বিক্ষোভ অবস্থান উঠতেই ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু বিশ্বভারতীতে, নোটিস দিল কর্তৃপক্ষ
Visva Bharati: গত ২৭ অগস্ট বিশ্বভারতীতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে তিন ছাত্রকে বরখাস্ত করার প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করেন ছাত্র ছাত্রীদের একাংশ।
বীরভূম: আদালতের নির্দেশের পরই স্বাভাবিক হচ্ছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। শুক্রবারই কলকাতা হাইকোর্ট কড়া বার্তা দেয়, দ্রুততার সঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে। এরপরই শনিবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হলো, বিশ্বভারতীর ভর্তি প্রক্রিয়া ও ফল প্রকাশের কাজ চলবে।
গত ২৭ অগস্ট বিশ্বভারতীতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে তিন ছাত্রকে বরখাস্ত করার প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করেন ছাত্র ছাত্রীদের একাংশ। যা ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যেতে থাকে রবি-তীর্থের পরিস্থিতি। তার জেরে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেয়, বিশ্বভারতীতে ভর্তি প্রক্রিয়া ও ফল প্রকাশের কাজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হচ্ছে।
কলকাতা হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে শুক্রবার থেকে অবস্থান বিক্ষোভ ওঠার পরই শনিবার সকালে বিশ্বভারতীর তরফে নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির যে প্রক্রিয়া ও ফল প্রকাশের যে কাজ তা স্বাভাবিকভাবেই শুরু করবে। উল্লেখ্য, এই ফল প্রকাশ স্থগিত ও ভর্তি প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত সেল তা বন্ধ রাখায় প্রতিবাদে সরব হন পড়ুয়ারা। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে ইমেলও পাঠানো হয় বলে সূত্রের দাবি।
সম্প্রতি, বিশ্বভারতী থেকে সাসপেন্ড করা হয় তিন পড়ুয়াকে। ফাল্গুনী পান, সোমনাথ সৌ এবং রূপা চক্রবর্তীকে তিন বছরের জন্য বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি, পদার্থ বিজ্ঞানের দুই অধ্যাপক পীযুষকান্তি ঘোষ ও অরণি চক্রবর্তীকে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে সাসপেন্ড করে বিশ্বভারতী। আচমকা এই সাসপেনশন ও পড়ুয়াদের বরখাস্তের নোটিসে কার্যত ক্ষোভে ফেটে পড়েন পড়ুয়া ও অধ্যাপকদের একাংশ।
তিন পড়ুয়াকে বরখাস্ত করার প্রতিবাদে ও তার কারণ জানতে চেয়ে আন্দোলনে নামেন ছাত্রছাত্রীরা। উপাচার্যের বাড়ির বাইরে লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয়। এই আন্দোলন গড়ায় আদালতের দরজা পর্যন্ত। শুক্রবারই কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি প্রশ্ন করেন, “এই বিক্ষোভের কারণ কী?” আন্দোলনরত পড়ুয়াদের আইনজীবী বলেন, “ভাইস চ্যাঞ্চেলর পালাতে চাইছেন। নিজেকে আটকে রাখলে লোকে কী করবে? পিস ফুল এজিটেশন চলছিল। কেউ ওনাকে বিরক্ত করেনি”। এই বক্তব্যে অসন্তুষ্ট বিচারপতি বলেন, তা হলে কি পড়াশোনা বন্ধ থাকবে? ছাত্র সংগঠন ও শ্রমিক সংগঠন তো এক নয়। এরপরই আদালত নির্দেশ দেয়, বিক্ষোভ করতে ইচ্ছে হলে উপাচার্যের বাসভবন থেকে ৫০ মিটার দূরে করতে হবে।
একই সঙ্গে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, দুপুর ৩টের মধ্যে অবস্থানমুক্ত করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। তিন জন পুলিশ কর্মী সর্বক্ষণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মোতায়েন থাকবে। আদালত জানিয়ে দেয়, ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ অবশ্যই শোনা হবে, তবে তার আগে তুলতে হবে অচলাবস্থা। আদালতের নির্দেশ আসতেই বিশ্বভারতী চত্বরে পুলিশ পৌঁছয়। অবস্থানকারীরাও অবস্থান তুলে নেন। আরও পড়ুন: ‘মানুষ ওদের ঝেঁটিয়ে তাড়িয়েছে, তবু উৎপাত চালিয়ে যাচ্ছে’, বিশ্বভারতী প্রসঙ্গে সিপিএমকে তোপ দিলীপের