Rahul Gandhi: হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় কীভাবে টি-শার্ট পরে ভারত ঘুরছেন রাহুল গান্ধী? উত্তরটা বিজ্ঞানের জানা…
Why Rahul Gandhi Doesn't Feel Cold: এই ঠান্ডায় কেবল টি-শার্ট পরে কীভাবে হাঁটছেন রাহুল, চলছে জোর চর্চা। আসলে এর পিছনে রয়েছে বিজ্ঞান। এই ঘটনা আসলে বিবর্তন এবং জিনোমিক কোডের মধ্যে পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, যা একটা বিরাট সংখ্যক মানুষের ক্ষেত্রে দেখা যায়।
Rahul Gandhi News: রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’-র থেকে বড় ইভেন্ট সাম্প্রতিক ইতিহাসে কংগ্রেস দেখেনি। এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই কনকনে ঠান্ডায় জাস্ট চষে বেড়াচ্ছেন মিস্টার গান্ধী। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে টি-শার্ট পরে রাহুলের হাঁটার ছবিগুলি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ছে। কিন্তু এই ঠান্ডায় কেবল টি-শার্ট পরে কীভাবে হাঁটছেন রাহুল, এই প্রশ্নও ঘোরাফেরা করছে নেটপাড়ার লোকজনের মাথার মধ্যে। প্রচণ্ড শীতেও কি রাহুল ঠান্ডা অনুভব করেন না, চলছে জোর চর্চা।
তবে এই প্রশ্নে রাজনৈতিক মহল কিন্তু দ্বিধাবিভক্ত। একদল যেখানে বলছে, এটি গিমিক। আর একদল তো আবার রাহুল গান্ধীকে সরাসরি ‘সুপারহিউম্যান’ আখ্যা দিয়ে বসেছেন। কিন্তু, আসল বিষয়টায় কেউ আলোকপাত করছেন না। তার কারণ হল, অনেকেই হয়তো বিষয়টা জানেন না। আসলে এর পিছনে রয়েছে বিজ্ঞান। খেয়াল করে দেখবেন, কনকনে ঠান্ডাতেও অনেকে খালি গায়ে ঘুরে বেড়ান, অথবা সোয়েটার ছাড়াই দিন কাটিয়ে দেন। এক্ষেত্রেও যে বিজ্ঞান কাজ করে, রাহুল গান্ধীর ক্ষেত্রেও তার অন্যথা নয়। এই ঘটনা আসলে বিবর্তন এবং জিনোমিক কোডের মধ্যে পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, যা একটা বিরাট সংখ্যক মানুষের ক্ষেত্রে দেখা যায়।
কী জন্য হয় এমনটা
আমাদের নার্ভাস সিস্টেমে নির্দিষ্ট সংখ্যক কিছু সেল রিসেপ্টর রয়েছে, যেগুলি বাহ্যিক পরিবেশগত পরিবর্তনের সময় মস্তিষ্ককে সাড়া দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়ে থাকে। 2021 সালের একটি গবেষণা অনুযায়ী, এই রিসেপ্টরগুলির কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে কিছু মানুষের মধ্যে অসামান্য পরিবর্তন ঘটাতে পারে জেনেটিক মিউটেশন। এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে ওই সব মানুষজনের মধ্যে তাপ ও ঠান্ডার প্রতি উচ্চ সহনশীলতা তৈরি করে।
1.5 বিলিয়ন মানুষ খুব ঠান্ডা অনুভব করেন না
শুধ রাহুল গান্ধী একা নন। চরম ঠান্ডায় অত্যন্ত সাবলীল ভাবে কাজ করার ক্ষমতা বিশ্বের 8 বিলিয়ন জনসংখ্যার 1.5 বিলিয়নের মধ্যেই দেখা যায়। আমেরিকান জার্নাল অফ হিউম্যান জেনেটিক্সে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, এই ধরনের মানুষের শরীরের ফাস্ট-টুইচ স্কেলিটাল মাসল ফাইবারে a-actinin-3 নামক একটি প্রোটিন অনুপস্থিত থাকে বলেই, কনকনে ঠান্ডাতেও এরা কেবল টি-শার্ট পরেই কাটিয়ে দিতে পারেন!
স্কেলিটাল মাসল হল স্লো-টুইচ ফাইবার এবং ফাস্ট-টুইচ ফাইবারের কম্বিনেশন। একটা পেশি কতটা দ্রুত বা কতটা ধীর গতিতে মুভ করবে, তা নির্ধারণ করে এই মাসলগুলিই। স্লো-টুইচ মাসলগুলি যেখানে সহনশীলতা এবং শক্তির জন্য দায়ী, ঠিক সেখানেই ফাস্ট-টুইচ পেশিগুলি হঠাৎই শক্তির বিস্ফোরণের কারণ হিসেবেও দেখা দিতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে তা ভাল, কিছু ক্ষেত্রে তা খারাপও। ভাল মূলত ক্রীড়াবিদদের জন্য। এদিকে ফাস্ট-টুইচ মাসলগুলি অক্সিজেন ছাড়াই বায়বীয়ভাবে শক্তি তৈরি করতে পারে।
কারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের ডিপার্টমেন্ট অফ ফিজ়িওলজি অ্যান্ড ফার্মাকোলজি-র গবেষকরা বলছেন, “স্কেলিটাল মাসলের থার্মোজেনেসিসের পরিবর্তনের কারণে ঠান্ডা জলে গা ভাসানোর সময় A-actinin-3-এর অভাব কিছু মানুষের শরীরের মূল তাপমাত্রা বজায় রাখার ক্ষেত্রে অনেকটা বেড়ে যায়।”
এটি কি কোনও দিক থেকে ক্ষতিকারক
ACTN-3 আসলে গতির জিন হিসেবে পরিচিত। এটি প্রোটিন আলফা অ্যাক্টিনিন-3 এনকোড করে, যা বিস্ফোরক এবং শক্তিশালী পেশি সংকোচনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক্সারসাইজ় অ্যাডাপ্টেশন, এক্সারসাইজ় রিকভারি এবং স্পোর্টিং ইনজুরির রিস্কের জন্য দায়ী। এই আলফা-অ্যাক্টিনিন-3 প্রোটিন শুধুমাত্র ফাস্ট-টুইচ মাসল ফাইবারে পাওয়া যায়। সাধারণত এই ACTN3 এর অভাব পেশির কোনও রোগের কারণ হিসেবে দেখা দেয় না। তবে পাওয়ার ও স্প্রিন্ট অ্যাক্টিভিটির ক্ষেত্রে অনেক সময় এটি ক্ষতিকারকও হতে পারে।
পৃথিবীতে আমাদের মধ্যে এই ধরনের অনন্য পরিবর্তনগুলি হঠাৎ-হঠাৎ দেখা যায় এমনটা নয়। আবার একদিনেই যে এসবের সৃষ্টি হয়েছে, এমনটাও নয়। সময়ের নিয়মে লক্ষ-লক্ষ বছরের বিবর্তনীয় প্রক্রিয়া এই ধরনের পরিবর্তনকে সহ্য করে নেওয়ার জন্য কাউকে অত্যন্ত সংবেদনশীল করে তুলেছে, কাউকে আবার সহনযোগ্যও করে তুলেছে।