IPL 2021: ক্যাপ্টেন মর্গ্যানের কেকেআরেও নতুনের জয়গান

গত আইপিএলের (IPL) ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়েছে নাইট রাইডার্স (Kolkata Knight Riders)। দুবাইয়ে দেখেছিলাম, ওপেনিং স্লট ঠিক করতে করতে আইপিএলই শেষ হয়ে গিয়েছিল। এ বারে শুরু থেকেই কোমর বেঁধে নেমেছে নাইটরা।

IPL 2021: ক্যাপ্টেন মর্গ্যানের কেকেআরেও নতুনের জয়গান
IPL অফ দ্য ফিল্ড
Follow Us:
| Updated on: Apr 12, 2021 | 12:11 AM

শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়

কলকাতা নাইট রাইডার্স- ১৮৭/৬ (২০ ওভার) সানরাইজার্স হায়দরাবাদ- ১৭৭/৫ (২০ ওভার)

নিখুঁত গেমপ্ল্যান একেই বলে। আইপিএল (IPL) চোদ্দয় নাইটদের (KKR) প্রথম দর্শনে বেশ খুশি। সুনীল নারিনকে দলে না দেখে হয়তো অনেকেই অবাক হয়েছিল। তবে আমি বলব, নাইটরা একটা বার্তা দিয়ে রাখল নারিনকে। পারফরমেন্সই এখানে শেষ কথা। যে নারিন গত কয়েক বছর ধরে অটোমেটিক চয়েস ছিল, সেই নারিনকে বেঞ্চে বসিয়ে জয় তুলতে সাহস লাগে। টিম ম্যানেজমেন্টের এই সাহসিকতাকে কুর্নিশ। ব্যাটিং-বোলিং উভয় বিভাগেই সানরাইজার্সকে টেক্কা দিল মর্গ্যানরা। চিপকের উইকেট বরাবরই মন্থর। সেই মতোই ৩ স্পিনারে দল সাজিয়েছিল নাইটরা। একটা সময় ম্যাচটা উত্তেজক পরিস্থিতিতে পৌঁছে গিয়েছিল। ক্যাপ্টেন মর্গ্যানের সিদ্ধান্তই ম্যাচে ফেরাল নাইটদের। সঠিক সময়ে প্যাট কামিন্সের হাতে বল তুলে দিল। আর তাতেই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা বেয়ারস্টো আউট হল। স্বদেশীয় বেয়ারস্টো কোথায় ভুল করতে পারে সেটা জানত মর্গ্যান। আর ওই নিখুঁত চালেই বাজিমাত। মণীশ পান্ডের লড়াকু ইনিংস মুগ্ধ করল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে নিজেকে প্রমাণের জন্য মরিয়া হয়ে উঠবে। এই আইপিএলই মণীশের ফিরে আসার মঞ্চ। নীতীশ রানা, রাহুল ত্রিপাঠী দুই তরুণ ক্রিকেটারের প্রশংসা অবশ্যই প্রাপ্য। সেই সঙ্গে প্রসিধ কৃষ্ণাকেও দরাজ সার্টিফিকেট দেব।

গত আইপিএলের (IPL) ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়েছে নাইট রাইডার্স (Kolkata Knight Riders)। দুবাইয়ে দেখেছিলাম, ওপেনিং স্লট ঠিক করতে করতে আইপিএলই শেষ হয়ে গিয়েছিল। এ বারে শুরু থেকেই কোমর বেঁধে নেমেছে নাইটরা। নীতীশ রানা-শুভমন গিল জুটি এ বারের আইপিএলে অনেক প্রতিপক্ষের ঘুম কাড়বে। চিপকের উইকেট সাধারণত মন্থর হয়। আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করা সহজ নয়। সেখানে নীতীশ রানা (Nitish Rana) যেরকম খেলল তা তারিফযোগ্য। ৫৬ বলে ৮০ রানের ঝকঝকে ইনিংসে বুঝিয়ে দিল এ বারের আইপিএলে ওপেনিংয়ে রানার উপর ভরসা রাখতেই হবে নাইট শিবিরকে। ৩ নম্বরে রাহুল ত্রিপাঠীকেও (Rahul Tripathi) ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে দেখলাম। ২৯ বলে ৫৩ রানের দাপুটে ইনিংস। রানা-ত্রিপাঠী জুটিতে উঠল ৯৩ রান। আর শেষ বেলায় কেকেআরের প্রাক্তন অধিনায়ক দীনেশ কার্তিকের ৯ বলে অপরাজিত ২২ রানের ঝোড়ো ইনিংসই স্কোরবোর্ডকে ভালো জায়গায় নিয়ে যায়।

বেয়ারস্টো বরাবরই আইপিএলে ভালো খেলে। প্রথম ম্যাচেও অসাধারণ ব্যাটিং করতে দেখলাম। আইপিএলে দু’বারের চ্যাম্পিয়ন হায়দরাবাদ। কেকেআরও ২ বারের চ্যাম্পিয়ন। তাই সেরা দলকে হারাতে হলে সেরাদের মতোই পারফর্ম করতে হবে। নাইটরা সেটাই করে দেখাল। ওয়ার্নারের মতো দুঁদে ব্যাটসম্যানকে শুরুতেই ফিরিয়ে ঝটকা দিল প্রসিধ কৃষ্ণা। ঋদ্ধিমান সাহাকে দেখে মনে হল ও চাপে আছে। আসলে ঋষভ পন্থ এসে যাওয়ার পর জাতীয় দলেও আর সুযোগ পাচ্ছে না। আইপিএলে নাইটদের বিরুদ্ধে ভালো রেকর্ড আছে ঋদ্ধির। সেটা ভেবেই ওকে দলে রেখেছিল ট্রেভর বেইলিস। কিন্তু সাকিবের বলে ৭ রানে আউট হল। কেকেআর সমর্থক হিসেবে আইপিএলের প্রথম ম্যাচ জেতায় আনন্দ হচ্ছে। তবে নাইটদের ভাবতে হবে রাসেলকে নিয়ে। গত আইপিএলে ফ্লপ হয়েছিল। এ বারের প্রথম ম্যাচেও ওকে ছন্দে দেখলাম না। বেন কাটিংয়ের মতো অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার বেঞ্চে বসে আছে। রাসেলকে কিন্তু পারফর্ম করতে হবে। মর্গ্যানের ক্যাপ্টেন্সি মনে ধরেছে। সুন্দর ভাবে বোলারদের পরিবর্তন করল। একজন স্পিনার আর একজন পেসারকে দিয়ে বল করিয়ে গেল। টিম কম্বিনেশনে সুপারহিট। সকাল দেখে বোঝা যায় দিনটা কেমন যাবে। এ বারের কেকেআরকে দেখে কিন্তু সেটাই মনে হচ্ছে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: কলকাতা নাইট রাইডার্স- ১৮৭/৬ (রানা ৮০, ত্রিপাঠী ৫৩, রাশিদ ২/২৪, নবি ২/৩২), সানরাইজার্স হায়দরাবাদ- ১৭৭/৫ (মণীশ ৬১ অপরাজিত, বেয়ারস্টো ৫৫, প্রসিধ ২/৩৫)। ১০ রানে জয়ী কলকাতা নাইট রাইডার্স। ম্যাচের সেরা নীতীশ রানা।