A R Rahman Controversy: ‘কারার ওই লৌহ কপাট’ স্বকীয় স্টাইলে কম্পোজ করে ক্ষোভের মুখে রহমান
A R Rahman Controversy: এআর রহমানের ভেরিফায়েড ইউটিউব চ্যানেল। যে ইউটিউব চ্যানেলে দু'দিন আগে আপলোড করা হয়েছে একটি গান। জনপ্রিয়তার নিরিখে সেই ভিউজ খুব একটা বেশি না হলেও সেই গান নিয়েই আপাতত তোলপাড় বাংলা। কবি কাজী নজরুল ইসলামের 'কারার ওই লোহ কপাট'কে যেভাবে নিজের আঙ্গিকে গড়ে-পিঠে নিয়েছেন রহমান, তা শুনে ক্ষুব্ধ বাংলার জনগণ। চলছে চরম সমালোচনা।
নজরুলের গান বিকৃত! এআর রহমানের ভেরিফায়েড ইউটিউব চ্যানেল। যে ইউটিউব চ্যানেলে দু’দিন আগে আপলোড করা হয়েছে একটি গান। জনপ্রিয়তার নিরিখে সেই ভিউজ খুব একটা বেশি না হলেও সেই গান নিয়েই আপাতত তোলপাড় বাংলা। কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘কারার ওই লোহ কপাট’কে যেভাবে নিজের আঙ্গিকে গড়ে-পিঠে নিয়েছেন রহমান, তা শুনে ক্ষুব্ধ বাংলার জনগণ। চলছে চরম সমালোচনা।
গর্জে উঠলেন অরিন্দম কাজী শুধু জনগণই নয়। প্রতিবাদ নজরুলের পরিবারের অন্দরেই। TV9 বাংলা কবির নাতি কাজী অরিন্দমের সঙ্গে যোগাযোগ করতেই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন তিনি। তাঁর কথায়, “হতবাক হয়ে যাচ্ছি। প্রশ্ন জাগছে, এই কাজটি করার আগে কারও সঙ্গে কথা বলেছিলেন উনি? সুর পরিবর্তন করে ঠিক কী বোঝাতে চাইলেন তিনি? বহুদিন আগের একটা গান কোন অধিকারে তিনি বদলে দিতে পারেন, এটাই এখন আমাদের পরিবারের সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।” তিনি আরও বলেন, “আগুন নিয়ে খেলেছেন রহমান”।
প্রতিবাদ বাংলাদেশেও কাজী অরিন্দম জানান, প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে ওপার বাংলাতেও। গর্জে উঠেছেন সে দেশের মানুষও। তাঁর কথায়, “বাংলাদেশের জাতীয় কবি আমার দাদু। তাই শুধু এই দেশে নয়, ওই দেশেও কিন্তু আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। আমার বোন খিলখিল কাজী-র সঙ্গে আমার সকালেই কথা হচ্ছিল। ও আসবে এ দেশে কিছু দিনের মধ্যেই। আমরা এটা নিয়ে বসব, আলোচনা করব। এর প্রতিবাদ হওয়া দরকার।”
ক্ষিপ্ত পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী ভারতীয় তথা বাঙালি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীও গোটা ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। তবে ক্ষোভ ছাপিয়ে তাঁর কণ্ঠে ধরা পড়েছে অসহায়তা। সাহিত্যকে ধরে রাখতে বাঙালি ব্যর্থ, এমনটাই দাবি করে পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী আইনি পদক্ষেপ করার কথাও বলেছেন।
রুষ্ট গায়ক রাঘব চট্টোপাধ্যায় ‘কারার ওই লৌহ কপাট’-বিতর্কে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন গায়ক রাঘব চট্টোপাধ্য়ায়ও। বলেছেন, “ভেবে অবাক হচ্ছি, যে বাঙালি গায়করা গানটি গাইলেন, তাঁদের আক্কেল কী? তাঁরা রহমানের সঙ্গে গাইছেন বলে নজরুলের সঙ্গে এই কাজ করলেন!”
কটাক্ষ ঋত্বিকের স্তম্ভিত আপামর বাঙালি। ক্ষোভের আঁচ টলিউডের অন্দরেও। তীব্র কটাক্ষ করে অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী ফেসবুকে লিখেছেন, “কী যেন একটা সিনেমার গান বোধহয়। ‘কারার ওই লৌহ কপাট’ বাজালাম। বাজল। কী বাজে!”
রহমানের পাশে দেবদীপ এত কটাক্ষের মধ্যেও কিছু শিল্পী সমর্থন জানাচ্ছেন রহমানের এই প্রয়াসকে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম গায়ক দেবদীপ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, “নজরুল ইসলামের কাছ থেকে তো আর অনুমতি নেওয়া সম্ভব নয়। একটা গানকে অন্যভাবে পরিবেশন করলে বাঙালি জাতির ভাবাবেগ চলে যাবে? এতটা ঠুনকো নয় আমাদের ভাবাবেগ। একজন রাশিয়ান এই গান গাইলে তাঁর টান আলাদা হবে, তা হলে তো বলতে হয়, বাংলা গান শুধু বাঙালিরা গাইবে, আর কেউ নয়।”
মুখ খুললেন রাহুল রহমানের কম্পোজিশনে ‘কারার ওই লৌহ কপাট’-এ রয়েছেন একগুচ্ছ বাঙালি গায়ক। যাঁদের মধ্যে অন্যতম রাহুল দত্ত। সমালোচনা প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ““২০২১ সালে রেকর্ড করা হয়েছিল গানটা। রহমান স্যরের টিম থেকে একজন আমায় ফোন করেন। তখনও আমি জানি না কোন ছবিতে আসছে, কবে আসছে। স্যর যেভাবে বলেছিলেন, আমরা সেই ভাবেই গেয়েছিলাম। নির্মাতা যা চাইবেন, সেটাই শিল্পীর করা উচিৎ বলে জানি।”
‘কিছু বলার নেই’ গানটিতে গলা মিলিয়েছেন আর এক গায়ক তীর্থ ভট্টাচার্য। ফোনে তিনি অধরা। তবে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের মাধ্যমে উত্তর দিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, এই নিয়ে আপাতত কোনও মন্তব্য করতে চান না তিনি। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল জানাচ্ছে, যে ভাবে ট্রোলের সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাঁকে, তাতে মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না তীর্থ।