Tata AIG: গাড়ি চুরি হয়ে গেলে কী করবেন? গাড়ি বিমায় কি চুরির ক্লেম পাওয়া যায়?

Car Insurance Tata AIG: বাজারে বিভিন্ন ধরনের গাড়ি বিমার পলিসি রয়েছে। গ্রাহকরা এর মধ্যে থেকে নিজেদের প্রয়োজনমতো পলিসি বেছে নিতে পারেন। যেমন বেসিক থার্ড পার্টি মোটর ইনস্যুরেন্স, ওন ড্যামেজ কভারেজ, কম্প্রিহেনসিভ কার ইনস্য়ুরেন্স ইত্যাদি। কোন গাড়ি বিমা পলিসির কী সুবিধা? জেনে নিন বিস্তারিত...

Tata AIG: গাড়ি চুরি হয়ে গেলে কী করবেন? গাড়ি বিমায় কি চুরির ক্লেম পাওয়া যায়?
Tata AIG গাড়ি বিমা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 22, 2024 | 9:00 AM

চার চাকার গাড়ি যে কোনও ব্যক্তির কাছেই একটি গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান সম্পত্তি। আর সেটা যদি আচমকা চুরি হয়ে যায়, তাহলে যে মনের মধ্যে কী চলে… সে এক অতি করুণ অবস্থা। গাড়ি চুরি হয়ে যাওয়ার কথা মাথায় এলেই গাড়ি মালিকের প্রথম যে চিন্তাটা আসে, তাঁর গাড়ি বিমা কি চুরির কেস কভার করে? এক্ষেত্রে গোটা বিষয়টি নির্ভর করে কী ধরনের গাড়ি বিমা পলিসি ওই ব্যক্তি করিয়েছেন এবং সেই বিমার শর্তাবলী কী রয়েছে, তার উপর। কোন ধরনের গাড়ি বিমা চুরির কেস কভার করে? চলুন এই বিষয়ে একটি বিশদে জেনে নেওয়া যাক।

গাড়ি চুরি হয়ে গেলে কোন ধরনের গাড়ি বিমা থেকে মালিকপক্ষ সুবিধা পাবেন?

বাজারে বিভিন্ন ধরনের গাড়ি বিমার পলিসি রয়েছে। গ্রাহকরা এর মধ্যে থেকে নিজেদের প্রয়োজনমতো পলিসি বেছে নিতে পারেন। যেমন বেসিক থার্ড পার্টি মোটর ইনস্যুরেন্স, ওন ড্যামেজ কভারেজ, কম্প্রিহেনসিভ কার ইনস্য়ুরেন্স ইত্যাদি।

বেসিক থার্ড পার্টি গাড়ি বিমায় সীমিত কভারেজ পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে শুধু থার্ড পার্টিকে বিমার সুবিধা দেওয়া হয়। অর্থাৎ, যদি কোনও থার্ড পার্টির কোনও সম্পত্তির ক্ষতি হয়, বা কোনও থার্ড পার্টি আহত হন কিংবা মৃত্যু হয়, সেক্ষেত্রে এই থার্ড পার্টি গাড়ি বিমার কভারেজ থাকে।

মূলত দুই ধরনের গাড়ি বিমা রয়েছে, যে ক্ষেত্রে গাড়ি চুরি হয়ে গেলে মালিকপক্ষ বিমার কভারেজ পান। একটি হল কেবল ওন ড্যামেজ পলিসি এবং দ্বিতীয়টি হল কম্প্রিহেনসিভ কার ইনস্যুরেন্স পলিসি। কেবল ওন ড্যামেজ পলিসির ক্ষেত্রে, গাড়ির কোনও ক্ষতি হলে কিংবা গাড়ি চুরি হয়ে গেলে, মালিকপক্ষ তার কভারেজ পান। তবে এই পলিসিতে থার্ড পার্টি কভারেজ থাকে না, যেটি যে কোনও গাড়ির ক্ষেত্রে থাকা বাধ্যতামূলক।

অন্যদিকে কম্প্রিহেনসিভ কার ইনস্যুরেন্সের ক্ষেত্রে, আপনি আলাদা আলাদা ধরনের কভারেজের অপশন পেয়ে যাবেন। যেমন গাড়ি চুরি যাওয়া, কিংবা গাড়ির কোনও ক্ষতি, দুর্ঘটনায় গাড়ির ক্ষতি এবং একই সঙ্গে থার্ড পার্টি কভারেজ ও ব্যক্তিগত দুর্ঘটনা কভারেজ।

এছাড়া গাড়ি বিমার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের অতিরিক্ত সুবিধাও পাওয়া যায়, যেমন মাঝরাস্তায় কোনও সাহায্যের প্রয়োজন হলে সেই সব সুবিধা থেকে শুরু করে আরও অনেক কিছু। কম্প্রিহেনসিভ গাড়ি বিমার ক্ষেত্রে কোন ধরনের ক্লেমের জন্য গ্রাহক কত টাকা পর্যন্ত দাবি করতে পারেন, তার একটি সীমা রয়েছে। এটিকে ইনস্যুওরড ডিক্লেয়ার্ড ভ্যালু কিংবা আইডিভি-ও বলা হয়ে থাকে।

ব্যক্তিগত কোনও সামগ্রী চুরি গেলে, সেটা কি গাড়ি বিমা কভার করে?

