রাস্তা আটকে উঠছে দেওয়াল, আম জনতার জীবনে হস্তক্ষেপ বিশ্বভারতীর! উপাচার্যকে তোপ অমর্ত্য সেনের
আমার মেয়ে বাড়ির সামনে সবজি কেনার জন্য আমি হকার উচ্ছেদের বিরোধিতা করেছি, এমন কথাও বলিনি। আমার মেয়ে কোন দোকানে সবজি কেনে তা আমি জানি না।
বোলপুর: শান্তিনিকেতন রোডে হকাররা বসেন। এ ঘটনা আজকের নয়, বহুদিনের। কিন্তু নোটিস দিয়ে সেই হকারদের উঠে যেতে বলেছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। এই অভিযোগে আগেই উপাচার্যকে ‘বিজেপির লোক’ বলে বোমা ফাটিয়েছেন তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডল। এবার উপাচার্যর বিরুদ্ধে নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনের (Amartya Sen) নামে অপ্রীতিকর কথা বলার অভিযোগ তুললেন অধ্যাপকরা।
গত ৯ ডিসেম্বর বিশ্বভারতীর অধ্যাপকদের সঙ্গে শিক্ষা বিষয়ক আলোচনায় বসেছিলেন উপাচার্য। কিন্তু সেদিন নাকি শিক্ষার থেকে বেশি আলোচনা হয় অন্য বিষয়। এই অভিযোগ অধ্যাপক সংগঠনের তরফে অভিযোগ জমা পড়েছে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির কাছেও। অধ্যাপক সংগঠনের দাবি সেই বৈঠকে উঠে এসেছিল নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনের প্রসঙ্গ। তাঁদের দাবি সেদিন অমর্ত্য সেনকে ‘স্বার্থপর’ বলে মন্তব্য করেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। সেদিন নাকি উপাচার্য জানিয়েছেন, অমর্ত্য সেন তাঁকে ফোন করে “আমি ভারতরত্ন অমর্ত্য সেন বলছি” বলেন। পাশাপাশি সেদিন বৈঠকে উপাচার্য এ-ও জানান, যেহেতু অমর্ত্য সেনের মেয়ে হকারদের কাছ থেকে পণ্য কেনেন, তাই হকারদের উচ্ছেদ করতে বারণ করেছেন নোবেলজয়ী।
কিন্তু তাঁর প্রসঙ্গে প্রত্যেকটি কথাই খারিজ করে দিয়েছেন অমর্ত্য সেন। উল্টে তিনি বলেন, “উপাচার্যের সঙ্গে আমার এমন কোনও কথাবার্তা হয়নি। আমার মেয়ে বাড়ির সামনে সবজি কেনার জন্য আমি হকার উচ্ছেদের বিরোধিতা করেছি, এমন কথাও বলিনি। আমার মেয়ে কোন দোকানে সবজি কেনে তা আমি জানি না। তবে, বিশ্বভারতী সাধারণ মানুষের জীবনে অতিমাত্রায় হস্তক্ষেপ করছে, রাস্তা আটকে দেওয়াল তুলছে। এই নিয়ে আমি আগেও পত্রিকায় লিখেছি। আমার মা বাড়িতে (প্রতীচী) থাকাকালীন পিয়ারসনপল্লীতে হকারদের সরিয়ে দেওয়ার বিরোধিতা করেছিলেন। উপাচার্য যা বলেছেন, তার সঙ্গে কিন্তু এই ঘটনার কোনও সম্পর্ক নেই।” পাশাপাশি তিনি নিজেকে কোথাও ভারতরত্ন বলে পরিচয় দেন না বলেও জানিয়েছেন অমর্ত্য সেন।
আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগেও বেনজির তরজা! টুইট-যুদ্ধে রাজ্যপাল বনাম শিক্ষামন্ত্রী
এই বিষয়ে অধ্যাপক সংগঠনের নেতৃত্ব স্থানীয় এক অধ্যাপক জানান, যেহেতু উপাচার্য বৈঠকে এই কথা বলেছিলেন তাই আমরা মেইল পাঠিয়ে অর্মত্য সেনের কাছে জানতে চেয়েছিলাম। তার উত্তরেই তিনি এই কথাগুলি বলেছেন।