TMC-BJP: সরকার নয়, বাধ্য হয়ে নিজেদের টাকায় রাস্তা করলেন গ্রামের বাসিন্দারা! ‘দোষারাপের’ খেলায় মাতলেন নেতারা

TMC-BJP: বাঁকুড়ার সোনামুখী ব্লকের দক্ষিণশোল গ্রামের পাশাপাশি রয়েছে রায় পাড়া ও আদিবাসী পাড়া। দু’টি পাড়া মিলিয়ে মোট ৫০ থেকে ৬০ টি পরিবারের বসবাস। এই দক্ষিণশোল ও পার্শ্ববর্তী শুকাশোল গ্রামের মাঝ বরাবর চলে গেছে একটি খাল।

TMC-BJP: সরকার নয়, বাধ্য হয়ে নিজেদের টাকায় রাস্তা করলেন গ্রামের বাসিন্দারা! ‘দোষারাপের’ খেলায় মাতলেন নেতারা
ক্ষোভের বাতাবরণ গোটা গ্রামে Image Credit source: TV 9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 12, 2025 | 2:30 PM

বাঁকুড়া: শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য, দৈনন্দিন বাজার করা থেকে স্থানীয় উৎপাদিত সবজি বাজার আনা, সব কিছুর জন্যই খাল পেরোতে হয় বাঁকুড়ার সোনামুখী ব্লকের দক্ষিণশোল গ্রামের মানুষকে। একসময় এই খালের উপর ছিল অস্থায়ী কাঠের সেতু। বর্ষায় বন্যার জলে সেই সেতু ভেঙে গেলে আবার স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে সেই সেতু তৈরি করা হত। কিন্তু, বছর আটেক আগে সেই সেতু ভেঙে গেলে অজানা কারণে তা আর তৈরি হয়নি। স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে জেলা পরিষদ সমস্ত স্তরে লাগাতার আবেদন করেও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। অগত্যা নিজেদের সংসার খরচ বাঁচিয়ে খালের উপর রাস্তা তৈরি করলেন দক্ষিণশোল গ্রামের মানুষ। যা নিয়ে এলাকার রাজনৈতিক মহলেও শুরু হয়েছে চাপানউতোর। শুরু শাসক-বিরোধী তরজা।

বাঁকুড়ার সোনামুখী ব্লকের দক্ষিণশোল গ্রামের পাশাপাশি রয়েছে রায় পাড়া ও আদিবাসী পাড়া। দু’টি পাড়া মিলিয়ে মোট ৫০ থেকে ৬০ টি পরিবারের বসবাস। এই দক্ষিণশোল ও পার্শ্ববর্তী শুকাশোল গ্রামের মাঝ বরাবর চলে গেছে একটি খাল। স্থানীয়ভাবে এই খাল জোড় নামে পরিচিত। গ্রামের পড়ুয়াদের এই খাল পেরিয়ে যেতে হয় স্কুল-কলেজে। মূমূর্ষু রোগীর চিকিৎসার জন্যও এই খাল পেরিয়ে যেতে হয় সোনামুখী অথবা বিষ্ণুপুরে। এছাড়া দৈনন্দিন প্রয়োজনেও গ্রামের মানুষদের নিত্যদিন খাল পারাপার করে যেতে হয় অন্য পাড়ে। গোটা বছর খালে সেভাবে জল না থাকলেও বর্ষায় সেই খালই রুদ্ররূপ ধারণ করে। বন্ধ হয়ে যায় দুই পাড়ের মানুষের যাতায়াত। 

বছর আটেক আগে পর্যন্ত এই খাল পারাপারের জন্য পঞ্চায়েতের তরফে কাঠের পুল করে দেওয়া হত। কিন্তু এখন সেসবেরও বালাই নেই। গ্রামবাসীদের বারংবার আবেদন করেও প্রশাসনের টনক না নড়ায় বাধ্য হয়ে শেষ পর্যন্ত ওই খাল পারাপারের সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে নিজেরাই উদ্যোগী হন গ্রামের মানুষ। হতদরিদ্র দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারগুলি নিজেদের সংসার খরচ বাঁচিয়ে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা করে বাঁচিয়ে মোট ২২ হাজার টাকা জোগাড় করতে সমর্থ হন। সেই টাকায় বেশ কয়েকটি হিউম পাইপ কিনে খালের উপর অস্থায়ী রাস্তা নির্মাণে নেমে পড়েন। যোগ দেন গ্রামের মহিলা ও শিশুরাও। নিজেদের কঠোর পরিশ্রমে ধীরে ধীরে খালের উপর সেই অস্থায়ী রাস্তা তৈরি হয়। কিন্তু, সামনের বর্ষায় খালের উদ্দাম স্রোতের মুখে গ্রামের মানুষের কষ্টে তৈরি সেই কাঁচা মাটির রাস্তা আদৌ কী নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারবে? আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা আশার তেমন আলো দেখছেন না। 

তাঁদের দাবি, দ্রুত পাকাপাকি ব্যবস্থা করুক স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত। স্থানীয় বিজেপি পরিচালিত মানিকবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের দাবি, খালের উপর স্থায়ী সেতু নির্মাণ অনেক টাকার ব্যাপার। তা নাকি পঞ্চায়েতের ক্ষমতার বাইরে। এমনকী এলাকার পদ্ম নেতারা পর্যাপ্ত বরাদ্দ না আসার অভিযোগও তুলেছেন। তৃণমূল পরিচালিত সোনামুখী পঞ্চায়েত সমিতির আবার দাবি, এই সমস্যার কথা তাঁদের জানা ছিল না। সম্প্রতি তারা তা জেনেছেন। দ্রুত কিছু একটা ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানা যাচ্ছে।