James Webb Space Telescope: ১৮টি ষড়ভুজাকার আয়না জুড়ে একটি ‘মিরর’! মাইলস্টোন গড়ে প্রথম দূরবর্তী নক্ষত্রের ছবি প্রকাশ করল নাসার জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ
James Webb Space Telescope: এই ১৮টি ষড়ভুজাকার আয়নাকে (18 hexagonal mirror) একত্রিত করে একটি আয়নার রূপ দেওয়া মোটেই সহজ কাজ ছিল না। দীর্ঘ সময় ধরে অনেক ধৈর্য নিয়ে এই কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
নাসার (NASA) জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (James Webb Space Telescope)। লঞ্চের আগে থেকেই শোরগোল পড়ে গিয়েছিল এই অতিকায় স্পেস টেলিস্কোপ নিয়ে (Space Telescope)। অবশেষে এই মহাকাশ নিরীক্ষণ যন্ত্র জানান দিল যে, কেন তাকে নিয়ে এত হইচই হয়েছে। সম্প্রতি একটি একক নক্ষত্রের অসাধারণ একটি ছবি প্রকাশ্যে এনেছে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই নক্ষত্র পৃথিবী থেকে এতটাই দূরে রয়েছে যা আমাদের ধারণার অতীত। মহাবিশ্বের যে প্রান্তে এখনও মানুষ পৌঁছোতে পারেননি, সেই অঞ্চলে লুকিয়ে থাকা রহস্যের উন্মোচন করেছে এই স্পেস টেলিস্কোপ। নিজের যাত্রাপথে অনেক বাধা অতিক্রিম করতে হয়েছে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপকে। কিন্তু সফল হয়েছে মার্কিন স্পেস এজেন্সি নাসার এই স্পেস টেলিস্কোপ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, যে নক্ষত্রের ছবি প্রকাশ্যে এসেছে তার আশপাশে রয়েছে অন্তত এক হাজার অজানা ছায়াপথ।
প্রাচীন ঐতিহ্যশালী স্পেস টেলিস্কোপগুলিতে একটিই আয়না বা মিরর থাকতে যা দূরবর্তী নক্ষত্রগুলি থেকে আলো সংগ্রহ করত। কিন্তু জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপে ১৮টি ষড়ভুজাকার আয়না বা মিরর রয়েছে। নাসার ইঞ্জিনিয়াররা জানিয়েছেন যে এই ১৮টি আয়না মিলিত হয়েছে এমন ভাবে সারিবদ্ধ হয়েছে যে মনে হচ্ছে একটি সুবিশাল আয়না। এবার এই আয়নার সাহায্যেই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের অনেক দূরবর্তে স্থানে থাকা নক্ষত্রের ছবিও প্রকাশ করা যাবে। তবে এই ১৮টি ষড়ভুজাকার আয়নাকে একত্রিত করে একটি আয়নার রূপ দেওয়া মোটেই সহজ কাজ ছিল না। দীর্ঘ সময় ধরে অনেক ধৈর্য নিয়ে এই কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নাসা জানিয়েছেন তাদের জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ টিম সফলভাবে সমস্ত আয়নাগুলিকে সারিবদ্ধ করে একটি আয়নায় পরিণত করতে পেরেছে। বিজ্ঞানীরা এই পদ্ধতির নাম দিয়েছেন ‘ফাইন ফেজিং’।
গত ১১ মার্চ নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ তার ১৮টি ষড়ভুজাকার আয়নাকে সারিবদ্ধ করে একটি আয়নার রূপ দেওয়ার কাজটি সম্পূর্ণ করেছিল। এর পরেই পৃথিবী থেকে বহু দূরে থাকা ওই নক্ষত্রের ছবি প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। এই ছবির কেন্দ্রতে একটি অত্যন্ত উজ্জ্বল বিন্দু দেখা গিয়েছে। নাসা জানিয়েছে, অনেক দূরের ওই অবজেক্ট বা বস্তু থেকে সাবলীল ভাবেই আলোর সংগ্রহ করে তার প্রতিফলিত ছবি নিজের যন্ত্রাংশে দেখাতে পেরেছে এই স্পেস টেলিস্কোপ। কোনও অসুবিধাই হয়নি। নাসা তাদের বিবৃতিতে আরও জানিয়েছে যে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের সমস্ত অপটিকাল প্যারামিটার একদম সঠিকভাবে কাজ করছে। কোনও গুরুতর সমস্যা খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে এখনও আয়না সারিবদ্ধিকরণের কিছু কাজ বাকি রয়েছে। আপাতত নাসার ইঞ্জিনিয়াররা সেই কাজ শেষ করতেই ব্যস্ত রয়েছে। আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে বাকি পর্যায়গুলি সম্পন্ন করার চেষ্টায় রয়েছেন তাঁরা।
তবে প্রাথমিক সাফল্যে উচ্ছ্বসিত নাসার বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, ১৮টি আয়নাকে একত্রিত করে একটি নক্ষত্রের উপর ফোকাস করা হয়েছিল। তার ফলে যে ছবি প্রকাশ্যে এসেছে তা সমস্ত অনুমানকে ছাপিয়ে গিয়েছে। বিজ্ঞানের দুনিয়ায় সত্যিই এ এক আশ্চর্য আবিষ্কার। মহাকাশে এই প্রথম এত বড় কোনও স্পেস টেলিস্কোপ পাঠিয়েছে মানুষ। গত বছর ক্রিসমাসের সময় লঞ্চ করা হয়েছিল জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। আর এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হয়েছিল আয়না সারিবদ্ধ করার কাজ।