মঙ্গলগ্রহ থেকে সংগ্রহ করা রক স্যাম্পেলে রয়েছে আগ্নেয় উপাদান, অনেকদিন ছিল জলের সংস্পর্শে, বলছেন বিজ্ঞানীরা
জানা গিয়েছে, মঙ্গলগ্রহের পৃষ্ঠদেশের যে পাথর থেকে দু'টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, সেই মূল পাথরের কম্পোজিশন অর্থাৎ গঠনে রয়েছে ব্যাসাল্ট শিলা। এর পাশাপাশি বিজ্ঞানীরা এও বলছেন যে সম্ভবত লাভা প্রবাহের থেকে শিলা বা পাথর তৈরি হয়েছিল।
নাসার মার্স রোভার পারসিভের্যান্স মঙ্গলগ্রহ থেকে যে পাথর সংগ্রহ করেছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে। লালগ্রহের বুক থেকে একজোড়া অর্থাৎ দুটো পাথুরে নমুনা বা রক স্যাম্পেল সংগ্রহ করেছে রোভার পারসিভের্যান্স। আর তা পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরুর পর এর মধ্যেই মঙ্গলগ্রহ সম্পর্কে বেশ কিছু নতুন তথ্য জানতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, এই রক স্যাম্পেল অনেকদিন ধরে জলের সংস্পর্শে ছিল।
উল্লেখ্য, পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনও গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কি না তা খোঁজার জন্য প্রথম সেই গ্রহে জলের সন্ধান করেন বিজ্ঞানীরা। মঙ্গলগ্রহের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। প্রাণের অস্তিত্বের খোঁজে প্রথমে জলের সন্ধান করেছেন বিজ্ঞানীরা। আর সম্প্রতি যে রক স্যাম্পেল সংগ্রহ করা হয়েছে, তা অনেকদিন জলের সংস্পর্শে ছিল একথা বলার পর থেকেই বিজ্ঞানীদের মনে এক নতুন আশার আলো উঁকি দিয়েছে। মঙ্গলগ্রহে অতীতে প্রাণের অস্তিত্ব ছিল, এই ধারণা আরও জোরালো হচ্ছে।
নাসার একটি রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে যে মার্কিন স্পেস এজেন্সির এই মিশনের একজন প্রোজেক্ট সায়েন্টিস্ট বলেছেন, লালগ্রহের পৃষ্ঠদেশ থেকে সংগ্রহ করা পাথর পরীক্ষা করে বোঝা যাচ্ছে যে মঙ্গলগ্রহে একটি বাসযোগ্য টেকসই পরিবেশ হয়তো ছিল। উল্লেখ্য, গত ৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলগ্রহ থেকে প্রথম রক স্যাম্পেল সংগ্রহ করেছিল পারসিভের্যান্স। এই পাথুরে নমুনার নাম Montdenier। এর একদিন পর ৮ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় রক স্যাম্পেল সংগ্রহ করেছিল রোভার। এর নাম Montagnac। একটিই পাথর থেকে এই দুই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, দুটো রক স্যাম্পলই ব্যাসের দিক থেকে একটি পেনসিলের তুলনায় সামান্য চওড়া। আর ৬ সেন্টিমিটার লম্বা। রোভার পারসিভের্যান্সের ভিতরে থাকা সিল করা টিউবের মধ্যে এই দুই রক স্যাম্পেল আপাতত রাখা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলগ্রহের পৃষ্ঠদেশের যে পাথর থেকে দু’টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, সেই মূল পাথরের কম্পোজিশন অর্থাৎ গঠনে রয়েছে ব্যাসাল্ট শিলা। এর পাশাপাশি বিজ্ঞানীরা এও বলছেন যে সম্ভবত লাভা প্রবাহের থেকে শিলা বা পাথর তৈরি হয়েছিল। উল্লেখ্য, কোনও পাথর বা শিলার মধ্যে ভলক্যানিক অরিজিন খুঁজে পাওয়া গেলে বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে জানতে পারেন যে এই শিলা ঠিক কোন সময়ে তৈরি হয়েছিল। এর সাহায্যে উক্ত এলাকার ভূ-গাঠনিক ইতিহাস সম্পর্কে বৈজ্ঞানিকরা একটি ধারণা করতে পারেন। জানা গিয়েছে, ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির সঙ্গে সম্মিলিত ভাবে এই দুটো মার্সিয়ান রক স্যাম্পেল পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে চায় নাসা। মঙ্গলগ্রহের রক স্যাম্পেল এখানে অর্থাৎ পৃথিবীতে এনে ল্যাবের মধ্যে খুঁটিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে চান বিজ্ঞানীরা। ২০৩০ সালের মধ্যে এই দুই পাথুরে নমুনা পৃথিবীতে আনার পরিকল্পনা রয়েছে নাসার।
আরও পড়ুন- SpaceX News: এবার মহাকাশে ইউকুলেলে বাজাবে স্পেসএক্সের চার সদস্যের ক্রু!