HS Unsuccessful Students: উচ্চমাধ্যমিকে ফেল, তবু পাশ করাতে হবে; জেলায় জেলায় অবরোধ, বিক্ষোভের আঁচ বিকাশ ভবনেও

Higher Secondary: নদিয়া থেকে অনুত্তীর্ণ পড়ুয়ারা বিকাশ ভবনে বিক্ষোভ দেখানোর জন্য আসে পাশ করানোর দাবিতে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাদের অনুরোধ, তাদের যেন পাশ করিয়ে দেওয়া হয়।

HS Unsuccessful Students: উচ্চমাধ্যমিকে ফেল, তবু পাশ করাতে হবে; জেলায় জেলায় অবরোধ, বিক্ষোভের আঁচ বিকাশ ভবনেও
উচ্চমাধ্যমিকে ফেল করে বিক্ষোভ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 13, 2022 | 4:08 PM

কলকাতা : প্রকাশিত হয়েছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফল (Higher Secondary Result)। মেধাতালিকায় প্রথম দশ জনের মধ্যে রয়েছে ২৭২ জন। তবে এরই মধ্যে অনেকে আবার অনুত্তীর্ণও হয়েছে। আর এই অনুত্তীর্ণ পড়ুয়াদের মধ্যে অনেকেই বেঁকে বসেছে। জেলায় জেলায় চলছে প্রতিবাদ (HS Fail Protest)। উচ্চমাধ্যমিকের ফল প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই এই কাণ্ড শুরু হয়েছে। প্রথমে একটি দুটি জায়গায়, তারপর ক্রমেই তা বাড়তে বাড়তে ছড়িয়ে পড়ছে একের পর এক জেলায়। বিক্ষোভরত অনুত্তীর্ণ পড়ুয়াদের মূল দাবি, তাদের পাশ করিয়ে দিতে হবে। জেলায় জেলায় চলছে পথ অবরোধ, বিক্ষোভ। এই প্রতিবাদের আঁচ ছড়িয়েছে বিকাশ ভবন পর্যন্তও। নদিয়ার মাজদিয়া স্কুলের উচ্চ মাধ্যমিকে অনুত্তীর্ণ ছাত্র ছাত্রীদের পাশ করিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হয়। পড়ুয়ারা বিকাশ ভবনের সামনে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ ইন্দিরা ভবনের কাছে তাদেরকে আটকে দেয়।

পড়ুয়াদের বক্তব্য, মাধ্যমিকে তারা অনেক নম্বর পেয়েছিল। কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকের ক্ষেত্রে সেই ভাবে তারা পড়াশোনা করতে পারেনি। অনলাইনের মাধ্যমে তাদেরকে পড়াশোনা করতে হয়েছিল। মোবাইল ফোন তাদেরকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, রিচার্জের জন্য তাদের টাকা পয়সা দেওয়া হয়নি। তাদের বক্তব্য, এক্ষেত্রে অনেকেই হতদরিদ্র এবং দুঃস্থ, দিন-আনা দিন-খাওয়া পরিবারের পড়ুয়া। উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার পরে তাদের যখন রেজাল্ট বেরোয়, তখন দেখা যায় অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীরা অনুত্তীর্ণ। বিষয়টি নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনও কিছুর সদুত্তর দিতে পারেনি। এই পরিস্থিতিতে তারা নদিয়া থেকে বিকাশ ভবনে বিক্ষোভ দেখানোর জন্য আসে পাশ করানোর দাবিতে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাদের অনুরোধ, তাদের যেন পাশ করিয়ে দেওয়া হয়।

এদিকে সোনারপুর গ্রিনপার্ক শিক্ষাসদন হাইস্কুলে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ৮০ জন ছাত্রছাত্রী ফেল করেছে। এর প্রতিবাদে সোনারপুর-কামালগাজি রোড অবরোধ করে পড়ুয়ারা। এই বিষয়ে, স্কুলের প্রধান শিক্ষক অনিমেষ মান্না বলেন, “কলা বিভাগে মোট ৭৪ জন পরীক্ষা দিয়েছিল। তারমধ্যে ৬০ জনই অকৃতকার্য হয়েছে। অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী ইংরেজিতে ব্যাক পেয়েছে। এই বিষয়টি বোর্ডকে জানানো হয়েছে।” রেজাল্ট বেরোনোর পরের দিনই স্কুলের পক্ষ থেকে শিক্ষা সংসদকে ই-মেল করে জানানো হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।