বিমা প্রদানকারী সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য Tata AIG। তারা একটি বিশেষ সুবিধা দেয় কম্প্রিহেনসিভ গাড়ি বিমা পলিসির সঙ্গে। সেটি হল ‘লস অব পার্সোনাল বিলঙ্গিংস’। অর্থাৎ,গাড়ির ভিতরে রাখা আপনার কোনও জিনিস যদি খোয়া যায়, সেক্ষেত্রে এই বিশেষ সুবিধাটি আপনি ব্যবহার করতে পারে। তবে, এক্ষেত্রে ল্যাপটপ, ঘড়ি, সানগ্লাসের মতো দামি জিনিসপত্রের কভারেজ নাও থাকতে পারে। এর বিষয়ে বিশদে জানতে অবশ্যই চোখ বুলিয়ে নিন পলিসি সংক্রান্ত ডকুমেন্টে। কোন কোন ধরনের সামগ্রী এর কভারেজে রয়েছে, তা আপনি পলিসি সংক্রান্ত ডকুমেন্টে পেয়ে যাবেন।

গাড়ি ভাঙচুর হলে, সেটা কি কভার করে গাড়ি বিমা?

কম্প্রিহেনসিভ গাড়ি বিমার ক্ষেত্রে গাড়ি ভাঙচুরের কভারেজ পাওয়া যায়। যদি কোনও কারণে কোনও কম্প্রিহেনসিভ গাড়ি বিমা পলিসির গ্রাহকের গাড়ি ভাঙচুর হয়, তাহলে গাড়ির মালিক বিমার শর্তাবলী মেনে কভারেজের জন্য দাবি জানাতে পারেন। সেক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ হিসেবে একটি অর্থ বিমা প্রদানকারী সংস্থার তরফে দেওয়া হবে। তবে বিমা ক্লেম করার ক্ষেত্রে গাড়ির মালিককে বেশ কিছু কাজ করতে হয়।

গাড়ি চুরি হলে বিমা ক্লেম করার ক্ষেত্রে এই ধাপগুলি ফলো করুন

আপনার গাড়ি যদি হঠাৎ চুরি হয়ে যায় এবং সেটি যদি বিমার আওতায় থাকে, তাহলে কীভাবে বিমা ক্লেম করবেন?

প্রথম কাজ – একটি এফআইআর দায়ের করুন

আপনার গাড়ি যদি চুরি হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে প্রথমেই আপনাকে থানায় জানাতে হবে। গাড়ি চুরি হয়ে গেলে, সে বিষয়ে এফআইআর দায়ের করা গাড়ির মালিকের অধিকারের মধ্যে পড়ে। এটি শুধু আপনাকে বিমার কভারেজ পেতেই সাহায্য করবে তা নয়, এতে আপনার চুরি যাওয়া গাড়ি খোঁজার ক্ষেত্রেও সাহায্য হবে। গাড়ি চুরি যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আপনাকে এই কাজ সেরে ফেলা উচিত। এফআইআর দায়ের করতে দেরি হবে, আপনার গাড়ি বিমার ক্লেমও ফিরিয়ে দেওয়া হতে পারে।

দ্বিতীয় কাজ – বিমা প্রদানকারী সংস্থাকে জানান

থানায় এফআইআর দায়ের করার পরই, আপনার দ্বিতীয় কাজ হল গাড়ি চুরি যাওয়ার বিষয়টি বিমা সংস্থাকে জানানো। বিমা সংস্থারও বিভিন্ন পলিসির নিরিখে পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু পদ্ধতি রয়েছে। গ্রাহক সংশ্লিষ্ট বিমা সংস্থার ওয়েবসাইটে গিয়ে সেখান থেকে ইনস্যুরেন্স ক্লেম ফর্ম পূরণ করতে পারেন। এক্ষেত্রে বিমা ক্লেমের ফর্মের সঙ্গে এফআইআর-এর একটি কপি জমা করা বাধ্যতামূলক। এই প্রক্রিয়ায় যাতে গ্রাহকদের কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্য Tata AIG-তে ৬৫০ জনেরও বেশি ক্লেম এক্সপার্টের একটি টিম রয়েছে।

