Bankura: চতুর্দিকে ঝোপঝাড়, চিকিৎসক আসেন মর্জি মতন, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র যেন ভূতুড়ে বাড়ি!
Bankura: নির্দিষ্ট সময়ের অনেক পরে এসে ছুটির অনেক আগেই ফিরে যান। ফলে বেশিরভাগ দিন হাসপাতালের আউটডোর চিকিৎসা পরিসেবা চালু রাখতে ভরসা নার্স ও ফার্মাসিস্ট।
বাঁকুড়া: একসময় শুধু আউটডোর পরিবা নয়, চালু ছিল ইনডোর পরিষেবা। রোগী ভর্তি রেখে হত ছোটখাটো অস্ত্রোপচারও। কিন্তু সে সবই অতীত বাঁকুড়ার ওন্দা ব্লকের নিকুঞ্জপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। স্বাস্থ্য দফতরের অবহেলায় একসময়ের রমরমিয়ে চলা সেই হাসপাতাল বর্তমানে যেন এক ধ্বংসস্তূপ। চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীরা সময়মতো না আসায় বেশিরভাগ সময়ই মেলে না ন্যূনতম আউটডোর পরিষেবাও। বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরকে জানানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
চিকিৎসা পরিষেবার মান নিয়ে একসময় বেশ নামডাক ছিল বাঁকুড়ার ওন্দা ব্লকের নিকুঞ্জপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীদের শুধু নিয়মিত হাসপাতালে যাতায়াত ছিল, তাই নয় হাসপাতাল চত্বরে থাকা কোয়ার্টারে থাকতেন বেশিরভাগ চিকিৎসক ও চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা।
নিকুঞ্জপুর, বলরামপুর, সাহাপুর, তেঁতুলমুড়ি, মুসুরিয়া, কেশিয়া-সহ আশপাশের ৪০ টি গ্রামের মানুষের কথা ভেবে বাম আমলে এই হাসপাতালটিকে ১০ বেড যুক্ত ইনডোর হাসপাতালে রূপান্তরিত করে স্বাস্থ্য দফতর। নিজস্ব অপারেশন থিয়েটার থাকায় ছোটখাটো অস্ত্রোপচারও শুরু হয়। কিন্তু চিকিৎসকের অভাবে বেশ কয়েকবছর আগেই বন্ধ হয়ে যায় হাসপাতালের ইনডোর পরিষেবা। বন্ধ হয়ে যায় অস্ত্রোপচার।
হাসপাতালের পরিকাঠামো ভেঙে পড়তে শুরু করে। চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীরা না থাকায় ঝোপঝাড়ে ঢাকা পড়ে যায় কোয়ার্টার ও হাসপাতালের বেশিরভাগ অংশ। হাসপাতালের সামান্য একাংশে কোনওরকমে চলতে থাকে আউটডোর পরিষেবা। কিন্তু সেই পরিষেবা নিয়েও এলাকার মানুষের অভিযোগের অন্ত নেই। অভিযোগ, সপ্তাহে দুই থেকে তিনদিন চিকিৎসক আসেন হাসপাতালে। তাও আবার নির্দিষ্ট সময়ের অনেক পরে এসে ছুটির অনেক আগেই ফিরে যান। ফলে বেশিরভাগ দিন হাসপাতালের আউটডোর চিকিৎসা পরিসেবা চালু রাখতে ভরসা নার্স ও ফার্মাসিস্ট।
হাসপাতালে কর্মরত নার্সদের ব্যবহার নিয়েও বেজায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এখন ন্যূনতম চিকিৎসা পরিষেবাটুকুও মেলেনা এই হাসপাতালে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গেলেই সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে স্থানান্তরিত করে দেওয়া হয় অন্যত্র।
সেক্ষেত্রে রোগীকে নিয়ে ছুটতে হয় ৩০ কিলোমিটার দূরের বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসপাতালের বেহাল পরিকাঠামোর কথা স্বীকার করে নিলেও চিকিৎসা পরিষেবা সংক্রান্ত অভিযোগগুলি মানতে চাননি। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, বিষয়গুলি নিয়ে তাঁদের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ হয়নি।
অভিযোগ হলে বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হবে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য দফতরের আশ্বাস প্রয়োজনীয়তার নিরিখে ধীরে ধীরে ওই হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নত করা হবে।