চাঁদের পৃষ্ঠদেশে জলের উৎস সম্ভবত প্রাচীনকালের অগ্ন্যুৎপাত, নতুন গবেষণায় বলছেন বিজ্ঞানীরা
Moon Water: বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, চাঁদে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল প্রায় ৪.২ বিলিয়ন বছর আগে। আজ থেকে এক বিলিয়ন বছর আগেও সক্রিয় ছিল এইসব আগ্নেয়গিরি।

যবে থেকে মার্কিন স্পেস এজেন্সি NASA ঘোষণা করেছিল যে চাঁদের বুকে জল রয়েছে, তারপর থেকেই বিভিন্ন দেশের গবেষকরা এই জলের উৎস খোঁজার চেষ্টা করছেন। চাঁদের পৃষ্ঠদেশে জল কীভাবে এল তা খুঁজতে গিয়ে নতুন তথ্য পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানিয়েছেন সম্ভবত প্রাচীনকালে অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল চাঁদের পৃষ্ঠদেশে। তার থেকেই জলের নমুনা সঞ্চিত হয়েছে চাঁদের পৃষ্ঠদেশ। অর্থাৎ গবেষকরা নতুন গবেষণার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন যে পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের প্রতিবেশী চাঁদের বুকে সম্ভবত আগ্নেয়গিরি থেকে জল এসেছে। তবে এইসব আগ্নেয়গিরি থেকে চাঁদের পৃষ্ঠদেশ থেকে অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল দীর্ঘদিন আগে। তার থেকেই উৎপন্ন হয়েছিল জল যা সঞ্চিত হয়েছে চাঁদের পৃষ্ঠদেশে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, চাঁদে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল প্রায় ৪.২ বিলিয়ন বছর আগে। আজ থেকে এক বিলিয়ন বছর আগেও সক্রিয় ছিল এইসব আগ্নেয়গিরি। এখন চাঁদের গায়ে আমরা যে কালো রঙের দাগ-ছোপ দেখতে পাই, এগুলো হল আগ্নেয় শিলা দ্বারা গঠিত বিস্তীর্ণ অংশ। বৃহৎ আকারের অগ্ন্যুৎপাতের ফলে এই সমতল তৈরি হয়েছে চাঁদের পৃষ্ঠদেশে। এই সমস্ত অগ্ন্যুৎপাতের ফলে চাঁদের পৃষ্ঠদেশে গ্যাসীয় আস্তরণ তৈরি হয়েছিল কিনা বিজ্ঞানীরা এখন সেটাই বোঝার চেষ্টা করছেন। এর পাশাপাশি এইসব গ্যাসীয় আবরণ পরবর্তী সময়ে চাঁদের অন্ধকারাচ্ছন্ন অঞ্চলে বরফের আস্তরণে পরিণত হয়েছিল কিনা সেটাও খতিয়ে দেখছেন বিজ্ঞানীরা। চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে সূর্যালোক প্রবেশ করতে পারে না। ফলে ওই অংশ সবসময়েই অন্ধকারে থাকে এবং তুলনায় বেশি ঠাণ্ডা হয়। ফলে এই অঞ্চলে গ্যাসীয় আস্তরণ বরফের আবরণে পরিণত হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন, এমনটা হতে পারে চাঁদের বুকে যে পরিমাণ জল ছিল তার ৪১ শতাংশ H2O mass ইতিমধ্যেই চাঁদের পৃষ্ঠদেশ থেকে বাষ্পীভূত হয়েছে, তার সবটাই মেরু অঞ্চলে বরফরূপে সঞ্চিত ছিল। কয়েকশ মিটার এলাকা জুড়ে হয়তো ছিল এই বরফের আস্তরণ। গবেষকদের আরও অনুমান, চাঁদের বুকে আগ্নেয়গিরি সক্রিয় থাকাকালীন সময়ে বরফের পরিমাণ মূলত পুঞ্জীভূত ছিল মেরু অঞ্চলে। আর অন্যান্য অক্ষাংশে ছিল ওয়াটার আইস এবং গ্যাসীয় নমুনা।
এর আগে চিনের Chang’e 5 লুনার ল্যান্ডারও জানিয়েছিল যে চাঁদের বুকে জলের নমুনা পাওয়া গিয়েছে। এই Chang’e 5 হল চিনের লুনার এক্সপ্লোরেশন মিশন অর্থাৎ চন্দ্র অন্বেষণ অভিযানের পঞ্চম পর্যায়। আর চিনের এই চন্দ্রাভিযানেই প্রথমবার নমুনা সংগ্রহ করে তা পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পৃথিবীর বাইরে অন্য কোনও গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কিনা কিংবা সেই গ্রহ বা উপগ্রহ আদৌ মনুষ্য বসবাসের যোগ্য কিনা, তা বোঝার জন্য সর্বপ্রথম জলের সন্ধানই করা হয়। মঙ্গলগ্রহের ক্ষেত্রেও তাই বিভিন্ন দেশের পাঠানো রোভার প্রথমে লালগ্রহের পৃষ্ঠদেশে জলের সন্ধানই করেছে। ঠিক তেমনটাই হয়েছে চন্দ্রপৃষ্ঠের ক্ষেত্রেও।





