Boxing : প্রাণ বাঁচাতে বক্সিং গ্লাভস নিয়েই ১৫ কিমি দৌড় ১২ বছরের বালকের!
Manipur : কুকি আর মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরেই লড়াই চলছে। মণিপুরে এ নিয়ে বিক্ষোভের রেশ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। দুই সম্প্রদায়ের এই লড়াইয়ের জেরে ঘর ছেড়ে ১৫ কিমি দৌড়ে আশ্রয় খুঁজল ১২ বছরের এক বালক।
ইম্ফল: জাতিগত সংঘর্ষের খেসারত দিতে হল ১২ বছরের এক প্রতিভাবান বক্সারকে (Boxer)। কুকি আর মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরেই লড়াই চলছে। মণিপুরে (Manipur) এ নিয়ে বিক্ষোভের রেশ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। বিভিন্ন জেলায় জেলায় জ্বলছে আগুন। পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় মণিপুরে বিপুল সেনা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দফায় দফায় সেনা, আধা সেনাকে বিমানে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পাহাড়ি রাজ্যে। উত্তর-পূর্বের অন্য রাজ্যগুলিতেও নিরাপত্তা আঁটোসাটো করা হয়েছে। মণিপুরের লাগোয়া রাজ্য এবং মায়ানমার সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। হামলাকারীদের রুখতেও কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে। দুই সম্প্রদায়ের এই লড়াইয়ের জেরে ঘর ছেড়ে ১৫ কিমি দৌড়ে আশ্রয় খুঁজল ১২ বছরের এক বালক। বিস্তারিত TV9Bangla Sports এর এই প্রতিবেদনে।
ইম্ফলের সাই হোস্টেলে ১২ বছরের প্রতিভাবান সেই বক্সারের সন্ধান মেলে। জাতিগত সংঘর্ষ মা আর বাবাকে আলাদা করে দিয়েছে। বক্সার মাঙ্গমিনঙ্গামের মা কুকি, বাবা মেইতেই সম্প্রদায়ের। ইম্ফলের কাছেই এক গ্রামে লুকিয়ে ছিলেন মাঙ্গমিনঙ্গামের মা আর বাবা। পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোরালো হয়ে ওঠার পর সেই গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে আসে ১২ বছরের উদীয়মান বক্সার।
পালিয়ে আসার মুহূর্তে সেই ছোট্ট বক্সারের হাতে ছিল শুধু বক্সিং গ্লাভস। ১৫ কিমির দীর্ঘ দুর্গম পথ পেরিয়ে অসম রাইফেলের ক্যাম্পে যোগ দেয় ১২ বছরের প্রতিভাবান বক্সার। সপ্তম শ্রেণির মাঙ্গমিনঙ্গাম আতঙ্কিত গলায় বলে ওঠে, ‘জানি না কতটা রাস্তা আমি দৌড়েছি। দিনের আলো ফুটতেই সুরক্ষার কারণে শুধু পালিয়ে বেড়িয়েছি।’
বাবা শ্যাম লায়রাক্লাকথাম একজন কৃষক। সেনা কর্মীরা পরিবারের কাছে গত মঙ্গলবার মাঙ্গমিনঙ্গামকে ফিরিয়ে দেয়। ছেলেকে কাছে পেয়ে আনন্দে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি তাঁরা। দুই সম্প্রদায়ের এই লড়াইয়ে এখনও পর্যন্ত ৬০ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ৩৫ হাজার মানুষ ঘর ছেড়েছেন। সেনাবাহিনীর তরফ থেকে একটি ভিডিও টুইট করা হয়। সেখানে দেখা যায় মাঙ্গমিনঙ্গাম অসম রাইফেলের ক্যাম্পে ট্রেনিং করছে।
এরই মধ্যে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে মণিপুরের দুই দল ছাত্রের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। জানা গিয়েছে কুকি ও মেইতেই সম্প্রদায়ের ছাত্ররা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তবে তা বেশি দূর গড়ায়নি। দু’পক্ষেরই বক্তব্য, থানা অভিযোগ নেয়নি। পুলিশের বক্তব্য থানাতে দু পক্ষকে বসিয়ে মিটমাট করে দেওয়ার চেষ্টা হয়। কারও গুরুতর আঘাত লাগেনি। ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। পুলিশ দু দল ছাত্রকেই মিলে মিশে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। এদিকে, মণিপুরে নতুন করে বড় ধরনের সংঘর্ষের খবর না থাকলেও প্রশাসন ঝুঁকি নিচ্ছে না। সেখানে বিপুল সংখ্যায় র্যাফ, বিএসএফ, সিআইএসএফ, এবং সিআরপির জওয়ানদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আছে অসম রাইফেলস। অসমের দুটি বিমান ঘাঁটি থেকে ছোট বিমান উড়িয়ে বিমান বাহিনীও পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে। সিআরপিএফের ডিজি কুলদীপ সিংকে রাজ্য সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টার ভার দিয়েছে দিল্লি। তাঁর হাতেই এখন রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার ভার। অন্যদিকে, রাজ্যের অতিরিক্ত ডিজি (ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ) আশুতোষ সিনহাকে অভিযান পরিচালনার ভার দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।