তন্ত্রসাধনার উজ্জ্বল ধূমকেতু মহাসাধক বামাক্ষ্যাপা! জীবনের প্রতিটি পরতে রয়েছে অলৌকিক ঘটনা

সেইদিনই ঘটল আরেক ঝামেলা। দুপুর হতেই আকাশ কালো করে মেঘ ঘনায়। এমন তার ভয়াল রূপ যে সকলেই বন্য়াহওয়ার আশঙ্কা করেছিলেন।

তন্ত্রসাধনার উজ্জ্বল ধূমকেতু মহাসাধক বামাক্ষ্যাপা! জীবনের প্রতিটি পরতে রয়েছে অলৌকিক ঘটনা
তন্ত্রসাধনার উজ্জ্বল ধূমকেতু মহাসাধক বামাক্ষ্যাপা!
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 16, 2021 | 6:51 PM

ভরা বর্ষায় মাকে হারিয়েছিলেন সাধাক বামাক্ষ্যাপা। মা গত হওয়ার পর বামাক্ষ্য়াপা আবার শ্মশানে যথারীতি সাধনা চালিয়ে যেতে লাগলেন। পারলৌকিক ক্রিয়ার ঠিক দু’দিন আগে ভাই রামচরণ এসে দাদাকে নিমন্ত্রণ করতে ও ক্রিয়াকর্মের সময় উপস্থিত থাকার জন্য় অনুরোধ করেন। আপনভোলা বামাক্ষ্যাপা তখন বলে উঠেন- “দু-চারখানা গ্রামের মানুষকে নেমন্তন্ন করে তৃপ্তি সহকারে খাওয়াবি কিন্তু !” ভাই রামচরণ তো থতমত খেয়ে যায়। নিজেদের জন্য দুমুঠো জোগাড় করতেই নুন-আন্তে পান্তা ফুরায়, আর দু’দশজনকে খাওয়ানো কি মুখের কথা! যাইহোক, দাদার আদেশ মানতেই হবে। কিন্তু কি করেই বা তা সম্ভব! চিন্তান্বিত ভাইকে দেখে বামদেব অলক্ষ্যে মুচকি হাসেন।

তারপর এল শ্রাদ্ধের দিন। আর সেইদিনই ঘটে যায় এক বিস্ময়কর কাণ্ড! সকাল হতে না হতেই রামচরণ দেখেন ভিন গ্রাম থেকে দলে দলে মানুষ ছুটে আসছে। তাদের কারোর হাতে চালের ধামা, কারোর হাতে ফলের ঝুড়ি, কারো বা মিষ্টির হাঁড়ি, কারোর আবার শাকসবজি। যা জিনিস জমায়েত হয়েছে, তাতে অনায়াসে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার লোক পেটপুরে খেতে পারবে।

বামদেব এসে হাজির হতেই রাম বুঝল, এসব তার দাদারই সিদ্ধশক্তির নিদর্শন। বাড়ির মুক্ত চত্বরে ভোজনের আয়োজন করা হয়েছিল। বহুলোক সেখানে বসে আহার করতে কোনও অসুবিধা হবে না। কিন্তু বিপদ যে পিছু ছাড়ে না। সেইদিনই ঘটল আরেক ঝামেলা। দুপুর হতেই আকাশ কালো করে মেঘ ঘনায়। এমন তার ভয়াল রূপ যে সকলেই বন্য়াহওয়ার আশঙ্কা করেছিলেন। ভাই রামচরণ দাদার কাছে এসে মুখভার করতেই আত্মস্থ বামা একটি কাঠি দিয়ে বাড়ির চারিধারে গণ্ডি কেটে দিলেন আর আত্মমগ্ন হয়ে বললেন- “বৃষ্টি হবে। কিন্তু এই গণ্ডির ভেতর ঢুকতে পারবে না। নিশ্চিন্তে থাক।”

অলৌকিক ভাবে হলও তাই। মুষলধারে বর্ষণ হতে লাগল, কিন্তু বামদেবের গণ্ডির ভেতর ভূমি শুকনো। কোনমতেই সেই দাগকে অতিক্রম করে জল প্রবেশ করতে পারল না ভেতরে। যত জোরে মেঘের গর্জন হয়, তত জোরে বামার কণ্ঠে শোনা যায় “জয় তারা, জয় জয় তারা” ভীমধ্বনি। উপস্থিত অতিথিরা খাওয়া ভুলে ভয়ার্ত চোখে এই অলৌকিক দৃশ্য দেখতে লাগলেন। সেদিন থেকে বামাক্ষ্যাপার অতিরিন্দ্রিয় শক্তি সম্বন্ধে কারোরই আর সংশয় রইল না। তাঁর প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা শতগুণে বর্ধিত হল। স্তম্ভিত মানুষগুলি সবাই হাতজোড় করে জয়ধ্বনি দিয়ে উঠলো, জয় বামাখ্যাপার জয়… জয় বামাখ্যাপার জয়…।

আরও পড়ুন: সারদা দেবীর অভাবী বাপের বাড়িতে হঠাত করে জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু হয়, কেন জানেন?