EXCLUSIVE TOKYO OLYMPICS: “কোভিড কমলেই কলকাতায় ” জানালেন প্যারালিম্পিকে পদকজয়ীএকমাত্র বাঙালি

মনোজ সরকার। প্রমোদের ইভেন্টেই ব্রোঞ্জ জিতেছেন তিনি। একের পর এক শুভেচ্ছা ফোনে বাঙালি মনোজের মোবাইল ফোনের ব্যাটারির চার্জ তখন নিম্নমুখী

EXCLUSIVE TOKYO OLYMPICS: কোভিড কমলেই কলকাতায় '' জানালেন প্যারালিম্পিকে পদকজয়ীএকমাত্র বাঙালি
মুখোমুখি প্যারালিম্পিকে একমাত্র পদকজয়ী বাঙালি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 04, 2021 | 11:45 PM

রক্তিম ঘোষ

টোকিওঃ আরও একবার। শনিবার দ্বিতীয়বারের জন্য প্যারালিম্পিকে ভারতের জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে উড়ল জোড়া জাতীয় পতাকা। পুরুষদের ব্যাডমিন্টনে সোনা জিতেছেন প্রমোদ ভগত। আর দ্বিতীয় পতাকা উত্তোলন যাঁর জন্য ঘটেছে তিনি একজন বাঙালি। মনোজ সরকার। প্রমোদের ইভেন্টেই ব্রোঞ্জ জিতেছেন তিনি। একের পর এক শুভেচ্ছা ফোনে বাঙালি মনোজের মোবাইল ফোনের ব্যাটারির চার্জ তখন নিম্নমুখী। টোকিওর স্থানীয় রাত সাড়ে ১১টায় ধরা গেল প্যারালিম্পিকে কীর্তি গড়া একমাত্র বাঙালিকে।

মনোজ সরকার প্রবাসী বাঙালি। বহুদিন ধরেই উত্তরাখান্ডে। জন্মও তাঁর ওখানেই। তবে বাংলার সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে আত্মীয় স্বজনের সূত্রে। কলকাতাতেও এসেছেন বহুবার। তবে দীর্ঘদিন উত্তরাখান্ডে থাকায় গলায় বাংলা কথা অত ঝরঝরে নয়। তবে গেমস ভিলেজে নিজের ঘরে প্রায় শেষ রাতে ক্লান্ত শরীরে কি বললেন মনোজ, তা তুলে ধরলাম-

প্রশ্নঃ মনোজ প্রথম প্রতিক্রিয়া?

মনোজ সরকারঃ কি আর বলব। দারুণ লাগছে। জাতীয় পতাকা প্যারালিম্পিকের মঞ্চে ওড়াতে পেরেছি । দারুণ লাগছিল।

প্রশ্নঃ তোমাদের কিছুক্ষণ আগেই একই কাণ্ড ঘটেছিল শ্যুটিংয়ে। একই ইভেন্টে জোড়া পদক। সোনা ও রুপো। জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে জোড়া তেরঙা উড়েছিল টোকিওতে। দিনের শেষে সেই একই কীর্তি ঘটালেন আপনি ও প্রমোদ ভাগত। কেমন ছিল সেই মুহূর্তটা?

মনোজ সরকারঃ মুহূর্তটা বোঝানো কঠিন। জাতীয় পতাকা উড়ছে। সঙ্গে জাতীয় সঙ্গীত। চোখটা অজান্তেই ভিজে গিয়েছিল বিশ্বাস করুন। এই মুহূর্ত তো আঅর রোজ আসে না।

প্রশ্নঃ আপনি বাঙালি। তবুও ঝরঝরে বাংলা আপনার গলায় শোনা যাচ্ছেনা তো?

