Ramkrishna Mission: বাগবাজারে তৈরি হল অ্যাসোসিয়েশন, বেলুর মঠে প্রাণকেন্দ্র, কী ভাবে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল রামকৃষ্ণ মিশন?
Ramkrishna Mission: দিনটা ছিল ১৮৯৭ সালে ১ মে। ১৬জন সদস্যের সেই সভায় বীজ বপন হয়েছিল রামকৃষ্ণ মিশনের। ৫ মে সংঘের নামকরণ হয় রামকৃষ্ণ মিশন অ্যাসোসিয়েশন।
রামকৃষ্ণ পরম প্রিয় শিষ্য ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। এমনকি কানাঘুষোয় শোনা যায়, অন্য ভক্তদের থেকে নাকি একটু বেশি স্নেহ করতেন নরেনকে তিনি। তেমনই গুরুর কথাকেই জীবনের আদর্শ করে এগিয়ে গিয়েছেন স্বামী বিবেকানন্দ। গুরু বলেছেন ‘নরেন লোক শিক্ষা দেবে’, তাই শিরধার্য।
গুরুর মৃত্যুর পরে তাঁর নামে প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নেন স্বামীজি। উদ্দেশ্যে রামকৃষ্ণের বাণী, সমাজ দর্শনকে আরও বেশি বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া, হিন্দু ধর্মের প্রচার এবং সত্যই সেবামূলক একটা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। যেমন ভাবনা তেমন কাজ্, রামকৃষ্ণ দেবের দেহত্যাগের পরে কলকাতার বাগবাজারে বলরাম বসুর বাড়িতে আয়োজিত রামকৃষ্ণদেবের ভক্তদের এক অধিবেশনে স্বামীজি রামকৃষ্ণ মিশন অ্যাসোসিয়েশন গঠনের প্রস্তাব রাখেন। মিশন গঠনের প্রস্তাব ও নিয়মাবলীর খসড়া স্বামীজি নিজের হাতে তৈরি করেন।
সেই দিনটা ছিল ১৮৯৭ সালে ১ মে। ১৬জন সদস্যের সেই সভায় বীজ বপন হয়েছিল রামকৃষ্ণ মিশনের। ৫ মে সংঘের নামকরণ হয় রামকৃষ্ণ মিশন অ্যাসোসিয়েশন। ১৯০৯ সালে আইনি স্বীকৃতি ও সিলমোহর পায় রামকৃষ্ণ মঠ। আনুষ্ঠানিকভাবে মিশনের নথিভুক্ত হয় ব্রিটিশ সরকারের দপ্তরে। মানবসেবার মাহাত্ন্য ঘোষণা, শিক্ষার্থীর জন্য অন্ন-বস্ন্ত্র ও বাসস্থানের ব্যবস্থা ও হিন্দুধর্ম প্রচার করা ছিল রামকৃষ্ণ মিশনের মূল কাজ।
বেলুড় মঠ হল রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রধান কার্যালয়। রামকৃষ্ণ মন্দির রামকৃষ্ণ ভাব-আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র।
ধর্ম, সেবা ও শিক্ষা এই তিনটি মূল কর্মসূচি নিয়ে রামকৃষ্ণ মিশনের যাত্রা শুরু। রামকৃষ্ণ মিশনের প্রথম প্রেসিডেন্ট ছিলেন স্বামী ব্রহ্মানন্দ। হিন্দু ধর্ম ও ঐতিহ্যের আশ্রয়ে স্থাপিত হলেও এক মধ্যে মিলন ঘটেছে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য।
যেদিন রামকৃষ্ণ মিশন তৈরি হয় সেদিন সন্ধ্যাতে বিবেকানন্দ বলেছিলেন, “আমি তিন পা এগিয়েছি। ৫ পা পিছিয়ে এসেছি। সম্প্রদায় যুক্ত পৃথিবীতে আরও একটি সম্প্রদায় তৈরি করার জন্য শ্রী রামকৃষ্ণের জন্ম হয়নি। তিনি প্রত্যেকটি ধর্মের সমৃদ্ধির জন্য তিনি তাঁর জীবন দিয়ে গিয়েছেন। এমনকী সর্বধর্ম সমন্বয়ের ব্রতও নিজের জীবনে অক্ষরে অক্ষরে পালন করে যত মত তত পথের দিশারি হয়ে উঠেছেন। রামকৃষ্ণ মিশনের সার্থকতা এখানেই যে তাঁরা শুধু তাদের সদস্যেদের নিজেদের মুক্তির জন্য সন্ন্যাস ধর্ম গ্রহণ করেননি। জগতের কল্যাণের মধ্য দিয়ে নিজের মুক্তি খোঁজা তাঁদের মূল উদ্দেশ্য”। রামকৃষ্ণের ভাবদর্শের প্রচার তাদের মুখ্য কাজ। আধ্যাত্মিকতার পথে, ত্যাগের পথে দেড় হাজার বছর চলার জন্যই তার প্রতিষ্ঠা। বেলুড় মঠে রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠার সময় যা নিজের মুখে বলে গিয়েছিলেন স্বয়ং বিবেকানন্দ।