Kali Puja 2022: কালীপুজোর দিন এই টোটকাগুলি মানলে ভাগ্য যাবে খুলে! সকাল থেকে রাত পর্যন্ত করুন এই ৬টি কাজ
Kali Puja Celebration: কালী পুজোর দিন আচার-বিধি মেনে পুজো করা হলেও বেশ কিছু জিনিস রয়েছে, যেগুলি করলে ভাগ্য খুলে যেতে পারে আপনার।
সনাতন ধর্মাবলম্বী বাঙালির কাছে কালী (Goddess Kali) বিশেষভাবে শক্তির দেবী রূপে পূজিত হন। কালীর অপর নাম শ্যামা বা আদ্যাশক্তি। হিন্দু ধর্মে (Hinduism), কালী হচ্ছেন দুর্গার বা পার্বতীর অপর ভয়াল রূপ। সময়ের, পরিবর্তনের, শক্তির, সংহারের দেবী তিনি। কৃষ্ণবর্ণা বা মেঘবর্ণা এবং ভয়ংকরা। অশুভ শক্তি’র বিনাশ করেন তিনি। শাক্ত সৃষ্টিতত্ত্ব মতে এবং শাক্ত-তান্ত্রিক বিশ্বাস মতে তিনিই পরম ব্রহ্ম। বাঙালি হিন্দু সমাজে দেবী কালীকে মাতৃরূপে পুজো করা হয়। প্রধানত শাক্তরাই কালীপূজা করে থাকেন। তন্ত্র অনুসারে, কালী দশমহাবিদ্যা নামে পরিচিত দশজন প্রধান তান্ত্রিক দেবীর প্রথম। দশমহাবিদ্যার ইনি প্রথমা মহাবিদ্যা।
দেবী কালীর অসংখ্য নামের মধ্যে দক্ষিণ, সিদ্ধ, গুন্য, ভদ্র, শ্মশান, রক্ষা ও মহাকালী। দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালনের জন্যেই দেবী কালীর পুজো করা হয় মর্তে। দেবী কালীর আবির্ভাব কীভাবে? দেবাসুরের যুদ্ধে পরাজিত দেবতাদের প্রার্থনায় আদ্যাশক্তি ভগবতী পার্বতীর দেহ কোষ থেকে দেবী কৌষিকী আবির্ভূত হন। সেই সময় ভগবতী দেবী কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করেন বলে তাঁর নাম হয় কালী বা কালিকা। অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ এই তিনটি কাল নিয়ে মহাকাল। আর সেই মহাকালের শক্তি হলেন কালী। অনন্তকালে সৃষ্টি রূপিণী পরমা প্রকৃতির রূপ এই মহাকালী। যারা সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করতে চান তারা তন্ত্র এবং মন্ত্র ক্ষমতায় যারা বিশ্বাস করেন। আবার যারা মানুষরূপী হয়েও ঐশ্বরিক ক্ষমতার অধিকারী হতে চান তারা কালী পুজো অত্যন্ত ভক্তি সহকারে করে থাকেন।
কালীর রূপ ভয়ংকর হলেও এই দেবী কখনও করুণাময়ী হয়েও ভক্তদের কাছে ধরা দেন। অশুভ শক্তির বিনাসকারী হিসেবে তো বটেই, দুহাত ভরে ভক্তদের যেমন রক্ষা করেন, তেমন দুহাত তুলে আশীর্বাদও করেন। অনেক ভক্ত যেমন আর্থিক উন্নতির জন্য, কখন সন্তানের মঙ্গলকামনা, কখনও অন্যান্য নানা কারণে দেবীকে ভক্তিভরে পুজো করে থাকেন। তান্ত্রিক মতে, অমাবস্যার রাতে মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে কালীপুজো করা হয়। আগে কালীকে পশুবলি বা পশুর রক্ত উত্সর্গ করা হত। বর্তমানে এই নিয়ম এখন আর বিশেষ পালন করা হয় না। এছাড়াও লুচি, খিচুরি, ফলের ভোগ দেওয়া হয়। গৃহস্থ বাড়িতে সাধারণত ব্রাহ্মণ মতে কালীর পুজো করা হয়। প্রাচীনকালে বাংলায় ডাকাতের দল কালীকে প্রসন্ন করলে নরবলি দিত, এমন কথাও শোনা যায়।
কালী সময়ের প্রতীক। অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরার জন্য। কালীপুজোর দিন পুজোর জন্য উপবাস থেকে মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে সুফল পাওয়া যায়। গভীর রাতে কালীপুজো করা হলে নিয়ম মেনে জেগে থাকার নিয়ম। কালী পুজোর দিন আচার-বিধি মেনে পুজো করা হলেও বেশ কিছু জিনিস রয়েছে, যেগুলি করলে ভাগ্য খুলে যেতে পারে আপনার। সেই টোটকাগুলি কী কী, তা জেনে রাখুন…
১. কালীপুজোর দিন সকাল থেকে সারা রাত পর্যন্ত একটি ঘিয়ের প্রদীপ ঠাকুরঘরে জ্বালিয়ে রাখুন। সেটি যাতে নিভে না যায়, তা খেয়াল রাখতে হবে।
২. এদিন কালীমন্দিরের নৈবেদ্য হিসেবে আতপ চাল, একটি গোটা নারকেল, ১০৮টি জবা ফুলের মালা ও ঘি দান করুন।
৩. দীপান্বিতা কালী পুজোর রাতে বাড়ির ছাদে একটি কালো রঙের পাঁচমুখী প্রদীপ জ্বালান।
৪.কালীপুজোর দিন সন্ধ্যেবেলেয়া বটগাছে গোড়ায় তিনবার কালো তিল রাখুন। তাতে দেবী নাকি প্রসন্ন হন। মনের আশা পূরণ হয়।
৫. কালীপুজোয় উপবাস করলে পুজোর পরের দিন ব্রাহ্মণ ভোজন করাতে পারেন। তাতে দীর্ঘায়ু ও মনের ইচ্ছে পূরণ হয়।
৬. যদি সম্ভব হয়, কোনও মন্দিরে একটি খাড়া দান করুন। বিপদ াপনার ধারেকাছে ঘেঁষতে পারবে না।
তথ্য সৌজন্য: বাংলা পঞ্জিকা