Alipurduar : বিবাহ অভিযানে গলায় মালার পাশাপাশি প্ল্যাকার্ড, কী লেখা সেই প্ল্যাকার্ডে?

 Alipurduar : বর বিয়ে করতে গেল গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে। করোনাবিধি মেনে ২০০ জনের উপস্থিতিতে করলেন বিয়ে।

Alipurduar : বিবাহ অভিযানে গলায় মালার পাশাপাশি প্ল্যাকার্ড, কী লেখা সেই প্ল্যাকার্ডে?
বরের গলায় মালার সঙ্গে প্ল্যাকার্ড (নিজস্ব ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 26, 2022 | 11:59 PM

আলিপুরদুয়ার : এ এক অভিনব বিবাহ অভিযান। গলায় মালার পরিবর্তে প্ল্যাকার্ড? হ্যাঁ, ঠিক এরকমই ছবি দেখা গেল আলিপুরদুয়ারে। সোমবার বিয়ে ছিল এক স্কুল শিক্ষকের। পরনে ধুতি, পাঞ্জাবি সবই ছিল। তবে বিয়ের সাজের সঙ্গে যেটা বেমানান ছিল তা হল বরের গলায় প্ল্যাকার্ড। সেই প্ল্যাকার্ডে লেখা সচেতনতার বার্তা ও অনুরোধ। প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, “করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা বিয়ে করতে পারলে, অনুরোধ স্কুলগুলোও খোলা হোক।”

এই অভিনব বিবাহ অভিযান রীতিমত ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। ঘটনাটি আলিপুরদুয়ারের। বর পেশায় একজন স্কুল শিক্ষক। নাম অসীম দাস। তিনি মথুরা বাগান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তাঁর বাড়ি ফালাকাটার সুভাষপল্লীতে। সোমবার তাঁর বিয়ে ছিল। বিয়ের আসরে সরকারি নিয়ম মেনেই উপস্থিত ছিল ২০০ জন নিমন্ত্রিত। সকলের মুখেই ছিল মাস্ক। সমস্ত করোনাবিধি মেনেই বিয়ে হয়েছে। সরকার নির্দেশিকা জারি করলেও সেই নির্দেশিকা মেনে চলেন খুব কম লোকে। তবে অসীমবাবু সেই নির্দেশিকা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলে যেরকম দায়িত্ববান নাগরিকের ভূমিকা পালন করেছেন তেমনি গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে স্কুল খোলার আবেদনও জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “বিগত দুই বছর ধরে আমাদের স্কুল বন্ধ। আমরা প্রতি মাসে স্কুলে মিড-ডে মিল দিতে যাই শুধু দুই তিন দিনের জন্য। প্রতিবারই অভিভাবকদের একটা প্রশ্নের সম্মুখীন হই যে স্কুল কবে খুলবে? স্কুল না খোলার দরুন বাচ্চারা বাড়িতে ঠিকভাবে পড়াশোনা করছে না। তাই তাঁরা আমাদের কাছে এসে এই এক প্রশ্নই করেন। কিন্তু আমরা এই প্রশ্নের কোনও উত্তর দিতে পারি না।”

প্রাথমিক শিক্ষক অসীম দাস আরও বলেছেন, “আমরা এই দুই বছর ধরে দেখতে পারছি যে কোভিডবিধি মেনে সবরকম সামাজিক অনুষ্ঠান হচ্ছে। যেমন- মেলা,ভোট, বিয়ে, অন্নপ্রাসনের মতো যেকোনও সামাজিক অনুষ্ঠান চলছে। শুধুমাত্র স্কুলটা বন্ধ আছে।” তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, “আমরা কোভিড বিধি মেনে ২০০ জন নিয়ে বিয়ে করলাম। তাহলে কোভিড বিধি মেনে স্কুলটা কেন খোলা হবে না?” এই নব দম্পতি সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন যে, সরকার যদি বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে স্কুল খোলার ব্যবস্থা করে তাহলে ভবিষ্যত প্রজন্মের খুব ভালো হয়। নব দম্পতির এই অভিনব প্রয়াসে প্রশংসায় পঞ্চমুখ নেটিজেনরা।

বর্তমানে করোনা মহামারি পরিস্থিতি সম্পর্কে আমরা সকলেই অবগত। এই মহামারিতে কারোর কারোর রুজি-রোজগারে টান পড়েছে। সেরকমই এই পরিস্থিতিতে সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা। লকডাউন উঠে গেলে কেউ কেউ কাজে ফিরতে পারলেও স্কুলের তালা খোলা হয়নি প্রায় ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে। ছেলেমেয়েদের ভবিষ্য়ত আটকে গিয়েছে ল্যাপটপ বা ফোনের স্ক্রিনে। কেউ আবার সংসারে অভাবের কারণে বাবা-মায়ের সঙ্গে রোজগারে হাত লাগিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে স্কুল ছুট হয়েছে বহু শিক্ষার্থী। কেউ জানে না তারা আর কোনওদিন স্কুলমুখী হতে পারবে কিনা আদৌ। মাঝে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির কিছুদিনের জন্য অফলাইন ক্লাস চালু হলেও ওমিক্রনের হানায় তা আবার বন্ধ হয়ে যায়। রাজ্যে করোনাবিধি মেনে পানশালা খোলা থাকলেও, খুলছে না পাঠশালা।

আরও পড়ুন : Alipurduar: মোক্ষম কামড়! তৃণমূল কর্মীর কান ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