প্রতিবাদ শুধু কলকাতাতেই নয়। এই ছবি জেলায় জেলায়। উচ্চমাধ্যমিকে অনুত্তীর্ণ হওয়ার ফলে হালিশহরের বাগমোরে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখায় পড়ুয়ারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পুলিশও নামানো হয়। হালিশহর মল্লিকবাগ হাইস্কুলের ৮৪ জন অনুত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রী স্কুলের গেটের বাইরে বিক্ষোভ দেখায়। ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি সেই একই। তাদের দাবি, মার্কশিটে ফেল থাকলেও পাস করাতে হবে।

একই ছবি আসানসোল, রানিগঞ্জেও। ফেল করার পরও দাবি পাশ করিয়ে দিতে হবে। আসানসোল রেল পাড়ের দু’টি উর্দু এবং একটি হিন্দি মিডিয়াম স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা নেমে পড়ে রাস্তায়। পাশ করিয়ে দেওয়ার দাবিতে জিটি রোড অবরোধ হয়। পড়ুয়াদের অভিযোগ, অনেকেরই ফার্স্ট ডিভিশনের মার্কস রয়েছে। কিন্তু একটিমাত্র সাবজেক্টে কম নম্বর হওয়ায় তারা ফেল করে গিয়েছে। বিশেষ করে ইংরেজিতে বেশিরভাগ পড়ুয়ার কম নম্বর এসেছে বলে অভিযোগ। একই অভিযোগে রানিগঞ্জের সিয়ারসোল গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রীরা ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে দেয়।

দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গ… সর্বত্রই একই ছবি। তুফানগঞ্জে উচ্চমাধ্যমিকে অনুত্তীর্ণ পড়ুয়ারা ১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে। অবরোধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান তুফানগঞ্জের ১ নম্বর ব্লকের বিডিও দেবঋষি বন্দ্যোপাধ্যায়। পড়ুয়ারা তাঁকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখান। পড়ুয়াদের দাবি, মারুগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয়ে মোট উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিল ১৫৭ জন। তার মধ্যে ৯৭ জন অনুত্তীর্ণ। কোচবিহারের ইন্দিরা দেবী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, হরেন্দ্র নাথ উচ্চ বিদ্যালয়, কোচবিহার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় এবং রামভোলা স্কুল সহ কোচবিহারের একাধিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা মিলিতভাবে প্রতিবাদে নামে।

শিলিগুড়ির শ্রী গুরু বিদ্যামন্দির চত্বরেও বিক্ষোভ দেখায় বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা। তাদের অভিযোগ খুব কম সময়ের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ হয়েছে, অন্যদিকে মার্কশিট এখনও হাতে পাওয়া যায়নি। অনুত্তীর্ণ পড়ুয়াদের বক্তব্য, পরীক্ষার খাতা দেখায় কোনও ঘাটতি হয়েছে। যার ফলেই এই ফলাফল। মার্কশিট পেয়ে স্ক্রুটিনি করাতে কলেজে ভর্তির সময় পেরিয়ে যাবে। তাই তাদের দাবি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

পাশ করানোর দাবিতে বিক্ষোভ চলে দক্ষিণ দিনাজপুরেও। পতিরাম ও গঙ্গারামপুরে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় উচ্চমাধ্যমিকে ফেল করা পড়ুয়ারা। উচ্চমাধ্যমিকে পাশ করানোর দাবিতে ৫১২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় ছাত্র ছাত্রীরা। সোমবার দুপুরে পতিরাম থানার তালতলা মোড় এলাকায়। শুধুমাত্র পতিরাম নয়, গঙ্গারামপুরেও রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় অকৃতকার্য উচ্চমাধ্যমিকে ছাত্রছাত্রীরা। তাদের দাবি সকলকেই পাশ করাতে হবে।