Mohammedan SC: ৪০ বছর পর লিগের রং সাদা-কালো
Calcutta Football League: এ বারের কলকাতা লিগে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল খেলেনি। শুরু থেকেই তাই মহমেডানের ওপর প্রত্যশা ছিল অনেক বেশি। আন্দ্রে চের্নিসভের টিম প্রথম ম্যাচ থেকেই দাপিয়ে খেলেছে। রেলওয়ে এফসির বিরুদ্ধে লিগের ফাইনাল ম্যাচেও তাই মার্কোস জোসেফ, নিকোলা স্তানোভিচরাই ছিলেন বাজি।
সঙ্ঘমিত্রা চক্রবর্তী
হয় লাল হলুদ, না হলে সবুজ মেরুন। গত কয়েক দশকে লিগের রং এর মধ্যেই খুঁজতে হত। বাংলার ফুটবল দাপিয়ে বেড়িয়েছে ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) না হলে মোহনবাগান (Mohun Bagan)। কলকাতা লিগ (Calcutta Football League) জয়ের অবিস্মরণীয় রেকর্ড বানিয়ে রেখেছে এই দুই প্রধান। ইস্ট-মোহনের দাপটেই ‘তৃতীয় প্রধান’ শব্দটা কার্যত হারিয়েই গিয়েছিল। ৪০ বছর পর সেই সাদা কালো জার্সি অন্ধকার থেকে আবার আলোয়। ১৯৮০-৮১ মরসুমে শেষ বার কলকাতা লিগ জিতেছিল মহমেডান (Mohammedan SC)। ৪০ বছরের খরা কাটাল তারা। ফের লিগের রং সাদা-কালো।
?? ??? ??? ??? ????????? after 40 long years!
The ????? begins! Congratulations to all the ????? ????????!#JaanJaanMohammedan ⚫⚪#MDSRFC ⚔️ #CFL ? #CFLFinal ?#Champions ?#IndianFootball ⚽#MDS ? #BlackPanthers ?#MatchDay ? pic.twitter.com/58iXENCHCV
— Mohammedan SC (@MohammedanSC) November 18, 2021
৪০ বছর আগের ইতিহাস অত্যন্ত উজ্জ্বল। সে বার সুরজিৎ সেনগুপ্ত, প্রশান্ত বন্দোপাধ্যায়, মইদুল ইসলাম, অলোক মুখোপাধ্যায়, মানস ভট্টাচার্য, প্রসূন বন্দোপাধ্যায়দের হাত ধরে কলকাতা লিগে বিপ্লব এনেছিল মহমেডান। ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানকে চমকে দিয়ে লিগজয়ের সেই ইতিহাস চিরস্মরণীয় করে রেখেছে মহমেডান। গত ৪০ বছর সাফল্য খুঁজতে হলে মহমেডান বার বার ফিরেছে সেই ১৯৮১ সালে। সব ব্যর্থতা মুছে দিয়ে আবার মুঠোয় কলকাতা লিগ। রেলওয়ে এফসির (Railway FC) বিরুদ্ধে লিগের ফাইনাল ম্যাচে ১-০ জিতে চ্যাম্পিয়ন হল সাদা-কালো শিবির। ম্যাচের শুরুতেই গোল করেন মার্কোস জোসেফ (Marcus Joseph)।
এই দিনের অপেক্ষায় ছিলেন অগণিত ভক্তরা। ২০১৩ সালে ডুরান্ড কাপ জেতা ছাড়া আর বলার মতো সাফল্য নেই। তবুও সমর্থকরা ম্যাচের পর ম্যাচ গ্যালারিতে ভিড় করেছেন যদি কখনও সাফল্যের স্বাদ পান। বৃহস্পতিবার যুবভারতীর গ্যালারি সাদা-কালো জার্সিতেই উপচে পড়েছিল। সকাল থেকেই স্টেডিয়ামের বাইরে ভিড় জমিয়েছিলেন তাঁরা। পড়ন্ত দুপুরে শেষ বাঁশি বাজতেই উল্লাস শুরু হয়ে যায় গ্যালারিতে। ৪০ বছর লিগ না জেতার আক্ষেপ যেন মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন তাঁরা।
এর আগে ১১ বার কলকাতা লিগ জিতেছে মহমেডান। তিনের দশকে বাংলা ফুটবল দাপানো শুরু করেছিল সাদা-কালো শিবির। ১৯৩৪-৩৭ টানা চার বার লিগ জয়ের দুরন্ত রেকর্ড ছিল তাদের। চারের দশকেও তিন বার কলকাতা লিগ জেতে। তারপরই যেন হারিয়ে যাওয়া শুরু মহমেডানের। কখনও বিক্ষিপ্তভাবে আলোয় ফেরা, আবার কখনও অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়া, মহমেডান আর কখনও ধারাবাহিক হয়ে উঠতে পারেনি। ইস্ট-মোহনের চাপে ক্রমশ হারিয়ে গিয়েছে তারা।
এ বারের কলকাতা লিগে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল খেলেনি। শুরু থেকেই তাই মহমেডানের ওপর প্রত্যশা ছিল অনেক বেশি। আন্দ্রে চের্নিসভের টিম প্রথম ম্যাচ থেকেই দাপিয়ে খেলেছে। রেলওয়ে এফসির বিরুদ্ধে লিগের ফাইনাল ম্যাচেও তাই মার্কোস জোসেফ, নিকোলা স্তানোভিচরাই ছিলেন বাজি। ৩ মিনিটের মাথায় টিমকে ১-০ এগিয়ে দেন জোসেফ। শেষ পর্যন্ত ওই গোলই কলকাতা লিগ জয় মহমেডানের।
সাফল্য অনেকটা বহতা নদীর মতো। কখনও ওই নদীতে নোঙর ফেলে ইস্টবেঙ্গল, কখনও মোহনবাগান। এ বার সেই নদী মহমেডানের দখলে!