Bankura : চাঁদা দিতে না পারায় জরিমানা, বৃদ্ধাকে ‘এক ঘরে’, বাঁকুড়ায় খাপ পঞ্চায়েতের ছায়া

Bankura : গ্রামের ষোলো আনা কমিটির অবশ্য দাবি, এক ঘরে করা হয়নি বৃদ্ধাকে। তবে জরিমানার কথা স্বীকার করে নিয়েছে তারা।

Bankura : চাঁদা দিতে না পারায় জরিমানা, বৃদ্ধাকে 'এক ঘরে', বাঁকুড়ায় খাপ পঞ্চায়েতের ছায়া
গ্রাম কমিটির সিদ্ধান্তে দিশেহারা বৃদ্ধা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 02, 2022 | 8:00 PM

বাঁকুড়া : এ যেন খাপ পঞ্চায়েতের ছায়া। সংকীর্তন উপলক্ষে গ্রামের আর পাঁচটা পরিবারের মতো তাঁরও চাঁদা ধার্য হয়েছিল পাঁচশো টাকা। সেই টাকা দিতে পারেননি বৃদ্ধা। দুশো টাকা চাঁদা দিতে গেলে গ্রামবাসীদের সঙ্গে বচসা বাধে। সেই বচসার ‘অপরাধে’ নিঃসন্তান ওই বিধবার জরিমানা ধার্য হয় দশ হাজার টাকা। সেই জরিমানা দিতে না পারায় এবার সত্তরোর্ধ্ব ওই বৃদ্ধাকে সামাজিক বয়কটের অভিযোগ উঠল। অভিযোগ, সামাজিক বয়কটের শিকার হন ওই মহিলার এক আত্মীয়ের পরিবারও। ঘটনা বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় থানার কোদালিয়া গ্রামের।

কোদালিয়া গ্রামের বাসিন্দারা আয়োজন করেছিলেন হরিনাম সংকীর্তনের। সেই উপলক্ষে গ্রামের প্রতিটি পরিবারের জন্য ধার্য হয় পাঁচশো টাকা চাঁদা। শারীরিক অসুস্থতার চিকিৎসায় নাজেহাল গ্রামের নিঃসন্তান বিধবা আদরী পাল সেই চাঁদা দিতে পারেননি। গ্রামেই থাকা অপর এক আত্মীয়ের হাতে পাঁচশোর বদলে দুশো টাকা আদরী পাল চাঁদা হিসাবে গ্রামের ষোলো আনা কমিটির কাছে পাঠান। গ্রাম ষোলো আনা সেই চাঁদা গ্রহণ করেনি। উলটে তা নিয়ে বৃদ্ধার আত্মীয়ের সঙ্গে তুমুল বচসা হয় বলে অভিযোগ। আদরী পালের ওই আত্মীয় চাঁদা নিয়ে ষোলো আনা কমিটির সঙ্গে বচসা করেছেন, এই ‘অপরাধে’ আদরী পালকে দশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযোগ, সেই জরিমানার টাকা দিতে না পারায় আদরী পাল ও তাঁর আত্মীয়ের পরিবারকে সামাজিক ভাবে বয়কটের নিদান দেয় গ্রাম ষোলো আনা।

গ্রামে রীতিমত ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে ওই দুটি পরিবারকে সামাজিক বয়কটের কথা ঘোষণা করা হয় বলেও অভিযোগ। মধ্যযুগীয় এই বর্বরতার বিরুদ্ধে বিচার চেয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে থানা, পুলিশ সুপার, বিডিও, জেলাশাসক সহ বিভিন্ন স্তরে আবেদন জানিয়েছেন বৃদ্ধা।

সামাজিক বয়কটের কথা স্বীকার না করলেও গ্রাম ষোলো আনা জরিমানার অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছে। ষোলো আনা কমিটির সদস্য আলোক পাল বলেন, ওই বৃদ্ধার আত্মীয় গালিগালাজ করেছেন। সেজন্য ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবে ক্ষমা চেয়ে নিলে ৫০০ টাকায় মিটমাট করে নেওয়া হত বলে তাঁর বক্তব্য। প্রশ্ন উঠছে, এভাবে কি কারও জরিমানা করা যায় ?

বাঁকুড়া সদরের মহকুমা শাসক সুশান্ত কুমার ভক্ত বলেন, “এটা মেনে নেওয়া যায় না। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানকে বলা হয়েছে। বিডিও বিষয়টি জানানো হয়েছে। পুলিশকে বলা হচ্ছে।” মহকুমা শাসক ব্যবস্থার আশ্বাস দিলেও প্রশ্ন উঠছে, কোনও গ্রাম কমিটি কি এরকম কাজ করতে পারে?

আরও পড়ুন : Mamata-Abhishek: কবে অভিষেককে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেবেন মমতা? জানুন কুণালের পূর্বাভাস