কাল সকালটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে
ব্রিসবেন টেস্টের প্রথম দিনের খেলা নিয়ে টিভি নাইন বাংলায় শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়ের কলম।
শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়
দুটো প্রশ্ন সকাল থেকে আমার মাথায় ধাক্কা দিচ্ছে। প্রথমটা, ভারতীয় টিমে এত চোট আঘাত কেন? আর দ্বিতীয়টা হল, কুলদীপ যাদবকে কেন খেলানো হল না?
আজ সকালে গাব্বায় টেস্ট শুরুর আগে ভারতীয় টিম দেখে একটু আশ্চর্যই হয়েছিলাম। বুমরা যে খেলতে পারবে না, আমি অন্তত নিশ্চিত ছিলাম। কিন্তু আমার মনে হয়েছিল, অশ্বিন হয়তো খেলে দেবে। একটা ব্যাপার সত্যিই বুঝতে পারছি না। ভারতীয় টিমের একের পর এক ক্রিকেটার, বিশেষ করে বোলাররা কেন চোটের কবলে পড়ছে। একটাই কারণ হতে পারে, টেস্ট খেলার ধকলটা নিতে পারছে না ভারতীয় ক্রিকেটাররা। তাই নভদীপও কুঁচকির চোটে ভুগছে।
That will be Stumps on Day 1 of the 4th Test.
Australia 274/5
Scorecard – https://t.co/gs3dZfTNNo #AUSvIND pic.twitter.com/lhceSJ0nue
— BCCI (@BCCI) January 15, 2021
ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের মতো দেশগুলোর দিকে তাকালে একটা জিনিস পরিষ্কার হয়ে যাবে। ওদের দেশের ক্রিকেটাররা নিয়মিত ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে। টেস্ট না থাকলেও ওদের শরীর পাঁচ দিনের খেলার ধকল নেওয়ার জন্য তৈরি থাকে। ভারতে সেটা হয় না। যারা জাতীয় টিমে খেলে, তাদের রঞ্জি ট্রফিতে খেলতে দেখা যায় না। সাদা বলের ক্রিকেটেই বেশি ব্যস্ত থাকে। টি-টোয়েন্টি কিংবা ওয়ান ডে-তে চার অথবা দশ ওভার বল করতে হয়। কিন্তু টেস্টে যে কোনও বোলারকে অন্তত কুড়িটা ওভার বল করতেই হবে। সেই ধকল নেওয়ার মতো শরীরের পেশি যদি তৈরি না থাকে, চোট লাগবেই। ভারতের ক্ষেত্রে সেটাই হচ্ছে।
আর কুলদীপ, ওকে না দেখে আমিও একটু অবাক হয়েছি। অশ্বিন না থাকলে ওয়াশিংটন খেলবেই। কিন্তু ব্রিসবেনের পিচে ব্যাটসম্যানদের জন্য প্রচুর রান আছে। চার পেসারে না গিয়ে বরং একটা বাড়তি স্পিনার খেলাতে পারত। কুলদীপের চায়নাম্যান বোলিং সে ক্ষেত্রে বৈচিত্র আনতে পারত।
“I think Nattu (Natarajan) bowled really well today and brought us back in the game,” says @Sundarwashi5 #AUSvIND pic.twitter.com/VWQPRn8Kpp
— BCCI (@BCCI) January 15, 2021
সব মিলিয়ে গাব্বায় প্রথম দিনের শেষে ভারত খুব একটা এগিয়েও নেই, পিছিয়েও নেই। শুরু থেকেই বলে আসছি, অস্ট্রেলিয়ার কার্যত দুটো ব্যাটসম্যান। স্মিথ আর লাবুসেন। ওরাই কিন্তু টিমকে টানছে। লাবুসেন এ দিন ১০৮ রানের একটা ইনিংস খেলে গেল। কখনও স্মিথ (৩৬), কখনও ম্যাথু ওয়েডকে (৪৫) সঙ্গে নিয়ে। ২৭৪-৫ খারাপ স্কোর নয়। কিন্তু এখানেই অস্ট্রেলিয়াকে থামিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনাটা ঠিক করে নিতে ভারতকে। আজ নব্বই ওভার বল করেছে ভারত। কাল সকালে নতুন বল নেওয়ার সুযোগ থাকছে। ভারত একদম শুরুতেই ধাক্কা দিক অজিদের। পরের পাঁচটা উইকেট যত তাড়তাড়ি তুলে নিতে পারবে, ততই সুবিধা। একটা ব্যাপার মনে রাখতে হবে, এই টেস্টের প্রথম ইনিংসে কিন্তু ৪০০-র হাতছানি আছে। অস্ট্রেলিয়া যদি সেটা তুলতে না পারে, তা হলে ভারতকে কিন্তু এই চারশো রান তুলতেই হবে।
আরও পড়ুন:নক আউট পর্বে যেতে বাংলার ফোকাসে অসম ম্যাচ
কথা হচ্ছে, ম্যাচটা কোন দিকে এগোতে পারে? ভারত কি জিতবে? ৩৬ রানের বিপর্যয় থেকে বেরিয়ে এসে ভারত যে ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তাতে এই সিরিজ জেতাটা উচিত। একটা জিনিস বুঝতে পারা যাচ্ছে, অস্ট্রেলিয়া টিমটার মধ্যে বিরাট গভীরতা নেই। এটাই সেরা সময় ওদের জবাব দেওয়ার। কাল সকালটাই কিন্তু ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে যেতে পারে।