ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্তে সিবিআই, পাশে দাঁড়িয়ে ভিডিয়ো রেকর্ডিং পুলিশের! তীব্র ভর্ৎসনা

CBI: এক মৃত বিজেপি কর্মীর বাড়ি গিয়েছিল সিবিআআই-র একটি প্রতিনিধি দল। আর সেখানে সিবিআই আধিকারিকদের পাশে দাঁড়িয়ে তদন্তের ভিডিয়ো রেকর্ড করায় তীব্র ভর্ৎসিত হলেন রাজ্য পুলিশের এক কর্মী। পাশাপাশি তাঁর হাত থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ডিলিট করা হল সেই ভিডিয়ো।

ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্তে সিবিআই, পাশে দাঁড়িয়ে ভিডিয়ো রেকর্ডিং পুলিশের! তীব্র ভর্ৎসনা
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 29, 2021 | 7:28 PM

বীরভূম: ভোট পরবর্তী হিংসা (Post Poll Violence)-র ঘটনায় রাজ্যজুড়ে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই (CBI)। রবিবার তেমনই বীরভূমের মল্লারপুর থানায় ভোট পরবর্তী একটি হিংসার ঘটনার তদন্তে আসে সিবিআই-র একটি টিম। এদিন এক মৃত বিজেপি কর্মীর বাড়ি গিয়েছিল সিবিআআই-র একটি প্রতিনিধি দল। আর সেখানে সিবিআই আধিকারিকদের পাশে দাঁড়িয়ে তদন্তের ভিডিয়ো রেকর্ড করায় তীব্র ভর্ৎসিত হলেন রাজ্য পুলিশের এক কর্মী। পাশাপাশি তাঁর হাত থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ডিলিট করা হল সেই ভিডিয়ো।

উল্লেখ্য, রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার (Post Poll Violence) মামলায় সিবিআই (CBI)-কে দিয়ে তদন্ত করানোর নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। গত ১৯ অগস্ট এই মামলার রায় দেয় পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তম ডিভিশন বেঞ্চ। খুন, অস্বাভাবিক মৃত্যু, ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধের তদন্ত করবে সিবিআই এবং অপেক্ষাকৃত কম গুরুতর মামলার তদন্ত করবে সিট। যার প্রেক্ষিতে শনিবার নদিয়া থেকে থেকে ২ ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।

এ হেন সিবিআই দলের আপাতত কোনও বিরতি নেই। শনি-রবিবারও তাদের স্পেশাল ইনভেস্টিগেটিং ইউনিট ছুটে যাচ্ছে জেলা থেকে জেলায়। রবিবার সিবিআই-র একটা দল এসেছিল বীরভূমের মল্লারপুর থানার কোট গ্রামে। জাকির হোসেন নামে এক মৃত বিজেপি কর্মীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন সিবিআই আধিকারিকরা। নেওয়া হয় পরিবারের বয়ান। জানা গিয়েছে, এই জিজ্ঞাসাবাদ যখন চলছে, তখন সঙ্গে থাকা এক পুলিশ কর্মী নিজের পকেট থেকে মোবাইল বের করে ভিডিয়ো রেকর্ড করা শুরু করেন। বিষয়টি চোখ এড়ায়নি সিবিআই অফিসারদের। আর নজরে পড়তেই ওই পুলিশ কর্মীকে ধমক দেন কেন্দ্রীয় সংস্থার এক মহিলা আধিকারিক। এরপরই ওই পুলিশ কর্মীর মোবাইল কেড়ে নিয়ে ভিডিও ডিলিট করতে নির্দেশ দেন সঙ্গে থাকা আরেক সিবিআই আধিকারিক। ডিলিট করে দেওয়া হয় ভিডিয়ো। ঘটনাস্থলে থাকা এক রাজ্য পুলিশ ওই পুলিশ কর্মীকে পুনরায় ধমকও দেন পুলিশ কর্মীকে।

প্রসঙ্গত, গত ২ মে বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর বীরভূমের একাধিক জায়গায় বিজেপি কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে। ৮ মে এমনই একটি ঘটনা ঘটে কোট গ্রামে। বিজেপি বুথ কর্মী জনৈক জাকির হোসেনকে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ব্যাপক মারধর করে বলে অভিযোগ ওঠে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই বিজেপি কর্মীকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় রামপুরহাট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকেরা কলকাতার সরকারি হাসপাতালে রেফার করেন। এর পর গত ১৬ মে জাকির হোসেনকে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পথে গাড়িতেই তাঁর মৃত্যু হয়। আট দিনের জীবন যুদ্ধে হার মানতে হয় জাকিরকে। এদিকে ওই মৃত্যুর ঘটনায় তৃণমূলের দিকে আঙুল উঠলেও পুলিশের তরফে কাউকে গ্রেফতার বা আটক করা হয়নি বলে অভিযোগ। রবিবার সেই মৃত বিজেপি কর্মীর বাড়িতেই গিয়েছিলেন সিবিআই-র আধিকারিকরা। সেখানেই তীব্র ভর্ৎসিত হলেন এক পুলিশ কর্মী।

ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্ত শুরু করা সিবিআই আধিকারিকরা সংশ্লিষ্ট তদন্তের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকেও কোনও প্রতিক্রিয়া দেননা। পুরো তদন্তই হয় কয়েকজন সিবিআই আধিকারিক দিয়ে। সেখানে সংশ্লিষ্ট থানার আধিকারিকও থাকেন তদন্তে সহায়তার জন্য। এদিনও ওই পুলিশ কর্মী ছিলেন সহায়তার জন্য। আর সেখানেও ভিডিয়ো রেকর্ড করায় তিরস্কৃত হলেন তিনি। আরও পড়ুন: ‘ত্রিপুরার বিজেপি আর বাংলার তৃণমূল- দুইই সমান,’ মমতাকে বিঁধে মন্তব্য বিমানের