরপুর জেলায় খুব জনপ্রিয় একটি বড় মেলার আয়োজন করা হয়। – ভক্তরা সুরক্ষার নিশ্চয়তা হিসেবে গুগাজির মূর্তির সঙ্গে রাক্ষস স্তোত্র পাঠ করা হয়।
আরও পড়ুন: Radhashtami 2021: কাল ছিল জন্মাষ্টমী, তাহলে রাধার জন্মদিন কবে?