Watermelons In Antarctica: দু’চোখ যেদিকে যায়, শুধু বরফ আর বরফ; তারই মাঝে ফলছে একের পর এক তরমুজ
Grow Watermelons In Antarctica: রুশ বিজ্ঞানীরা সবচেয়ে দুর্গম জায়গায় তরমুজ চাষ করে সবাইকে চমকে দিয়েছেন। তা অসাধ্য সাধন বললে ভুল কিছু বলা হবে না। ভাবছেন তো? কী এমন ঘটল? বিশ্বের শীতলতম স্থান অ্যান্টার্কটিকা, যেখানে কোনও ভাবেই ফসল ফলানো সম্ভব নয়। সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করে দেখিয়েছেন তাঁরা।
বরফ আর বরফ, যত দূর চোখ যাবে শুধুই সাদা বরফের চাদরে ঢাকা। মাটির কোনও চিহ্ন টুকুও নেই। জলের কোনও অস্তিত্ব নেই। সেখানেই নাকি ফসল ফলছে। শুনেই চমকে উঠলেন তো? রুশ বিজ্ঞানীরা সবচেয়ে দুর্গম জায়গায় তরমুজ চাষ করে সবাইকে চমকে দিয়েছেন। তা অসাধ্য সাধন বললে ভুল কিছু বলা হবে না। ভাবছেন তো? কী এমন ঘটল? বিশ্বের শীতলতম স্থান অ্যান্টার্কটিকা, যেখানে কোনও ভাবেই ফসল ফলানো সম্ভব নয়। সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করে দেখিয়েছেন তাঁরা। রুশ বিজ্ঞানীদের এই কীর্তিকে অলৌকিক বলা হচ্ছে। লাইভ সায়েন্স নামক একটি সাইট থেকে জানা গিয়েছে, রাশিয়ান বিজ্ঞানীরা বহু দিন আগে থেকেই এই কল্পনা করছিলেন। অবশেষে তা বাস্তবের রূপ দিলেন। অ্যান্টার্কটিকার গড় তাপমাত্রা উপকূলে প্রায় −10 °C থেকে −60 °C সেলসিয়াস। যেখানে মানুষের পক্ষে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়াও কঠিন হয়ে পড়ে। সেখানেই নাকি দিব্যি তরমুজ ফলানো যাচ্ছে।
4300 বছর আগে থেকে এর শুরু:
রাশিয়ার ভোস্টক স্টেশনটি ‘ঠান্ডা মেরু’তে (Pole of Cold) অবস্থিত। এই স্টেশন এই পৃথিবীর সবচেয়ে ঠান্ডা জায়গা। এটি সেই জায়গা, যেখানে রাশিয়ান বিজ্ঞানীরা সারা বছর কিছু না কিছু নিয়ে গবেষণা করেন। ভোস্টক স্টেশনে তাপমাত্রা প্রায়শই -89.2 ডিগ্রিতে পৌঁছায়। 4300 বছরেরও বেশি আগে সুদানে (উত্তর আফ্রিকার একটি দেশ) তরমুজ জন্মেছিল। সুদানের সাক্কারায় মিশরীয় সমাধিতে প্রথম তরমুজ দেখা যায়। অর্থাৎ তরমুজ জন্মেছিল অ্যান্টার্কটিকার ঠান্ডা জায়গা থেকে অনেক দূরে। এমনকী এটি অত্যন্ত গরম জায়গায় জন্মেছিল। এমতাবস্তায় অ্যান্টার্কটিকায় এর বেড়ে ওঠা দেখে বিজ্ঞানীরাও হতবাক।
কীভাবে বরফে ফলানো হয়েছে তরমুজ?
আর্কটিক এবং অ্যান্টার্কটিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রাশিয়ান গবেষকরা, এগ্রোফিজিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং রাশিয়ান একাডেমি অফ সায়েন্সেসের বায়োমেডিকাল সমস্যা ইনস্টিটিউটের গবেষকরা এই অসাধ্য সাধন করেছেন। ভোস্টক স্টেশনে একটি গ্রিনহাউস চেম্বার তৈরি করেছেন। আর সেই গ্রিনহাউস চেম্বারকে তরমুজ ফলানোর জন্য সম্পূর্ণরূপে উপযুক্ত করে তোলা হয়েছে। তাতে তাপমাত্রা কমানো, বাড়ানো সম্ভব। চাষের উপযোগী করে তোলার জন্য যা যা প্রয়োজন, সব ব্যবস্থাই তাঁরা গ্রিনহাউস চেম্বারে করেছেন।
কৃত্রিম সূর্যালোকের ব্যবস্থা:
গবেষকের দলটি এমন দু’টি জাতের তরমুজ বেছে নিয়েছিল, যা খুব তাড়াতাড়ি বেড়ে উঠতে পারে। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল শুধুমাত্র তরমুজের স্বাদ পরীক্ষা করা নয় বরং অক্সিজেনের অভাবে কোনও গাছ বেড়ে উঠতে পারে কি না তা দেখা। গ্রিনহাউস চেম্বারে কৃত্রিম মাটি তৈরি করা হয়েছিল। তাতেই বপন করা হয়েছিল বীজ। এমনকী বিশেষভাবে আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এই আলো দেখতে অবিকল সূর্যের আলোর মতো। যেহেতু উদ্ভিদের পরাগায়নের জন্য কোন পোকামাকড় ছিল না, তাই বিজ্ঞানীরা প্রতিটি বীজকে হাত দিয়ে পরাগায়ন করেছেন। বীজ রোপণের ঠিক 103 দিন পরে, গবেষকরা আটটি পাকা এবং মিষ্টি তরমুজ গাছে ফলতে দেখেছেন। যাদের এক একটির ওজন হয়েছিল দুই পাউন্ড অর্থাৎ এক কেজি।