Bankura: সাদা চুল-দাড়িতে ঢাকা মুখ, চোখ ঘোলাটে, মৃত বৃদ্ধই ঘুরে বেড়াচ্ছেন গ্রামে! বার্ধক্য ভাতাই তো তুলে দিচ্ছে হাজারও প্রশ্ন

Bankura: এমন ঘটনায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে নজর আলি খানের। নিজে জীবিত আছেন তা প্রমাণ করতে শুরু হয় তাঁর বিভিন্ন দফতরে ছোটাছুটি। গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে বিডিও অফিস বারেবারে তিনি ছুটে গিয়েছেন। বারেবারে আবেদন জানিয়েছেন দুয়ারে সরকার শিবিরেও।

Bankura: সাদা চুল-দাড়িতে ঢাকা মুখ, চোখ ঘোলাটে, মৃত বৃদ্ধই ঘুরে বেড়াচ্ছেন গ্রামে! বার্ধক্য ভাতাই  তো তুলে দিচ্ছে হাজারও প্রশ্ন
বেঁচেও মরে এই বৃদ্ধImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 10, 2024 | 2:03 PM

বাঁকুড়া: বয়স আশি ছুঁয়েছে। এখনও দিব্যি ঘুরে ফিরে বেড়ান বাঁকুড়ার সিমলাপাল ব্লকের কানাকাটা গ্রামের নজর আলি খান। কিন্তু কাগজে কলমে তাঁর মৃত্যু হয়েছে চার বছর আগেই। অতএব বন্ধ হয়ে গিয়েছে বার্ধক্য ভাতা। চূড়ান্ত অসহায়তার মধ্যে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন কানাকাটার নজর আলি খান।

রবি ঠাকুরের জীবিত ও মৃত ছোটগল্পে কাদম্বিনীকে মরে প্রমাণ করতে হয়েছিল তিনি মরেননি। দফতরে দফতরে ঘুরেও নিজেকে যখন জীবিত প্রমাণ করতে পারেননি নজর আলি খান। বাঁকুড়ার সিমলাপাল ব্লকের কানাকাটা গ্রামের বছর আশির বাসিন্দা নজর আলি খান আর পাঁচ জন উপভোক্তার মতোই সরকারি বার্ধক্য ভাতা পেতেন। মাসিক এক হাজার টাকা ভাতায় কিছুটা হলেও সুরাহা হয়েছিল অভাবের সংসারে। কিন্তু ২০২০ সালে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় তাঁর ভাতা। খোঁজ খবর নিয়ে তিনি জানতে পারেন কাগজে কলমে তিনি আর বেঁচে নেই।

এমন ঘটনায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে নজর আলি খানের। নিজে জীবিত আছেন তা প্রমাণ করতে শুরু হয় তাঁর বিভিন্ন দফতরে ছোটাছুটি। গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে বিডিও অফিস বারেবারে তিনি ছুটে গিয়েছেন। বারেবারে আবেদন জানিয়েছেন দুয়ারে সরকার শিবিরেও। কিন্তু প্রতি ক্ষেত্রেই এক দফতর অপর দফতরের ঘাড়ে দোষ ঠেলে নজর আলি খানকে জানিয়ে দিয়েছে তিনি কাগজে কলমে মৃত। অগত্যা চার বছর ধরে বন্ধ রয়েছে বার্ধক্য ভাতা। নিদারুণ দারিদ্রে কাটছে তাঁর সংসার। এই পরিস্থিতিতে নিজেকে কীভাবে নজর আলি খান প্রমাণ করবেন যে তিনি জীবিত! বয়সের ভারে ঠিকভাবে কথাও বলতে পারেন না তিনি। কেবল বললেন, “যে টাকাই পাই, সেটা সংসারের কাজেই লাগে। আমাদের মতো পরিবারের কাছে এই টাকাই যথেষ্ট। কিন্তু কীভাবে সমস্যার সমাধান হবে, সেটাই মাথায় আসছে না।”

এই ঘটনার জন্য বিরোধীরা দুষছে খোদ শাসক দল ও প্রশাসনকেই। শাসক দল ও স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত বিষয়টি জানে না তা নয়। কিন্তু শাসক দল ও স্থানীয় সিমলাপাল গ্রাম পঞ্চায়েতের বক্তব্য, “এটা আসলে একটি অনিচ্ছাকৃত ভুল। যত দ্রুত সম্ভব সেই ভুল সংশোধনের চেষ্টা করা হচ্ছে।” বিডিও  মানস চক্রবর্তী বলেছেন, “কোনও একটি সমস্যা হয়েছে। দ্রুত সেই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।” বাঁকুড়ার বিজেপি জেলা সম্পাদক দীপক কুমার দাস বলেন, “প্রশাসনের সদিচ্ছাই নেই। একজন বয়স্ক মানুষ এসেছেন, তাঁর কী বক্তব্য, সেটা শুনে সমস্যার সমাধান করার।” যদিও বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল সম্পাদক রামানুজ সিংহ মহাপাত্র বলেন, “একটা ভুল হয়েছে। সংশোধনের চেষ্টা চলছে। বিরোধীদের কাজই হচ্ছে ভুল অন্বেষণ করা। সেটা করেছেন।”