অক্ষরের জমিতে জয়ের স্বপ্ন তৈরি করছে রোহিত
শরদিন্দু মুখোপাধ্যায় ইংল্যান্ড ১১২ ভারত ৯৯-৩ শুরুতেই একটা কথা বলে দিই, ভারতের সেরা তিন স্পিনার যদি বাছতে হয়, তা হলে অশ্বিন, জাডেজার পরই এখন রাখতে হবে অক্ষর প্যাটেলকে। চেন্নাইয়ে জীবনের প্রথম টেস্ট খেলতে নেমে ৫ উইকেট সহ ম্যাচে আট শিকার ছিল ওর। আর মোতেরায় দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসেই ৬ উইকেট। তার মানে, তিন ইনিংসে ১৪ […]
শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়
ইংল্যান্ড ১১২ ভারত ৯৯-৩
শুরুতেই একটা কথা বলে দিই, ভারতের সেরা তিন স্পিনার যদি বাছতে হয়, তা হলে অশ্বিন, জাডেজার পরই এখন রাখতে হবে অক্ষর প্যাটেলকে। চেন্নাইয়ে জীবনের প্রথম টেস্ট খেলতে নেমে ৫ উইকেট সহ ম্যাচে আট শিকার ছিল ওর। আর মোতেরায় দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসেই ৬ উইকেট। তার মানে, তিন ইনিংসে ১৪ উইকেট। দারুণ শুরু, কোনও সন্দেহ নেই। আমরা বলি, গোলাপি বলে স্পিন কম হয়। পেসাররাই বেশি সুবিধা পেয়ে থাকে। আমদাবাদে কিন্তু এই থিওরি কিছুটা হলেও ফিকে করে দিল অক্ষর। মাত্র ৩৮ রান খরচ করেছে হাফ জডন উইকেট নিতে। ক্রলে, বেয়ারস্টো, স্টোকসকে শুরুতেই ফিরিয়ে দিয়ে ধাক্কা দিয়েছিল। বাকি কাজটা সেরেছে অশ্বিন।
Fifty up for Rohit Sharma!
His third-wicket partnership alongside Virat Kohli approaching the 50-run mark.#INDvENG | https://t.co/0unCGV6iLi pic.twitter.com/sfcqWxhiIS
— ICC (@ICC) February 24, 2021
ইংল্যান্ডের ১১২ রানে শেষ হওয়ার পর ভারতের যে কাজটা করা উচিত ছিল, সেটাই করছে। একটা বড় পার্টনারশিপ তৈরি করছে রোহিত আর বিরাট। রোহিত আগের টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেছে। দারুণ ফর্মে আছে। মোতেরাতেও ৫৭ রান করে ক্রিজে আছে। ওর সঙ্গে বিরাটও শুরুটা ভালো করেছিল। ২৭ রানে লিচের বলে বোল্ড হয়ে ফিরল। রোহিতের সঙ্গে জুটি বেঁধে রাহানে-পন্থরা যদি লম্বা খেলে দিতে পারে, তা হলে কিন্তু চিপকের দ্বিতীয় টেস্টের রিপ্লে দেখা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: India vs England 3rd Test, Day 1 LIVE Score: রোহিতের হাফ সেঞ্চুরি, অ্যাডভান্টেজ টিম ইন্ডিয়া
কেন জানি না, সন্ধের পর থেকে বারবার একটাই মনে হচ্ছে। মোতেরা টেস্টও সাড়ে তিনদিনের বেশি গড়াবে না। আর এটা নিয়ে কোনও দ্বিধা নেই, ইংল্যান্ড আরও একবার ভরাডুবির মুখে পড়তে চলেছে। যদি না দ্বিতীয় ইনিংসে দারুণ কিছু করে দেখায় রুটের টিম।
দুটো জিনিস আমি বুঝতেই পারছি না। এক, মোতেরার পিচের চরিত্র বুঝতেই পারেনি ইংল্যান্ড। যদি পারত, তিন বিশেষজ্ঞ পেসার হিসেবে অ্যান্ডারসন, ব্রড, আর্চারকে খেলাত না। একমাত্র স্পিনার হিসেবে শুধু লিচকে খেলাত না। খুব অবাক লাগছিল টিমটা দেখার পর। মোতেরা যে হেতু নতুন স্টেডিয়াম, পিচ কেমন হবে, সে সম্পর্কে কারওরই পরিষ্কার ধারণা থাকার কথা নয়। তাই বলে সামান্য হোমওয়ার্ক থাকবে না? কোন যুক্তিতে আর একটা স্পিনার ওরা টিমে রাখল না, বুঝতেই পারলাম না।
দুই, স্পিনের বিরুদ্ধে ব্যাটিং করার স্কিল রুট ছাড়া আর কেউ যে জানে না, সেটা আরও একবার প্রমাণ হল। যে কারণে রুট আউট হতেই টিমটা শেষ হয়ে যাচ্ছে। চেন্নাইয়ে দ্বিতীয় টেস্টে তাই দেখেছি। মোতেরাতে প্রথম ইনিংসেও তাই দেখলাম। পিচে এমন কিছু জুজু ছিল না যে, এ ভাবে উইকেট দিয়ে আসবে ইংলিশ ক্রিকেটাররা। মুশকিল হচ্ছে, এখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্য যা যা করার দরকার, সেটা করলই না ইংল্যান্ডের টিম ম্যানেজমেন্ট। সবচেয়ে আশ্চর্যের হল, জনি বেয়ারস্টোকে টিমে ফেরানোর পাশাপাশি বেন ফোকসকে কিপার হিসেবে খেলানো হচ্ছে! কেন?
India on top after Day 1.
Scorecard: https://t.co/bpErtjWTBE#INDvENG pic.twitter.com/8QxgHGp5r1
— England Cricket (@englandcricket) February 24, 2021
এই ইংল্যান্ড টিমটার আরও একটা অবাক করার দিক হল রোটেশন পলিসি। যে কোনও সফরের গুরুত্ব অনুযায়ী টিম তৈরি করা হয়। ভারত সফর ইংল্যান্ডের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে যদি সিরিজ জিততে পারে, তা হলে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলার সুযোগ পাবে ওরা। কিন্তু ওরা একটা যুক্তিহীন রোটেশন পদ্ধতির জন্যই টেস্ট সিরিজটা প্রায় খোয়াতে বসেছে। অবাক হচ্ছি এটা ভেবে যে, মইন আলির মতো প্লেয়ারকে কেন দেশে ফেরত পাঠানো হবে? মোতেরায় কিন্তু ওর অভিজ্ঞতা ভীষণ কাজে লাগত টিমের। বল হাতে তো বটেই, ব্যাট হাতেও ও কার্যকর ভূমিকা নিতে পারত।
ইংল্যান্ড প্রত্যাবর্তনের জমি কী ভাবে তৈরি করবে, সেটা দেখার অপেক্ষায় থাকছি। তবে রোহিত-বিরাট সে সুযোগ কতটা দেবে, বলা মুশকিল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ইংল্যান্ড ১১২ (ক্রলে ৫৩, রুট ১৭, ফোকস ১২, অক্ষর ৬-৩৮, অশ্বিন ৩-২৬, ইশান্ত ১-২৬)। ভারত ৯৯-৩ (রোহিত ৫৭ ব্যাটিং, বিরাট ২৭, রাহানে ব্যাটিং ১, লিচ ২-২৭, আর্চার ১-২৪)।