মনোজ সরকারঃ আসলে আমি তো উত্তরাখান্ডের বাঙালি। বাবা-মায়ের বিয়েই হয়ে এখানে। আমি এখানেই বড় হয়েছি। তবে বাংলার সঙ্গে আমার আত্মিক টান। আমার জেঠু পুলিশে চাকরি করেন। থাকেন বারাসতে। আমরা ছুটিতে প্রায় ওখানেই যাই। কলকাতায় অনেকবার গিয়েছি। আমার কিছু আত্মীয়স্বজন অসমেও রয়েছেন।ফলে ওদিকে আমি প্রায়ই যাই।

প্রশ্নঃ আপনার পদক জয়ের পর উত্তরাখান্ডে কি চলছে?

মনোজ সরকারঃ (হাসি) আর বলবেন না। ওখানে তো উৎসব শুরু করে দিয়েছে আমার মা, বাবা। পরিবার আর পাড়ায় একেবারে হুল্লোড় চলছে। মা শুনলাম পুরো পাড়াকে মিষ্টি খাইয়েছে।

প্রশ্নঃ মনোজ সরকার প্যারালিম্পিকে কিভাবে?

মনোজ সরকারঃ তখন আমার ১২ কি ১৩ মাস বয়স। হঠাৎ জ্বর হয়েছিল। খুব অসুস্থ হয়েছিলাম। তারপর শারীরিক সমস্যা শুরু হল। একসময়ে পোলিওর কারনে আমার পায়ে অসাড়তা তৈরি হল। ধীরে ধীরে যখন বড় হলাম, তখন মনে করতে লাগলাম খেলাধূলায় মনোনিবেশ করতে হবে। স্কুল থেকেই শুরু।

প্রশ্নঃ ব্যাডমিন্টনে কিভাবে?

মনোজ সরকারঃ আমি ২০১০-১১ সালের আগেও চিন্তা করিনি ব্যাডমিন্টন খেলব। ২০১১ সাল থেকে শুরু আমার ব্যাডমিন্টন খেলা। প্রথমে স্কুল স্তর, রাজ্যস্তর থেকে জাতীয় স্তর হয়ে আন্তর্জাতিক স্তরেও সাফল্য পেয়েছি। মাত্র ২ বছর ব্যাডমিন্টন শুরু করার পর ২০১৩ ও ২০১৫ সালে প্যারা ব্যাডমিন্টনের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতি। ব্যস আর পেছনে ফিরে তাকায়নি। ২০১৯ সালেও সোনা জিতেছি। তবে আজকের পদক একেবারে অন্য। সেরা টুর্নামেন্ট।

প্রশ্নঃ  ব্যাডমিন্টনে তো এখন একের পর এক তারকা। পিভি সিন্ধু, সাইনা নেহওয়াল। পিভি সিন্ধুর অলিম্পিকে জোড়া পদক কি তোমাকে মোটিভেট করেছে?

মনোজ সরকারঃ ভীষণভাবে। ওরকম একজন খেলোয়াড়কে দেখে যে কেউ মোটিভেট হবেন। সিন্ধুর সাফল্যকে সম্মান দিয়েই বলছি আমার পছন্দ সাইনা নেহওয়াল। আমি অনেকদিন ধরেই ওনার খেলার ভক্ত।

প্রশ্নঃ পদক নিয়ে দেশে ফেরার পর কলকাতায় আসার প্ল্যান রয়েছে নাকি?

মনোজ সরকারঃ আরে আমাদের তো এবছরের শুরুতেই যাওয়ার কথা ছিল কলকাতায়। আমার আর আমার স্ত্রীর। কিন্তু করোনার জন্য সব পরিকল্পনা ভেস্তে গিয়েছে। প্ল্যান ছিল বারাসত জেঠ্ুর বাড়িতে থাকব। তারপর আমাদের আরেক আত্মীয় থাকেন অসমে। সেখানেও যাব ভেবেছিলাম। সব করোনার জন্য ভেস্তে গেল।আশা করি দ্রুত কলকাতায় যেতে পারব।