East Bengal: ডায়েট, ড্রিম, ডিস্ট্রিবিউশন! কী ভাবে ‘থ্রি ডি’ ফুটবলার হলেন East Bengalএর সৌভিক?

Souvik Chakrabarti: খারাপ সময় শেখায়, কী ভাবে ফিরে আসতে হয়। দুরন্ত প্রত্যাবর্তনেও শেষ হয় না কাজ। নিজেকে ধরে রাখার প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে হয়। ৩৬এর লিওনেল মেসি দেখাচ্ছেন। ৩৯এর ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো শেখাচ্ছেন। মহাতারকাদের দেখে কতটা শেখে এই গ্রহের ফুটবলাররা? কেউ কেউ ব্যতিক্রমী হতে চান। কেউ কেউ ব্যতিক্রমী হতেও পারেন। সৌভিক চক্রবর্তীর মতো। বাঙালি ফুটবলারকে একসময় প্রতিভাবান ফুটবলার বলা হয়। সময় যত এগিয়েছে, সেই সৌভিকই প্রমাণ করেছেন নিজেকে।

East Bengal: ডায়েট, ড্রিম, ডিস্ট্রিবিউশন! কী ভাবে 'থ্রি ডি' ফুটবলার হলেন East Bengalএর সৌভিক?
ডায়েট, ড্রিম, ডিস্ট্রিবিউশন! কী ভাবে 'থ্রি ডি' ফুটবলার হলেন ইস্টবেঙ্গলের সৌভিক?Image Credit source: Graphics - TV9Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 04, 2024 | 8:53 AM

কৌস্তভ গঙ্গোপাধ্যায়

খারাপ সময় শেখায়, কী ভাবে ফিরে আসতে হয়। দুরন্ত প্রত্যাবর্তনেও শেষ হয় না কাজ। নিজেকে ধরে রাখার প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে হয়। ৩৬এর লিওনেল মেসি দেখাচ্ছেন। ৩৯এর ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো শেখাচ্ছেন। মহাতারকাদের দেখে কতটা শেখে এই গ্রহের ফুটবলাররা? কেউ কেউ ব্যতিক্রমী হতে চান। কেউ কেউ ব্যতিক্রমী হতেও পারেন। সৌভিক চক্রবর্তীর (Souvik Chakrabarti) মতো। বাঙালি ফুটবলারকে একসময় প্রতিভাবান ফুটবলার বলা হয়। সময় যত এগিয়েছে, সেই সৌভিকই প্রমাণ করেছেন নিজেকে। দীর্ঘদিন আইএসএল খেলেও এখনও খিদে মেটেনি তাঁর। বরাহনগরের ছেলে বরং বাস্তবের মাটিতে পা রেখে নিজেকে ঘষামাজা চালিয়ে যাচ্ছেন আজও। ডায়েট, ড্রিম আর ডিস্ট্রিবিউশনের মধ্যে দিয়ে কলকাতা ময়দানে এক নতুন ‘থ্রি ডি’ ফুটবলারের জন্ম হয়েছে। তাই হয়তো তিরিশে পা রাখা বাঙালি ফুটবলার এ বার আইএসএলের প্রতি ম্যাচেই নজর কেড়ে নিচ্ছেন। সেরাটা দিচ্ছেন। টিমকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সেই সৌভিক মন খুললেন TV9Bangla Sports এর কাছে। নতুন বছরে পা রেখে কী বললেন নিজেকে নিয়ে? ইস্টবেঙ্গল জার্সিতে কোন স্বপ্ন মুঠোয় ধরতে চান তিনি?

১) বদলে যাওয়া সৌভিক চক্রবর্তীর রহস্য কী?

সৌভিক: সত্যি বলতে বদলে যাওয়া ব্যাপারটাতে আমি বিশ্বাস করি না। সবসময় সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করি। গত বছর অসুস্থতার কারণে খুব বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাইনি। চলতি মরসুমের শুরু থেকেই ভালো খেলার আরও বেশি চেষ্টা করে যাচ্ছি।

২) গত বছর খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন। ফর্ম খুঁজতে কলকাতা লিগেও খেলতে হয়েছে। সেই ম্যাচ টাইমই কি এতটা নিখুঁত করে তুলল?

সৌভিক: কলকাতা লিগের ম্যাচগুলো খেলে আমার বেশ উপকার হয়েছে। আমি কোনও দিন কলকাতা লিগ বা কোনও ম্যাচকে ছোট করে দেখিনি। ক্লাব যেখানে খেলতে বলেছে, খেলেছি। যখনই নেমেছি, একশো শতাংশ দিয়েছি যাতে পুরোনো ফর্মে দ্রুত ফিরতে পারি। চলতি মরসুমে আমার ম্যাচ টাইম খুব দরকার ছিল। ইমামি ইস্টবেঙ্গল ম্যানেজমেন্টের কাছে কৃতজ্ঞ আমার উপর বিশ্বাস রাখার জন্য।

৩) ইস্টবেঙ্গল জার্সিতে সৌভিক পাল্টে গিয়েছেন। খেলার স্টাইলও বদলেছে। ব্লকিংয়ের সঙ্গে ডিস্ট্রিবিউশনও চমৎকার। কোন টোটকায় এই সাফল্য?

