মঙ্গলগ্রহের বুকে উড়ছে নাসার মার্স হেলিকপ্টার Ingenuity, থ্রি-ডি ভিডিয়ো দেখে মুগ্ধ নেটিজ়েনরা
পৃথিবীর বাইরে এই প্রথম অন্য কোনও গ্রহে সফল ভাবে উড়েছে হেলিকপ্টার। মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠদেশে একাধিকবার সফল ভাবে উড়েছে মার্স হেলিকপ্টার Ingenuity।
মঙ্গলগ্রহের বুকে হেলিকপ্টার পাঠিয়েছে মার্কিন স্পেস এজেন্সি নাসা। ইতিমধ্যেই লালগ্রহের পৃষ্ঠদেশে মার্স হেলিকপ্টার Ingenuity-র উড়ানের বেশ কিছু ছবি, ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। তবে কিছুদিন আগে মঙ্গলের বুকে Ingenuity-র উড়ানের থ্রিডি ভিডিয়োও শেয়ার করা হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
ইউটিউবের ওই ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, উড়ান শুরুর পর উপরের দিকে উঠতে শুরু করেছিল Ingenuity হেলিকপ্টার। ইউজাররা দেখতে পাবেন স্ক্রিনের বাঁদিক থেকে ডানদিকে উড়ে আবার উড়ান শুরুর জায়গাতেই অবতরণ করবে মার্স হেলিকপ্টার। নাসার ইঞ্জিনিয়াররা (যাঁরা এই হেলিকপ্টার তৈরি করেছেন) বলেছেন, থ্রিডি গ্লাস পরে এই ভিডিয়ো দেখলে মনে হবে যেন সশরীরে মঙ্গলগ্রহেই উপস্থিত রয়েছেন। কিংবা দাঁড়িয়ে রয়েছেন রোভার পারসিভের্যান্সের পাশে। সেখান থেকে স্পষ্ট ভাবে দেখতে পাচ্ছেন Ingenuity-র উড়ান।
পৃথিবীর বাইরে এই প্রথম অন্য কোনও গ্রহে সফল ভাবে উড়েছে হেলিকপ্টার। মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠদেশে একাধিকবার সফল ভাবে উড়েছে মার্স হেলিকপ্টার Ingenuity। গত ১৯ এপ্রিল প্রথমবার উড়েছিল এই হেলিকপ্টার। মঙ্গল গ্রহের অপরিচিত আবহাওয়া এবং অত্যন্ত ফিনফিনে বায়ুমণ্ডলে এই হেলিকপ্টারের ওড়া মোটেই সহজ ছিল না।
শুধু তাই নয়, লাল গ্রহের বুকে দিনের বেলায় চরম উষ্ণ এবং রাতের বেলায় তীব্র শীতল আবহাওয়ায় টিকে থাকাও একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল Ingenuity- র কাছে। আর শুধু হেলিকপ্টার ঠিক থাকলেই তো হবে না, সঠিক ভাবে তার সমস্ত যন্ত্রাংশও কাজ করতে হবে। কারণ লাল গ্রহের বুক থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে ফিরে আসবে এই কপ্টার। সেইসব তথ্য গবেষণা করে তবেই বিজ্ঞানীরা মঙ্গল গ্রহ প্রসঙ্গে বিস্ময়কর কোনও তথ্য দিতে পারবেন। মূলত প্রাণ এবং জলের সন্ধানেই মঙ্গলগ্রহে গিয়েছে এই রোভার এবং হেলিকপ্টার।
ইতিমধ্যেই মঙ্গলের বুকে নাসার রোভার পারসিভের্যান্স একটা অসাধ্য সাধন করে ফেলেছে। মঙ্গলগ্রহের অত্যন্ত পাতলা বায়ুমণ্ডলীয় স্তর থেকে অক্সিজেন বের করে এনেছে এই রোভার। মার্কিন স্পেস এজেন্সি জানিয়েছে, লাল গ্রহের বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড সংগ্রহ করে, তাকে শ্বাসযোগ্য অক্সিজেনে পরিণত করেছে পারসিভের্যান্স। এর আগে এমন অসাধ্য সাধন কেউই করতে পারেনি। তাই অভাবনীয় এই সাফল্যের পাশাপাশি প্রথম এমন কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে ফেলার খেতাবও জুড়েছে নাসার ‘মার্স রোভার’- এর মাথায়।
আরও পড়ুন- ২০২১ সালের প্রথম এবং শেষ ‘ব্লাড মুন’ দেখা যাবে আগামী ২৬ মে, ভারতে কি দেখা যাবে এই বিশেষ চাঁদ?
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি লাল গ্রহের মাটি ছুঁয়েছিল রোভার। প্রায় সাতমাস সফর করে মঙ্গলগ্রহে পৌঁছেছে এই ছয় চাকার যান। গত ২০ এপ্রিল মঙ্গলের বুকে ৬০তম দিন ছিল রোভারের। আর সেই দিনই এই অসাধ্য সাধন করেছে পারসিভের্যান্স। রোভারের মধ্যে রয়েছে একটি যন্ত্রাংশ। আকারে ছোট হলেও কর্মক্ষমতায় বাজিমাত করায় দক্ষ। এর নাম MOXIE বা Mars Oxygen In-Situ Resource Utilization Experiment। এই MOXIE- র সাহায্যেই মঙ্গলগ্রহের ফিনফিনে বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাই অক্সাইড থেকে অক্সিজেন ছেঁকে বের করা হয়েছে। ৫ গ্রাম অক্সিজেন উৎপাদন করেছে MOXIE। যার সাহায্যে ১০ মিনিট শ্বাস নিতে পারবেন একজন নভশ্চর।