Ramiz Raja: বিতর্কের মধ্যেও পাক ক্রিকেটকে নতুন দিশা দেখাচ্ছেন রামিজ রাজা

চেয়ারম্যান হওয়ার পর পাক জনতার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করছেন রামিজ। আর তাই তিনি বলেছেন, সপ্তাহে একদিন তাঁকে তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে সরাসরি প্রশ্ন করা যাবে। যা আবার সমালোচনার মুখে ফেলেছে রামিজকে।

Ramiz Raja: বিতর্কের মধ্যেও পাক ক্রিকেটকে নতুন দিশা দেখাচ্ছেন রামিজ রাজা
Ramiz Raja: বিতর্কের মধ্যেও পাক ক্রিকেটকে নতুন দিশা দেখাচ্ছেন রামিজ রাজা (সৌজন্যে-টুইটার)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 16, 2021 | 8:31 AM

করাচি: যখন খেলতেন, তাঁর ডাকাবুকো মনোভাবের জন্য RAMBO বলে ডাকা হত। সেই RAMBO-ই এখন পাকিস্তান ক্রিকেটে (Pakistan cricket) পরিত্রাতা। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, দলীয় কোন্দল, চূড়ান্ত অপেশাদারিত্বে বিভ্রান্ত দেশের ক্রিকেট সিস্টেমকে ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করছেন রামিজ রাজা (Ramiz Raja)। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (PCB) চেয়ারম্যান মনোনীত হওয়ার পর থেকেই সেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন রাজিম। ক্রিকেট কেরিয়ার জুড়ে দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ের জন্যই পরিচিত ছিলেন। মোড় ঘোরানো ইনিংস খেলতেন বিপক্ষের বিরুদ্ধে সেই রামিজই আবার মোড় ঘোরাতে পারবেন পাক ক্রিকেটের, এমন বিশ্বাস কেউ কেউ যেমন করছেন, তেমনই কারও কারও মত, এহসান মানিদের মতো রামিজও কাঠের পুতুল হয়ে যাবেন দ্রুত। পাকিস্তান ক্রিকেট যেখানে ছিল, সেখানেই থেকে যাবে।

রামিজের শুরুটা কিন্তু বেশ ভালো। পাক ক্রিকেটের খোলনলচে পাল্টার কাজ শুরু করে দিয়েছেন ম্যাথু হেডেন, ভার্নন ফিল্যান্ডারকে কোচ করে। বিদেশি কোচ নতুন নয় পাক ক্রিকেটে। কিন্তু নতুন প্রজন্মের মুখ হিসেবে হেডেনদের তুলে আনাটা নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ। সেই সঙ্গে পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটের আর্থিক পালাবদলও শুরু হয়ে গিয়েছে তাঁর হাত ধরে। দেড়শোর বেশি ক্রিকেটারকে পিসিবির আর্থিক চুক্তির আওতায় নিয়ে এসেছেন। জাতীয় টিমে খেলা প্লেয়ারদের আর্থিক সমস্যা নেই। কিন্তু পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে আর্থিক স্বচ্ছলতা নেই। যা তৈরি করার সাহসী পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করছেন রামিজ।

মাত্র কয়েক দিনের চেয়ারম্যানকে ঘিরে বিতর্কও কম নেই। যতই তিনি বলুন, ‘আমি দেশবাসীর গালি খাওয়ার জন্য আসিনি’— আসলে কিন্তু পাক ক্রিকেটের এই বদল কেউই ইতিবাচক দিক হিসেবে নিচ্ছেন না। হঠাৎ করে আর্থিক স্বচ্ছলতা দেওয়াকে অনেকেই বলছেন, চটক সিদ্ধান্ত। যার মধ্যে দিয়ে সাময়িক আস্থা অর্জনের চেষ্টা করছেন।

পাক ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় সমস্যা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ। ইমরান খান যা নিয়ে সরব ছিলেন একসময়। কিন্তু তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর কিন্তু পিসিবির প্যাট্রন ইন চিফ। অর্থাৎ, ক্রিকেটকে তিনি নিজের হাতের মুঠোতেই রাখতে চেয়েছেন। এহসান মানি ছিলেন তাঁরই লোক। সেই তাঁর পদত্যাগের পর দায়িত্ব আসা রামিজ স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারবেন, এমনটা কেউই মনে করছেন না।

শুধু তাই নয়, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের (T20 World Cup) জন্য যে টিম বাছা হয়েছে সম্প্রতি, তাও নিয়েও কম বিতর্ক নেই। শোয়েব মালিক, সরফরাজ আহমেদকে বাদ দেওয়া হয়েছে টিম থেকে। আসিফ আলি, আজম খানদের মতো ক্রিকেটারদের টিমে রাখা হয়েছে। যা নাকি ক্যাপ্টেন বাবর আজমের পছন্দ হয়নি। তবে, পাক অধিনায়কের সঙ্গে রামিজ অবশ্য সম্পর্ক ভালো রাখার চেষ্টা করছেন। তাঁকে সব ধরণের সমর্থন দেওয়ার চেষ্টাও করছেন। ওই সমীকরণ কত দিন অক্ষুণ্ণ রাখতে পারবেন, তা নিয়েও সন্দেহ আছে অনেকের।

চেয়ারম্যান হওয়ার পর পাক জনতার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করছেন রামিজ। আর তাই তিনি বলেছেন, সপ্তাহে একদিন তাঁকে তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে সরাসরি প্রশ্ন করা যাবে। যা আবার সমালোচনার মুখে ফেলেছে রামিজকে। কেউ কেউ তো এমনও বলছেন, নিজের ইউটিউব চ্যানেলকে জনপ্রিয় করার পথ এই ভেবে বেছেছেন তিনি।

যাই হোক না কেন, রামিজ তবু চেষ্টা করছেন একটা নতুন ধারা তৈরি করার। যা পাক ক্রিকেটকে ফের আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পুরনো সাফল্য ও মর্যাদা ফিরিয়ে দেবে।