Viral Post: তাড়া করে শেষে ওই কুকুরের সঙ্গেই বারো ঘণ্টা সময় কাটাল ক্ষুধার্ত লেপার্ড, কর্ণাটকে সহাবস্থানের অপরাজেয় গল্প
Leopard And Dog LinkedIn Post: কুকুরটিকে তাড়া করেছিল ওই লেপার্ডটি। ডোরাকাটার আক্রমণ থেকে বাঁচতে দৌড়তে-দৌড়তে একটি শৌচালয়ের জানলা দিয়ে প্রবেশ করে সে। তার পিছু-পিছু ধাওয়া করে ওই একই জানলা দিয়ে শেষমেশ শৌচালয়ে ঢুকে পড়ে লেপার্ডটিও। তারপরের গল্পটা আপনি যা ভাবছেন, তার থেকে অনেকটাই আলাদা।
গল্পটা সহাবস্থানের। একে অপরের স্বাধীনতার প্রতি সংবেদনশীলতার। ঠিক যেমন ভাবে মান ও হুঁশ যুক্ত মানুষ চিন্তা করার, কাজ করার এবং সর্বোপরি বেঁচে থাকার স্বাধীনতা চেয়ে আসছে জন্ম জন্মান্তরে। সে স্বাধীনতা সে পেয়েছে কি না জানে না, আদৌ পাবে কি না তা-ও তার জানা নেই। কিন্তু সেই স্বাধীনতার স্বাদ পেল এক চারপেয়ে। আর তাকে যে স্বাধীনতা দিল, সে-ও চারপেয়ে, বন্যপ্রাণী, তার চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী, ভয়ঙ্কর গতি তার, দৌড়ে এক লহমায় শিকারকে কড়াল গ্রাসে নিয়ে ফেলার ওস্তাদ সে। গল্পটা এক লেপার্ড ও এক কুকুরের। ঘটনাটা কর্ণাটকের কোম্বারু অভয়ারণ্য সংলগ্ন একটি রেস্টহাউসের।
কুকুরটিকে তাড়া করেছিল ওই লেপার্ডটি। ডোরাকাটার আক্রমণ থেকে বাঁচতে দৌড়তে-দৌড়তে একটি শৌচালয়ের জানলা দিয়ে প্রবেশ করে সে। তার পিছু-পিছু ধাওয়া করে ওই একই জানলা দিয়ে শেষমেশ শৌচালয়ে ঢুকে পড়ে লেপার্ডটিও। তারপরের গল্পটা আপনি যা ভাবছেন, তার থেকে অনেকটাই আলাদা।
অস্কার পুরস্কার প্রাপ্ত ‘লাইফ অফ পাই’ ছবির কথা মনে করিয়ে দেবে এই গল্প। ঠিক যেভাবে দিনের পর দিন বাঘের সঙ্গে বসবাস করেছিল ছেলেটি। এখানেও তার অন্যথা হয়নি। সময়ের ব্যবধান যদিও ততটা ছিল না। কিন্তু ওই যে, সহাবস্থানের গল্পটা প্রায় একই। ‘লাইফ অফ পাই’-এর ছেলেটির মতো এই কুকুরটিও তার চেয়ে কয়েক গুণ শক্তিশালী লেপার্ডের সঙ্গে নিশিযাপন করল। টানা 12 ঘণ্টা একসঙ্গে থাকল তারা। না কুকুরটা ঘেউ ঘেউ করে উঠল, না ওই লেপার্ড তার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ল।
ক্ষুধার্ত ছিল বলেই তো লেপার্ডটি তাড়া করেছিল। চাইলেই সে দিন ডিনারে সে একলাফে কুকুরটিকে ছিঁড়ে খেয়ে ফেলতে পারত। কিন্তু তা হয়নি। হয়েছে ঠিক তার অন্যথা। ছবিতে ঠিক যেমনটা দেখা যাচ্ছে, শৌচালয়ের এ প্রান্তে কুকুর, আর তার অপর প্রান্তে লেপার্ডটি। ঠিক সেই ভাবেই 12 ঘণ্টা একসঙ্গে কাটিয়ে দিল ওরা।
পরদিন সকালে বনবিভাগের কর্মীরা এসে ট্রাঙ্কুইলাইজ়ার ডার্ট ব্যবহার করে লেপার্ডটিকে আটক করে। কিন্তু প্রশ্ন একটাই, তাড়া করা সত্ত্বেও কেন কুকুরটিকে আক্রমণ করল না লেপার্ডটি? বন্যপ্রাণী গবেষকরা সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, বন্যপ্রাণীরা একে অপরের স্বাধীনতার প্রতি খুবই সংবেদনশীল। মুশকিলটা হল, সেই স্বাধীনতার বিষয়টা অনুধাবন করতে সময় নিয়ে নেয় তারা। ততক্ষণে ক্ষুধার জ্বালায় আক্রমণ করে বসে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন বন্যপ্রাণীরা বুঝতে পারে যে, তাদের বা অন্যান্য প্রাণীদের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে, গভীর দুঃখ অনুভব করে তারা। সে দুঃখ এতটাই গভীর হতে পারে যে, ক্ষুধা পর্যন্ত ভুলে যেতে পারে তারা।
লিঙ্কডইনে হৃদয়স্পর্শী এই ঘটনাটি শেয়ার করেছেন মহেন্দ্র আগরওয়াল নামের এক ব্যক্তি। একটি ছবিও পোস্ট করেছেন তিনি, আর তার সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন ইয়াব্বড় একটা পোস্ট। খুবই ভাইরাল হয়েছে পোস্টটি। মাত্র দুই দিন আগে শেয়ার করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি লেখার সময় প্রায় 10 হাজারের কাছাকাছি লাইক পড়েছে। কমেন্ট প্রায় চারশোর দিকে এবং রিপোস্ট হাজার ছাপিয়ে যেতে চলেছে।