BGMI vs Free Fire: ফ্রি ফায়ার ব্যান হলেও পাবজি মোবাইলের ক্লোন বিজিএমআই ভারতে নিষিদ্ধ নয় কেন?

ব্যাটলগ্রাউন্ডস মোবাইল ইন্ডিয়া বা বিজিএমআই-ও তো পাবজি মোবাইলের ক্লোন বা রিব্র্যান্ডেড ভার্সন। কিন্তু গারিনা ফ্রি ফায়ার ব্যান হলেও ব্যাটলগ্রাউন্ডস মোবাইল ইন্ডিয়া কেন ভারতে নিষিদ্ধ হল না? সেই কারণই জেনে নেওয়া যাক।

BGMI vs Free Fire: ফ্রি ফায়ার ব্যান হলেও পাবজি মোবাইলের ক্লোন বিজিএমআই ভারতে নিষিদ্ধ নয় কেন?
প্রতীকী ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 17, 2022 | 6:47 PM

চলতি সপ্তাহের শুরুতেই ফের এক ধাপে দেশে মোট ৫৪টি চিনা অ্যাপ ব্যান (Chinese App Ban) করেছে ভারত সরকার। সেই তালিকায় রয়েছে জনপ্রিয় গেমিং অ্যাপ গারিনা ফ্রি ফায়ার (Garena Free Fire)। দেশের নিরাপত্তার জন্য অ্যাপগুলি যথেষ্ট ঝুঁকির কারণ দর্শিয়ে সেগুলিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। ২০২০ সাল থেকে শুরু হয়েছিল এই চিনা অ্যাপ ব্যানের প্রক্রিয়া। এর আগে পাবজি, টিকটক-সহ আরও একাধিক গেম ও অ্যাপ ব্যান করা হয়েছিল। যদিও পরবর্তীতে পাবজি ভারতে ফিরে আসে একটি দেশি ভার্সন নিয়ে। কিন্তু সেই ব্যাটলগ্রাউন্ডস মোবাইল ইন্ডিয়া (Battlegrounds Mobile India) বা বিজিএমআই-ও তো পাবজি মোবাইলের ক্লোন বা রিব্র্যান্ডেড ভার্সন। কিন্তু গারিনা ফ্রি ফায়ার ব্যান হলেও ব্যাটলগ্রাউন্ডস মোবাইল ইন্ডিয়া কেন ভারতে নিষিদ্ধ হল না? সেই কারণই জেনে নেওয়া যাক।

বিজিএমআই ভারতে ব্যান করা হল না কেন?

১) টেনসেন্ট-এর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন

পাবজি মোবাইল মূলত দক্ষিণ কোরিয়ার গেম। কিন্তু ভারতে সেই গেমের ডিস্ট্রিবিউশন সংক্রান্ত দায়িত্বভার ছিল চিনের টেনসেন্ট গেমস-এর হাতে। আর সেই কারণেই ভারতে পাবজি মোবাইল ব্যান করা হয়। তারপরই চিনের টেনসেন্ট গেমসের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে পাবজি মোবাইলের ডেভেলপার সংস্থা ক্রাফ্টন। তাতেই ভারতে ফিরে আসার একটা সুযোগ তৈরি হয়ে যায় পাবজি মোবাইলের কাছে। যদিও তার জন্য আরও একাধিক শর্তাবলী প্রযোজ্য ছিল। পরে নাম পরিবর্তন ও গেম প্লে সংক্রান্ত আরও একাধিক রদবদল করে ব্যাটলগ্রাউন্ডস মোবাইল ইন্ডিয়া নামে ভারতে ফিরে আসে পাবজি মোবাইল। প্রসঙ্গত, ক্রাফ্টনে ১৫.৩৫ শতাংশ স্টেক ছিল চিনের টেনসেন্ট গেমসের।

২) ইউজার ডেটা স্থানীয় ভাবে স্টোর করার ব্যবস্থাপনা

টেনসেন্টের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পাশাপাশিই পাবজি ভারতে ব্যান হওয়ার পিছনে আরও একটি মূল কারণ ছিল, গেমারদের যাবতীয় তথ্য চিনের সার্ভারে সেভ করা। তাই ভারতে ফিরতে গেলে পাবজি মোবাইলের ডেভেলপার সংস্থাকে ভারত সরকারের কাছে কথা দিতে হয়েছিল যে, গেমারদের ডেটা স্থানীয় ভাবেই স্টোর করা হবে। আর তাতে আখেরে দেশের নিরাপত্তা এবং গ্রাহকের সুরক্ষার বিষয়টিও নিশ্চিত হবে। এই শর্ত মেনে নেওয়ার ফলে পাবজি মোবাইলের ব্যাটলগ্রাউন্ডস মোবাইল ইন্ডিয়া নামে ভারতে কামব্যাক করতে সুবিধা হয়।

৩) কসমেটিক পরিবর্তন

পাবজি মোবাইলের শুধু নাম পরিবর্তনই নয়। গেমে একাধিক কসমেটিক পরিবর্তনও করেছিল ক্রাফ্টন। আরও পরিণত প্যারেন্টাল কন্ট্রোল,লাল থেকে সবুজে রক্তের রঙের পরিবর্তন ও টাইম লিমিট। ১৮ বছরের কম বয়সী যারা বিজিএমআই খেলে, তাদের উপরে নজর রাখতে পারেন অভিভাবকরা। পাশাপাশি ১৮ বছরের কম বয়সীরা যারা গেমটি খেলবে ভাবছে, তাদের অভিভাবকের অনুমতি নিতে হবে। অভিভাবকের মোবাইল নম্বর দিয়ে ভেরিফাই করার সিস্টেম রয়েছে বিজিএমআই গেমে। শুধু তাই নয দিনে ৩ ঘণ্টার বেশি ব্যাটলগ্রাউন্ডস মোবাইল ইন্ডিয়া খেলতে পারে না ১৮ অনূর্ধ্বরা এবং ৭০০০ টাকার বেশি ইন-অ্যাপ পারচেজ়িংয়ের সুবিধাও নেই তাদের কাছে।

সিদ্ধান্ত

পাবজি মোবাইলের ক্লোন বা রিব্র্যান্ডেড ভার্সন হয়েও মূলত এই সব কারণেই ব্যাটলগ্রাউন্ডস মোবাইল ইন্ডিয়া ব্যান করা হয়নি দেশে। কারণগুলি দেশে কোম্পানির এবং গেমের অস্তিত্বের জন্য শক্তিশালী এবং গুরুত্বপূর্ণও বটে। কিন্তু ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তার উদ্বেগের বিষয়ে সরকার সদা সজাগ থাকার কারণে, দেশে একটি বৃহত্তর ব্যবহারকারী বেস উপভোগ করতে এবং অন্য কোনও নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন না হতে ক্রাফ্টনকে সমস্ত প্রবিধান মেনে চলতে হবে।

আরও পড়ুন: ভুল ধরে অ্যান্ড্রয়েড সুরক্ষিত করে গুগল-এর কাছ থেকে ৬৫ কোটি টাকা পুরস্কার জিতলেন ভারতীয় এই টেকি

আরও পড়ুন: ভারতে গারিনা ফ্রি ফায়ার এখন অতীত, সেরা ৫ বিকল্পের সুলুকসন্ধান, নাম ভিন্ন হলেও অভিজ্ঞতা হবে এক!

আরও পড়ুন: চিনা গেম না হয়েও ভারতে ফ্রি ফায়ার কেন নিষিদ্ধ? কেনই বা গুগল ও অ্যাপল তাদের অ্যাপ স্টোর থেকে সরিয়ে নিল?