Margram Bombing: ‘আমার স্বামী তৃণমূল করেন’, বিস্ফোরক ধৃত সুজাউদ্দিনের স্ত্রী, তাহলে কি মাড়গ্রাম কাণ্ডে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল?
Margram: তিনি পঞ্চায়েত সদস্য, এখনও তৃণমূল কংগ্রেসেই রয়েছেন। এমনই বিস্ফোরক দাবি করেছেন তিনি। এখানেই শেষ নয়, সুজাউদ্দিনকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন পঞ্চায়েত প্রধান ভুট্টো শেখ এবং তৃণমূলেরই একাংশ।
মাড়গ্রাম: মাড়গ্রামে বোমার (Margram Blast) আঘাতে জোড়া মৃত্যু। এর নেপথ্যে কি কংগ্রেস-তৃণমূল রেষারেষি নাকি তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে প্রাণ দিতে হল তরতাজা দুটো প্রাণকে। মাড়গ্রামে TV9 বাংলার অন্তর্তদন্তে উঠে এসেছে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল প্রধান অভিযুক্ত সুজাউদ্দিন আহমেদের। যদিও, তাঁর স্ত্রী সোনালী বিবির দাবি সুজাউদ্দিন এই কাজের সঙ্গে যুক্ত নন। তিনি পঞ্চায়েত সদস্য, এখনও তৃণমূল কংগ্রেসেই রয়েছেন। এমনই বিস্ফোরক দাবি করেছেন তিনি। এখানেই শেষ নয়, সুজাউদ্দিনকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন পঞ্চায়েত প্রধান ভুট্টো শেখ এবং তৃণমূলেরই একাংশ।
সোমবার সোনালী বিবি বলেন, “আমার স্বামী বাড়িতেই ছিলেন। তাছাড়া উনি তৃণমূলের পঞ্চায়েতের সদস্য। একসময় প্রধানও ছিলেন। উনি প্রতিটি মিটিংয়ে যান। তাহলে উনি কী করে এমন কাজ করবেন? ভুট্টোদের সঙ্গে আমার স্বামীর কোনও বিবাদ ছিল না। এখন দেখছি ভুট্টোই আমার স্বামীকে ফাঁসাতে চাইছে।”
বস্তুত, মাড়গ্রামে রবিবার বোমাবাজির ঘটনায় মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা থেকে শুরু করে ফিরহাদ হাকিম বারংবার বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপিকেও এই ঘটনার জন্য দায়ী করেছিলেন। কিন্তু আজকে সোনালী বিবি পরিষ্কার জানালেন সুজাউদ্দিন এখনও তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য। এবং ভুট্টোর সঙ্গে কোনও বিবাদ নেই। একই সঙ্গে তাঁরা তৃণমূল করেতেন। তবে এই ভুট্টোই এখন ফাঁসাতে চাইছেন সুজাউদ্দিনকে। সোনালী বিবির দাবি অনুযায়ী অভিযুক্ত সুজাউদ্দিন বিরোধী কোনও দল করেন না। ফলে, এই ঘটনায় তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের ঘটনাই সামনে আসছে বলে মনে করছেন রাজনীতিবীদরা।
শুধু তাই নয়, গ্রামের মানুষজনেরও বক্তব্য, এলাকায় নিজেদের দখলের লড়াই পাশাপাশি পঞ্চায়েতের টাকা নিজেদের মধ্যে রাখা নিয়ে লড়াইয়েরই বলি হয়েছেন এই দু’জন। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “মাড়গ্রামের ঘটনা দুঃখজনক ঘটনা। যাঁরা খুন হলেন তাঁরা তৃণমূল, যাঁরা খুন করলেন বলে অভিযোগ, তাঁরাও তৃণমূলেরই প্রতীকে জেতা। মাঝে আবার সিপিএম-কংগ্রেস-মাওবাদীদের গল্প করার লাভ কী?”বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, “বাংলায় এসবই হচ্ছে। জমি-পয়সা দখলের লড়াই হচ্ছে তৃণমূল- তৃণমূলের মধ্যেই। বাকি যা কংগ্রেস-বিজেপি করা হচ্ছে, ওসব গল্প।” যদিও,তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “তৃণমূল কর্মীদের হত্যা করার জন্য কংগ্রেস-বিজেপি-সিপিএম সকলের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখত। এই তিনটে দল একত্রিত হয়ে বাংলাকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে। সুজাউদ্দিন তাদের হাতিয়ার। খাতায় কলমে ওই তৃণমূলের হলেও ও তো আর তৃণমূলের ছিল না।”
উল্লেখ্য, শনিবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ মাড়গ্রামের হাসপাতাল মোড় এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আচমকাই বোমাবাজির শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা। স্থানীয় বাসিন্দারা বেরিয়ে দেখেন, একটি বাইক পড়ে। আরেকজন যুবক রক্তাক্ত অবস্থায় ছটফট করছেন। জানা যায়, ওই যুবকই নিউটন। ঘটনার নেপথ্যে দুটি তত্ত্ব উঠে আসে। একাংশের বক্তব্য, বোমা বাইকে নিয়ে যাচ্ছিল, তখনই বোমা ফেটে যায়। আরেক অংশের বক্তব্য, লাল্টু শেখ ও নিউটন শেখকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়েছে পরিকল্পিতভাবে। নিউটনের মৃত্যু হয় শনিবার রাতেই। রবিবার এসএসকেএম হাসপাতালে মৃত্যু হয় লাল্টু শেখের।