Yudhajit Guha: বিশ্বকাপের দিকে আরও এক পা, অনূর্ধ্ব ১৯ ভারতীয় দলে বাংলার পেসার যুধাজিৎ
গত কয়েক বছর ধরেই বাংলায় ভিনরাজ্যের ক্রিকেটারদের ভিড়। এই বাংলা থেকেই মহম্মদ সামি, মুকেশ কুমারদের উত্থান। ভারতীয় দল খেলা। কিন্তু ভূমিপুত্র কোথায়? একটা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় কি আর মিলবে না? একটা ঋদ্ধিমান সাহা? সেই প্রশ্নের উত্তর যেন মেলানোর স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছেন চেতলার ছেলে।
এ যেন নিখুঁত ছোবল! আউট সুইংয়ে পর পর ঘায়েল বিপক্ষের ব্যাটাররা। ১২০ রানের পুঁজি নিয়েও এমন বোলিং করা যায়? কল্পনার দরকার নেই, ১৮ বছরের এক বাঙালি পেসার কোচবিহার ট্রফিতে ঝাড়খণ্ডকে তছনছ করে দিয়েছিলেন কিছু দিন আগে। বয়সভিত্তিক বাংলাকে গত কয়েক বছর ধরেই টানছেন ৬ ফুট ২ ইঞ্চির তরুণ। সেই তিনি এ বার পরতে চলেছেন ভারতীয় টিমের জার্সি। অনূর্ধ্ব ১৯ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের ওয়ান সিরিজের টিম ঘোষণা হল। তাতে বাংলা তো বটেই, পূর্বাঞ্চল থেকে একমাত্র রয়েছেন যুধাজিৎ গুহ (Yudhajit Guha)।
গত কয়েক বছর ধরেই বাংলায় ভিনরাজ্যের ক্রিকেটারদের ভিড়। এই বাংলা থেকেই মহম্মদ সামি, মুকেশ কুমারদের উত্থান। ভারতীয় দল খেলা। কিন্তু ভূমিপুত্র কোথায়? একটা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় কি আর মিলবে না? একটা ঋদ্ধিমান সাহা? সেই প্রশ্নের উত্তর যেন মেলানোর স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছেন চেতলার ছেলে। মসৃণ রানআপ। দর্শনীয় অ্যাকশন। আর ঘাতক সুইং। ইয়র্কার। ধারাবাহিকতা। যুধাজিৎকে এ ভাবেই ব্যাখ্যা করছে বাংলা এবং ভারতীয় ক্রিকেট মহল। কোচ সঞ্জীব সান্যাল স্বপ্ন দেখিয়েছেন যাঁকে। জুনিয়র কমিটির চেয়ারম্যান সঞ্জয় দাস এগিয়ে দিয়েছেন যাঁকে। আর যাঁকে ধারালো করেছে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির রাজীব দত্ত, অপূর্ব দেশাইদের মতো কোচেরা।
যুধাজিতের আশ্চর্য উত্থানের স্কোরবোর্ডে ঝুরিঝুরি উইকেট। শুধু গত বছরই ভিনু মানকড় আর কোচবিহার ট্রফিতে ৩২ উইকেট নিয়েছেন বাঙালি পেসার। এনসিএ-র চারদলীয় টুর্নামেন্টের ৪ ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়ে নজর কেড়ে নিয়েছিলেন। তখন থেকেই ঢুকে পড়েছেন নির্বাচকদের খাতায়। ২০২৬ সালে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ। তার জন্য এখন থেকেই টিম গোছানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। আর তাই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৩ ম্যাচের ওয়ান ডে সিরিজে রয়েছেন যুধাজিৎ। ২১, ২৩ ও ২৬ সেপ্টেম্বর পন্ডিচেরিতে তিনটে ম্যাচ। ওই টিমে রয়েছেন রাহুল দ্রাবিড়ের ছেলে সমিত দ্রাবিড়। ক্যাপ্টেন মহম্মদ আমন। এই সিরিজই মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে যুধাজিতের।
জাতীয় স্তরে পারফরম্যান্সের পাশাপাশি ঘরোয়া টুর্নামেন্টেও একইরকম সফল যুধাজিৎ। ক্যালকাটা পুলিশ ক্লাবের হয়ে মাত্র ৯ ম্য়াচে ১৯ উইকেট নিয়েছেন। একই সঙ্গে বাংলার ভবিষ্যৎও ধরা হচ্ছে তাঁকে। আগামী মরসুমের ৩০ জনের সম্ভাব্য দলে সুযোগ পেয়ে গিয়েছেন। আশা করা হচ্ছে, চূড়ান্ত দলেও থাকবেন। সামি, মুকেশরা ব্যস্ত থাকবেন জাতীয় টিমের হয়ে। যুধাজিৎকে তাই সুযোগ দিতে চাইছেন বাংলার টিম ম্যানেজমেন্ট। জাতীয় দলে সুযোগ পেলেও যুধাজিৎ প্রচারমাধ্যম থেকে বরাবরের মতো দূরেই রয়েছেন। এমনকি ফেসবুক অ্যাকাউন্টও নেই। যুধাজিতের কোচ সঞ্জীব বলে দিলেন, ‘লম্বা সফর। তাই উচ্ছ্বসিত হওয়ার কিছু নেই। যুধাজিৎকে বলেছি, যে ম্যাচেই সুযোগ পাবেন, সেরাটা দিও।’
ক্রিকেট মাঠের মন্ত্রই শুধু মাথায় থাকছে ১৮ বছরের ছেলের। ভারতীয় দলে সুযোগের অপেক্ষায় বাংলার তরুণ পেসার। নিখুঁত আউট সুইং আর মাপা লেন্থ নিয়ে তৈরি যুধাজিৎ।