স্বাধীনতা দিবসে জঙ্গলমহলে উদ্ধার রহস্যজনক পোস্টার, উত্তোলিত কালো পতাকা, ফের সক্রিয় হচ্ছে মাও-চক্র?

Poster Protest:মমতা সরকারের আমলে মাও তৎপরতাও অনেকটাই কমেছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞ মহলের দাবি, পরবর্তীকালে ধাক্কা খেয়েছে উন্নয়নের সুফল।

স্বাধীনতা দিবসে জঙ্গলমহলে উদ্ধার রহস্যজনক পোস্টার, উত্তোলিত কালো পতাকা, ফের সক্রিয় হচ্ছে মাও-চক্র?
বিতর্কিত পোস্টাক, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 15, 2021 | 1:56 PM

পশ্চিমবঙ্গ: স্বাধীনতা দিবসের দিনেই বিতর্কিত পোস্টার! দুই জেলায় রহস্যজনক মাও-পোস্টার উদ্ধারে চাঞ্চল্য? তাহলে কি ফের মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে মাওবাদীরা? দুই জেলায় আতঙ্কে স্থানীয়রা। তদন্তে পুলিশ।

বাঁকুড়া: 

স্বাধীনতা দিবসের দিনেই লাল কালিতে লেখা রহস্যজনক পোস্টার (Maoist Poster) ও উত্তোলিত কালো পতাকাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াল বারিকুল থানার অন্তর্গত জাতাডুমুর গ্ৰামে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রায় অনেকবছর পর এই পোস্টার আর পতাকা দেখা গিয়েছে। ফলে নতুন করে কোনও মাও-চক্র সক্রিয় হতে পারে বলে আশঙ্কা এলাকাবাসীর।

স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, “আজ সকালেই দেখলাম এই পোস্টার। অনেকবছর পরে এই পোস্টার দেওয়া হয়েছে। কালো পতাকাও তুলেছে। লালকালিতে ওই পোস্টারগুলিতে লেখা হয়েছে ‘মাওবাদী জিন্দাবাদ’। এখনও কোনও বিপদ হয়নি। তবে কখন কী হতে পারে এই চিন্তা তো থাকছেই। পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছে। পুলিশ এসে পোস্টার আর পতাকা নিয়ে গিয়েছে।”  বারিকুল থানার পুলিশ জানিয়েছে, কে বা কারা পোস্টারগুলি দিয়েছে তা স্পষ্ট নয়। গোটা ঘটনাই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

পুরুলিয়া:

স্বাধীনতা দিবসের সকালেই রহস্যজনক পোস্টার (Maoist Poster)। অযোধ্যা পাহাড়ের উলসুলডুংরিতে পাওয়া কালো কালিতে লেখা রহস্যজনক সেই পোস্টারগুলি লেখা হয়েছে আদিবাসী-মূলবাসিন্দাদের পক্ষে। নীচে লেখা মাওবাদী! আর এই পোস্টারকে কেন্দ্র করে উত্তেজান ছড়িয়েছে এলাকায়। কে বা কারা এই পোস্টার দিয়েছে তা স্পষ্ট নয়।

স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, রবিবার সকালেই গোটা এলাকাজুড়ে এই বিশেষ পোস্টার দুটি দেখা যায়। রহস্যজনক এই পোস্টার দুটিতে কালো কালিতে কী লেখা হয়েছে? একটিতে লেখা হয়েছে, ‘আদিবাসী মূলবাসী জিন্দাবাদ। পঞ্চায়েত থেকে রাজ্যস্তর পর্যন্ত আদিবাসী মূলবাসীদের বঞ্চনা করা যাবে না। আদিবাসী-মূলবাসীদের উপর অত্যাচার করা চলবে না। আদিবাসী মহিলাদের উপর নির্যাতনে অভিযুক্তদের অবিলম্বে শাস্তি দিতে হবে।’ অন্য আরেকটি  পোস্টারে লেখা হয়েছে, ”বাঘমুণ্ডী বলরামপুর এবং আড়ষার প্রাক্তন মাওবাদীদের যদি চাকরী দেওয়া না হয় তবে আবার তারা মাওবাদী স্কোয়াডে যোগ দেবে”। নীচে, লেখা হয়েছে ‘মাওবাদী’।

POSTER IN PURULIA 2

পোস্টার উদ্ধার, নিজস্ব চিত্র

পুলিশ সমস্ত পোস্টারগুলি উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, কিছু প্রাক্তন মাওবাদী চাকরী পাবার জন্য এই ধরনের কাজ করছে। এর আগেও ঝালদা এলাকা থেকে এই রকম পোস্টার উদ্ধার হয়েছিল। তবে এই পোস্টার উদ্ধারকে কেন্দ্র করে পুরোপুরি প্রতিক্রিয়াহীন শাসক শিবির।

প্রসঙ্গত, পাহাড় ও জঙ্গলমহল নিয়ে বরাবরই আশাবাদী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। জঙ্গলমহলকে কখনও ‘হাসিখুশি’, কখনও বা ‘উন্নয়নের মডেল’ বলেও দাবি করেছেন স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রিমো। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা সরকারের আমলে মাও তৎপরতাও অনেকটাই কমেছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞ মহলের দাবি, পরবর্তীকালে ধাক্কা খেয়েছে উন্নয়নের সুফল। মমতার জনপ্রতিনিধি আদিবাসীদের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছতে পারেননি বলেই মনে করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।

যদিও, প্রাক্তন মাওবাদীদের দাবিদাওয়া প্রসঙ্গে বরাবর সচেতন থাকার চেষ্টা করেছে  তৃণমূল সরকার। সম্প্রতি, পুরুলিয়া জেলায় মোট ২০৬ মাওবাদীকে হোমগার্ড পদে চাকরী দেওয়া হয়েছে। অনেকেই নিজেকে মাওবাদী দাবি করে চাকরি চেয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন জেলা পুলিশ সুপার। সেক্ষেত্রে, যাঁরা আবেদন করেছেন তাঁদের সকলের সমস্ত নথি যাচাই করেই চাকরি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ অধিকর্তা। ফের এই পোস্টার উদ্ধারের জেরে আবার মাও-চক্র সক্রিয় হতে পারে বলে আশঙ্কা তদন্তকারীদের একাংশের। আরও পড়ুন: ‘জাগরণের লক্ষ্যে ঘণ্টি, কাঁসর, গীতা’, শুভেন্দুর ‘হরিনামে’ পদ্মের ‘সনাতনী’ ভোট!