মমতার পরই অমিতের সভা মেদিনীপুরে, বিজেপির নতুন কৌশল কি ‘ম্যান মার্কিং’!

বিজেপি খুব ভাল করেই একটা বিষয় জানে, তৃণমূলের লাইনআপ যে রকম হোক না কেন, সেখানে গেমচেঞ্জার একজনই রয়েছেন। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে আটকে দেওয়া গেলে বাকিদের কথা আর ভাবতে হবে না।

মমতার পরই অমিতের সভা মেদিনীপুরে, বিজেপির নতুন কৌশল কি 'ম্যান মার্কিং'!
বিজেপির নতুন কৌশল কি 'ম্যান মার্কিং'
Follow Us:
| Updated on: Dec 13, 2020 | 11:12 PM

মেদিনীপুর: ‘বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচাগ্র মেদিনী’। এই প্রবাদের হাতেগরম উদাহরণ প্রত্যক্ষ করতে শুরু করেছেন রাজ্যবাসী। মমতা (Mamata Banerjee) মেদিনীপুরে সভা করে ফিরে যাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যেই এবার সেখানেই সভা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। একটাই বার্তা দিতে, আসছে নির্বাচনে তাঁরাও এক ইঞ্চি জমি ছেড়ে দেবেন না।

বিজেপি সূত্রে খবর, আগামী ১৯ ডিসেম্বর রাজ্যে পা রাখতে চলেছেন অমিত শাহ। ওই দিনই মেদিনীপুরে সভা করবেন তিনি। যদিও সভাস্থল এখনও চূড়ান্ত হয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৭ ডিসেম্বর সভা করেছেন কলেজ মাঠে। বিজেপির সভা কোথায় হবে তা নিয়ে কাল, সোমবার খড়গপুরের একটি লজে রাজ্য নেতৃত্ব বৈঠক করবেন। সেখানেই ঠিক হবে মেদিনীপুরের সভা কোথায় করা হবে।

মমতা সভা করে আসার পরই অমিতের সভার তোড়জোড় শুরু হওয়ায় একটা বিষয় ইতিমধ্যেই সাফ হয়ে গিয়েছে। একুশের ময়দানে লড়াইয়ের জন্য এখন থেকেই ‘ম্যান মার্কিং’ শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। ফুটবলের ভাষায় ‘ম্যান মার্কিং’য়ের অর্থ হল, প্রতিপক্ষের প্রধান খেলোয়াড়কে চিহ্নিত করে তাঁর পিছনে নিজের দলের মজবুত ঘুঁটি গেঁথে দেওয়া। যাতে বিপক্ষের দলের সেই আসল খেলোয়াড় অকেজো হয়ে পড়ে। বিজেপি খুব ভাল করেই একটা বিষয় জানে, তৃণমূলের লাইনআপ যে রকম হোক না কেন, সেখানে গেমচেঞ্জার একজনই রয়েছেন। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে আটকে দেওয়া গেলে বাকিদের কথা আর ভাবতে হবে না।

তবে তৃণমূল সুপ্রিমো আটকানো চাট্টিখানিক ব্যাপার নয় বুঝেই নিজের সর্বশক্তি প্রয়োগ করছে বিজেপি। আর তাৎপর্যপূর্ণভাবে, এই ক্ষেত্রে স্থানীয় নেতাদের উপর ভরসা রাখা হচ্ছে না। যে কারণে মমতার মেদিনীপুরের সভার পরেই সেখানে ছুটছেন অমিত। তৃণমূল সুপ্রিমোর বনগাঁয় সভার পর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে দেখা করতে হাজির হন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। হলফ করেই বলা যায়, আগামী দিনে মমতা যে যে এলাকায় সভা করবেন, সেখানে কোনও পাল্টা সভার প্রস্তুতি নেবে বিজেপিও। সুতরাং বিজেপি মুখে স্বীকার না করলেও তাঁরা যে মমতাকে অসীম গুরুত্ব দিচ্ছে, সেটা তাঁদের পদক্ষেপেই স্পষ্ট।

আরও পড়ুন: দিলীপ ঘোষের সভার জন্য মিলছে না স্কুলের মাঠ, রাজনৈতিক তরজা মানিকচকে

মমতাও যে কম যান না সেটাও ইতিমধ্যেই তিনি বুঝিয়ে দিতে শুরু করেছেন। যে লোকসভা আসনগুলিতে ২০১৯-এর ভোটে দলের ভরাডুবি হয়েছিল, সেই আসনগুলিতে প্রচারের ঝড় তুলেই ভোটের প্রস্তুতি শুরু করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে মেদিনীপুর, বনগাঁ ও আসানসোল। সূত্রের খবর, আগামিকাল উত্তরবঙ্গ সফরেও যাবেন তিনি। লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, যেখানে যেখানে বিজেপি নিজের পায়ের তলার মাটি মজবুত করেছে, সেখানেই নিজের হারানো জমি ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছেন মমতা।

তবে বাংলা ভোটকে বিজেপি ঠিক কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে, তা না বলেও বুঝিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে। গতকাল উজবেকিস্তানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সামিটে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই সামিটের থেকেও বড় আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে প্রধানমন্ত্রীর পিছনে থাকা দৃশ্যপট। সেখানে দেখা যায়, বাঙালির অন্যতম আস্থা ও আবেগের জায়গা দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণীর মন্দির। ফলে এই প্রশ্নও উঠতে শুরু করে, দক্ষিণেশ্বরকে পিছনে রেখে কি বাঙালি আবেগকে প্রাধান্য দিতে চেয়েছেন মোদী?

আরও পড়ুন: বিজেপি কর্মীকে ‘খুন’ করে দেহ পুকুরে! রণক্ষেত্র পূর্বস্থলী