সৌভিক: আমি কোচের নির্দেশ অনুযায়ী চলেছি। যথাসাধ্য দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করেছি। আমি সেভাবেই খেলার চেষ্টা করি যাতে আমাদের দলের উপকার হয়। আসলে কী জানেন, ভালো খেলার মধ্যে কোনও রহস্য নেই। পরিশ্রম আর একাগ্রতা ছাড়া ভালো কিছু অর্জন করা সম্ভব নয়। গত এক বছরে প্রচুর পরিশ্রম করেছি, যাতে ভালো ভাবে ফিরতে পারি।

৪) সাউল ক্রেসপোর সঙ্গে বোঝাপড়া নিয়ে কী বলবেন?

সৌভিক: সাউলের সঙ্গে মরসুমের শুরু থেকেই বোঝাপড়াটা ভালো তৈরি হয়েছে। সাউল বেশ মিশুকে। দ্রুত আমরা ভালো বন্ধু হয়ে উঠেছি। আইএসএলে এটা ওর দ্বিতীয় মরসুম। এখানকার ফুটবল সংস্কৃতির বিষয়ে ও এখন বেশ ওয়াকিবহাল। অনুশীলনেও আমরা অনেকটা সময় একসঙ্গে কাটাই। আমাদের মধ্যে সবসময় হাসি-ঠাট্টা-আড্ডা চলতে থাকে। অনেক সময় আমরা অনুশীলনে আসিও একসঙ্গে। মাঠ ও মাঠের বাইরে একসঙ্গে সময় কাটানোর জন্য আমাদের বোঝাপড়া আরও গভীর হয়েছে। দলের সব খেলোয়াড়ের সঙ্গেই আমার সম্পর্ক ভালো। একসঙ্গে সময় কাটালে সাজঘরে একটা ফিলগুড ব্যাপার থাকে।

৫) কঠিন সময়ে পরিবার কতটা সামলেছে আপনাকে?

সৌভিক: অসুস্থতার সময়টা খুব কঠিন ছিল। ওই সময়ে পরিবার আমার পাশে সব সময় থেকেছে। পরিবারকে পাশে না পেলে হয়তো এ ভাবে ফিরে আসতে পারতাম না। আমাকে সমানে সাহস দেওয়ার জন্য আমি আমার পরিবার ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছে কৃতজ্ঞ।

৬) খাওয়া দাওয়া বা ডায়েট চার্টে কি ভাবে বদল এনেছেন?

সৌভিক: গত মরসুমের শেষ থেকেই ডায়েট নিয়ে সচেতন হতে শুরু করেছি। আমার স্ত্রী এই ব্যাপারে অনেকটা সাহায্য করেছে। চলতি মরসুমের শুরুতেই নামী ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিয়ে খাদ্যাভ্যাস পাল্টেছি। এটা আমায় দ্রুত রিকভার করতে প্রচুর সাহায্য করেছে।

৭) দীর্ঘ ফুটবল কেরিয়ারে অনেক কোচের অধীনেই খেলেছন। কুয়াদ্রাতের এক্স ফ্যাক্টর কী?

সৌভিক: কুয়াদ্রাত আমাদের দলের প্রধান চালিকাশক্তি। মাঠ হোক বা মাঠের বাইরে, উনি সবসময় দলকে আগলে রাখেন এবং উজ্জীবিত করেন। এমন একজন কোচ থাকলে ভাবনা, প্রকাশ, দর্শন সবই পাল্টে যায়।

৮) কুয়াদ্রাতের কোন মন্ত্রে এত উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে টিম ইস্টবেঙ্গল?

সৌভিক: এটা মানতে দ্বিধা নেই, কুয়াদ্রাত দ্রুত ইস্টবেঙ্গলের ফুটবল সংস্কৃতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছেন। দলে বেশ সুন্দর একটি বাঁধন তৈরি করেছেন। যত দিন যাবে, তত বেশি মজবুত হবে এই বাঁধন। কোন ম্যাচে আমাদের কী কৌশল থাকবে, কার কী দায়িত্ব থাকবে, সেগুলো উনি বেশ ঠান্ডা মাথায় সময় নিয়ে আমাদের বোঝান।

৯) সামনে সুপার কাপ। অধিকাংশ দলেরই বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট ফুটবলার জাতীয় দলে চলে যাবে। ইস্টবেঙ্গলের কাছে কি খেতাব জয়ের সুবর্ণ সুযোগ?

সৌভিক: সুপার কাপ নিঃসন্দেহে আমাদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট। সাফল্যের তাগিদ নিয়েই মাঠে নামব। আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ এগোতে চাই।

১০) আইএসএলে প্রথম ছয়ে থাকার ব্যাপারে কতটা আত্মবিশ্বাসী?

সৌভিক: আইএসএল-এ প্রথম ছয়ে থাকার জন্য আমরা সেরাটা দিয়ে ভালো খেলার চেষ্টা করছি। আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ এগোতে চাই। ইমামি আমাদের এই পরিকল্পনায় প্রচুর সাহায্য করছে। ভালো প্র্যাক্টিস মাঠ থেকে শুরু করে দলের সুযোগ-সুবিধা – কোনও কিছুতেই ইমামি খামতি রাখছে না। বাইরে খেলতে গেলে ভালো হোটেলে রাখা থেকে শুরু করে যে কোনও প্রয়োজনে বা সমস্যায় ইমামি সবসময় আমাদের পাশে থাকে। ইমামি যে ভাবে দলটিকে ভালোবেসে সমানে কাজ করে চলেছে, সে জন্য আমরা আন্তরিক ভাবে ইমামি কর্মকর্তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।