দরকারে ‘দেখা মিলত না’ তাঁর, ‘অপবাদ’ ঘুচিয়ে কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে শতাব্দী

Satabdi Roy: বীরভূম থেকে তিন তিনবার সাংসদ হয়েও খোদ তৃণমূল সুপ্রিমোর 'প্রিয় পাত্রী'-র বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নাকি দলের কাজে থাকেন না।

দরকারে 'দেখা মিলত না' তাঁর, 'অপবাদ' ঘুচিয়ে কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে শতাব্দী
বৈঠকে শতাব্দী, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 09, 2021 | 5:42 PM

বীরভূম: সদ্য় সমাপ্ত বিধানসভায় রাজনৈতিক চর্চার অন্যতম মূলকেন্দ্রে ছিলেন তিনি। অনুব্রত গড়েই, কেষ্টর সঙ্গে ঠাণ্ডা লড়াই বজায় রেখেও তাঁর জাজ্বল্যমান উপস্থিতি নজর কেড়েছে রাজনৈতিক মহলের। তিনি বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায় (Satabdi Roy)। বীরভূম থেকে তিন তিনবার সাংসদ হয়েও খোদ তৃণমূল সুপ্রিমোর ‘প্রিয় পাত্রী’-র বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নাকি দলের কাজে থাকেন না। সাংসদ হয়েও বীরভূমের মানুষ দরকারে-অদরকারে তাঁকে পান না। কার্যত সেই ‘অপবাদ’ ঘুচিয়ে দিয়ে নির্বাচন শেষের পর থেকেই বীরভূম চষে বেড়াচ্ছেন অভিনেত্রী সাংসদ। শুক্রবার, দলীয় কর্মীদের সঙ্গে মুরারোইতে বৈঠক করেন শতাব্দী।

এদিনের বৈঠকে বীরভূমের উন্নয়ন প্রকল্প সাংসদ তহবিলের বরাদ্দ অর্থ কোন খাতে কীভাবে খরচ করা হবে তার পরিপূর্ণ একটি খতিয়ান তৈরি করেন শতাব্দী। দীর্ঘদিন ধরে তৈরি না হওয়া রাস্তা কীভাবে তৈরি করা যায়, পাশাপাশি জাতীয় সড়ক মেরামতির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার কথাও এদিন বৈঠকে আলোচনা করেন তৃণমূল সাংসদ। ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস খতিয়ে দেখতে বীরভূমে এসেছে মানবাধিকার কমিশনের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। সে প্রসঙ্গে শতাব্দী বলেন, “কমিশনের কাছে অনুরোধ এ বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত করুন। কোনও কর্মী সে দলেরই হোক, সে ঘরছাড়া হলে আমাদের খবর দিন, আমরা সেই কর্মীকে ঘরে ফেরাব। এর দায়িত্ব শাসক শিবিরেরই।” এদিনের বৈঠকের মুরারোইয়ের প্রাক্তন প্রয়াত বিধায়ক আবদুর রহমানকেও স্মরণ করেন শতাব্দী।

তাৎপর্যপূর্ণভাবে, বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই বেশ ‘অ্যাক্টিভ’ ফর্মে দেখা গিয়েছে শতাব্দীকে। নির্বাচন আবহে আচমরা ফেসবুকে পোস্ট করে নিজের ‘অভিমানের কথা’ জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী। জানিয়েছিলেন, তাঁকে নাকি বীরভূমে কাজ করতে দেওয়া হয় না। তিনি কাজ করুন, এমনটা নাকি অনেকেই চান না। ঠারে-ঠোরে শতাব্দীর নিশানায় যে অনুব্রতই তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি খোদ তৃণমূল নেতৃত্বের। এ হেন ‘বিদ্রোহের’ বদলে তিরস্কার না জুটে ‘পুরস্কার’-ই মিলেছিল সাংসদের। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সহ-সভাপতির পদ পান তিনি। বিধানসভা নির্বাচনের পরে, প্রায় তিন বছরের ব্যবধানে ফের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে জেলা কমিটির বৈঠকে আসেন শতাব্দী। শেষ তাঁদের দেখা গিয়েছিল লোকসভা নির্বাচনের আগের বৈঠকে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, একুশের মহারণ থেকেই ধীরে ধীরে ‘স্ট্র্যাটেজি’ বদলিয়েছে তৃণমূল। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রুখতে বুথস্তরে নজরদারি থেকে শুরু করে জনসংযোগে জোর দিয়েছে ঘাসফুল শিবির। সেখানে, বীরভূমের মতো জেলায় সাংসদ হিসেবে শতাব্দীর বিরুদ্ধে ‘অনুপস্থিতি’ মানতে নারাজ শাসক শিবির। সামনেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগেই রয়েছে পুরনির্বাচনও।  তাই বাড়তি দায়িত্ব দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তি নজরও দেওয়া হচ্ছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সেদিক থেকে জেলা কমিটির বৈঠকে অনুব্রতর সঙ্গে উপস্থিতি থেকে শুরু করে ব্লক নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক, সবটাই ওপরমহলের নির্দেশ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

আরও পড়ুন: ‘সন্ধির’ পথে শতাব্দী-অনুব্রত! ৩ বছর পর জেলা কমিটির বৈঠকে উপস্থিত দুই নেতৃত্ব