Festival of Friendship: সারাজীবন পাশে থাকার অঙ্গীকার! বিয়ে নয়, বাংলার এই গ্রামে মালাবদল করে হয় বন্ধুত্বের উৎসব

Festival of Friendship: গ্রাম ভেদে এই উৎসবের আয়োজন হয় ৪ থেকে ১২ বছর অন্তর। এই উৎসবের মূল সূত্র জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেক মানুষকে খুঁজে নিতে হবে এক বন্ধুকে। তারপর সেই বন্ধুর সঙ্গে ফুলের মালা বদল করে সই পাতিয়ে একে অপরকে চন্দনের ফোঁটা দিয়ে শপথ নিতে হবে।

Festival of Friendship: সারাজীবন পাশে থাকার অঙ্গীকার! বিয়ে নয়, বাংলার এই গ্রামে মালাবদল করে হয় বন্ধুত্বের উৎসব
উৎসবে মাতোয়ারা গোটা গ্রামImage Credit source: TV 9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 16, 2024 | 2:26 PM

বাঁকুড়া: চেনা হোক বা অচেনা মানুষ। ভার্চুয়াল দুনিয়ায় ডিজিটাল স্ক্রিনে এক ক্লিকে বন্ধুত্বের প্রস্তাব পাঠানো বা প্রস্তাব গ্রহণই যখন দস্তুর তখন বাঁকুড়ার প্রত্যন্ত আকুই গ্রামের সয়লা উৎসব যেন সন্ধান দেয় নিখাদ বন্ধুত্বের। যে বন্ধুত্ব শুধু হাই-হ্যলোর সীমানায় আবদ্ধ নয়, একে অপরের সঙ্গে মালাবদল করে বিপদে আপদে একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর শপথ নেয়।  

কথিত আছে, একসময় বাঁকুড়া জেলার বর্ধমান সীমানা লাগোয়া এলাকায় জাতিভেদ প্রথা ও বর্ণ বৈষম্যের ব্যপক প্রভাব ছিল। আজ থেকে প্রায় দেড় শতক আগে সেই জাতি ও বর্ণ বৈষম্যের জেরে এলাকায় অশান্তি লেগেই থাকতো। তৎকালীন বর্ধমান রাজার এক নায়েব এলাকায় খাজনা আদায় করতে গিয়ে স্বচক্ষে দেখেন এই ছবি। মনে খুবই ব্যথা পান। অশান্ত এলাকাকে শান্ত করতে বুদ্ধিমান নায়েব খুঁজে বের করেন এক সামাজিক দাওয়াই। তাঁর উদ্যোগেই বাঁকুড়া ও বর্ধমান জেলার সীমানা লাগোয়া এলাকায় থাকা আকুই গ্রাম সহ আশপাশের গ্রামে চালু হয় সয়লা উৎসব। 

গ্রাম ভেদে এই উৎসবের আয়োজন হয় ৪ থেকে ১২ বছর অন্তর। এই উৎসবের মূল সূত্র জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেক মানুষকে খুঁজে নিতে হবে এক বন্ধুকে। তারপর সেই বন্ধুর সঙ্গে ফুলের মালা বদল করে সই পাতিয়ে একে অপরকে চন্দনের ফোঁটা দিয়ে শপথ নিতে হবে। সারা জীবন সুখে, দুঃখে, বিপদে আপদে একে অপরের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। প্রাচীন সেই রীতি মেনে আকুই গ্রামে ২০১৯ সালের পর মঙ্গলবার আয়োজিত হয়েছিল সয়লা উৎসবের। প্রথা অনুযায়ী সয়লার এক মাস আগে গ্রামের সমস্ত দেব-দেবীর মন্দিরে গিয়ে পান সুপুরি দিয়ে উৎসবে আসার জন্য দেব-দেবীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। সয়লার দিন সেই সব দেব-দেবীকে স্থানীয় শোভাযাত্রা সহকারে আনা হয় সয়লার মাঠে। সেখানে পুজো পাঠের পর গ্রামের সমস্ত দেব-দেবীকে সাক্ষী রেখে সই পাতানোর উৎসবে মেতে উঠলেন এলাকার মানুষ। কেউ নতুন বন্ধু খুঁজে সই পাতালেন তো কেউ পুরানো বন্ধুকেই সই পাতিয়ে ঝালিয়ে নিলেন বন্ধুত্ব। ডিজিটাল যুগের ভার্চুয়াল বন্ধুত্বের এমন রমরমার দিনেও এমন ব্যাতিক্রমী বন্ধুত্ব স্থাপনের ছবি দেখতে ভিড় জমান বহু মানুষ। এবারও উৎসবে সামিল হতে আকুই গ্রামে উপচে পড়েছিল গ্রামবাসীদের আত্মীয় স্বজন থেকে শুরু করে দূর-দূরান্তের মানুষের ভিড়।