তৃতীয় কাজ – আপনার রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট অথরিটিকে (RTO) বিষয়টি জানান

আঞ্চলিক পরিবহণ অফিসে আপনার গাড়ি চুরি যাওয়ার বিষয়টি জানান। এই কাজটিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে ওই গাড়িটির অন্য কোনও নামে নতুন করে রেজিস্ট্রেশন হওয়া ঠেকানো যাবে। তাছাড়া ওই গাড়ি ব্যবহার করে কোনও বেআইনি কাজও ঠেকাতে সাহায্য করবে।

চতুর্থ কাজ – প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র জমা দিন

বিমার ক্লেম পাওয়ার জন্য পলিসিহোল্ডারদের বেশ কিছু নথি জমা দিতে হয়। সেগুলি হল – গাড়ি বিমা পলিসির কাগজ, এফআইআর কপি, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটের কপি, ড্রাইভার্স লাইসেন্সের কপি, আরটিও ডকুমেন্টের কপি, গাড়ির আসল চাবি ও যথাযথভাবে পূরণ করা ও সই করা বিমা ক্লেমের ফর্ম। এরপর এই নথিগুলি বিমা সংস্থা যাচাই করে দেখবে এবং কত টাকা ক্ষতিপূরণ পাবেন, সেটা জানাবে। বিমা ক্লেম করার সময় আপনার গাড়ি বিমা পলিসি আপ টু ডেট রয়েছে কি না, সেটাও দেখে নেওয়া দরকার।

পঞ্চম কাজ – নো ট্রেস রিপোর্ট

গাড়ি চুরি যাওয়ার ক্ষেত্রে বিমা সংস্থাগুলি বেশিরভাগ সময় অপেক্ষা করে নো ট্রেস রিপোর্টের জন্য। থানা থেকে নো ট্রেস রিপোর্ট একবার এসে যাওয়ার পরই সাধারণত ক্ষতিপূরণের অর্থ ছাড়া হয়। নো ট্রেস রিপোর্টের অর্থ, চুরি যাওয়া গাড়ির কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। এফআইআর হওয়ার পর থেকে খোঁজাখুঁজির পর এই নো ট্রেস রিপোর্ট ইস্যু করে পুলিশ।

গাড়ি বিমায় চুরির কভার ও অ্যান্টি থেফ্ট ডিভাইসের কী যোগ

বিমা সংস্থাগুলি সাধারণত মনে করে অ্য়ান্টি থেফ্ট ডিভাইস অর্থাৎ, জিপিএস ট্র্যাকিং ডিভাইস, কার অ্য়ালার্ম ইত্যাদি গাড়ি চুরি যাওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়। এই ধরনের টুলগুলি গাড়ি চুরি কিংবা ভাঙচুরের সম্ভাবনাকে কমিয়ে দেয়। সেক্ষেত্রে যদি কোনও গ্রাহকের গাড়িতে অ্যান্টি থেফ্ট ডিভাইস ইনস্টল করা থাকে, তাঁর গাড়ি চুরি হলে তিনি পর্যাপ্ত সুবিধা পান। যেমন ডিসকাউন্ট বা কম প্রিমিয়াম রেট ইত্যাদি সুবিধা পান এই ধরনের চুরি যাওয়া গাড়ির মালিকরা।

মোটর ভেইকস অ্যাক্ট অনুযায়ী যে কোনও গাড়ির থার্ড পার্টি কার ইনস্যুরেন্স থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু এটা মাথায় রাখতে হবে যে কমপ্রিহেনসিভ গাড়ি বিমা কিংবা ওন ড্যামেজ কভারই গাড়ি চুরি বা ভাঙচুরের ক্ষেত্রে কভারেজ দেয়। যে কোনও বিমা পলিসি কেনার আগে অবশ্যই বিভিন্ন গাড়ি বিমায় কী কী সুবিধা রয়েছে এবং প্রিমিয়ামের অঙ্ক তুলনা করে দেখে নেওয়া দরকার। সেক্ষেত্রে কমপ্রিহেনসিভ গাড়ি বিমা কেনাই সবথেকে শ্রেয়। কারণ এটি ব্যক্তিগত দুর্ঘটনা থেকে শুরু করে অনেক ধরনের ক্ষেত্রে কভারেজ দেয়। সঙ্গে রোডসাইড অ্যাসিস্ট্যান্সের মতো বেশ কিছু অ্যাড-অন সুবিধাও পাওয়া যায় এই কমপ্রিহেনসিভ গাড়ি বিমায়।