Rajnath Singh at Visva Bharati UPDATES: ইগো না রেখে বড় মনে কাজ করুন, ছোট মনে কিছু করবেন না: রাজনাথ
Visva Bharati: পড়ুয়াদের বার্তা প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর, "জীবনে যে কাজই করবেন সেরাটা দিন, চেষ্টার কোনও শেষ হয় না। লক্ষ্যে পৌঁছতে সবসময় চেষ্টা করে যেতে হবে।"
বোলপুর: বিশ্বভারতীর সমাবর্তনে যোগ দিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং (Defence Min Rajnath Singh)। শুক্রবার শান্তিনিকেতনে এই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবারই পৌঁছে যান তিনি। অন্ডাল বিমানবন্দর থেকে পৌঁছে যান বোলপুরে। শুক্রবার সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে রাজনাথ সিং বলেন, “সাধারণত এ ধরনের অনুষ্ঠান থাকলে আমি একদিনেই ফিরে যাই। কিন্তু বিশ্বভারতী ও গুরুদেবকে জানব বলে আমি একদিন অতিরিক্ত রেখেছি।” প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর এদিনের বক্তব্যের ছত্রে ছত্রে উঠে এসেছে জীবনবোধে রবি-আলোর প্রভাব। রাজনাথ বলেন, বিশ্বভারতীর নামেই তার বৈশিষ্ট্য ও গুরুদেবের জীবনবোধ স্পষ্ট হয়। বিশ্বভারতী এমন শব্দ, যেখানে বিশ্বও আছে, ভারতীও আছে। অর্থাৎ সমস্ত বিশ্বের আচার বিচার ও ব্যবহারকে সঙ্গে নিয়ে ভারতের সম্পর্কের বিকাশই লক্ষ্য।
- রাজনাথ সিং বলেন, জীবনে যে কাজই করবেন সেরাটা দিন। চেষ্টার কোনও শেষ হয় না। লক্ষ্যে পৌঁছতে সবসময় চেষ্টা করে যেতে হবে। কখনও নিরাশ হবেন না। : রাজনাথ
- সাধারণত এ ধরনের অনুষ্ঠান থাকলে আমি একদিনেই ফিরে যাই। কিন্তু বিশ্বভারতী ও গুরুদেবকে জানব বলে আমি একদিন অতিরিক্ত রেখেছি। এটা ঠিক, এক, দু’ দিনে বিশ্বভারতী বা গুরুদেবকে জানা সম্ভব নয়। : রাজনাথ
- বিশ্বভারতী তীর্থের থেকে কোনও অংশে কম নয়। পশ্চিমবঙ্গের একটা ধর্মীয় তীর্থস্থান যদি গঙ্গাসাগর হয়, তবে শিক্ষার তীর্থস্থান এই শান্তিনিকেতন। তফাৎ এটুকুই, গঙ্গাসাগরে দূর থেকে গঙ্গা এসে সাগরে বিলীন হয়। শান্তিনিকেতন থেকে পড়ুয়াদের রূপে বের হওয়া জ্ঞান গঙ্গা দূরে দূরে যায়, নিজেদের জ্ঞানে অনেক ক্ষেত্রকে সিঞ্চিত করে। : রাজনাথ
- বিশ্বভারতীর মোটো হল, যেখানে গোটা বিশ্ব একই নীড়ে। সমস্ত বিশ্বের প্রতি ভারতীয় ভাবের প্রকাশ। বিশ্বভারতী শিক্ষার মন্দির। গুরুদেবের জ্ঞানের মূর্ত স্বরূপ। : রাজনাথ
- বিশ্বভারতীতে আসা আমার জন্য অবিস্মরণীয় মুহূর্ত। আর আপনারা তো আপনাদের অল্প বয়সেই এখানে আসছেন, থাকছেন। : রাজনাথ
- ভারতীয় জাতীয়তাবাদ গুরুদেবের ব্যবহারেও দেখা গিয়েছে। জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের পর তিনি নাইটহুড উপাধি ত্যাগ তার বড় প্রমাণ। : রাজনাথ
- এখন দেশ যখন প্রগতির পথে এগোচ্ছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিশ্বের দরবারে নিজের ছাপ রাখছে, মেক ইন ইন্ডিয়া থেকে মেক ফর দ্য ওয়ার্ল্ডের দিকে এগোচ্ছে, এটা গুরুদেবের দেখানো লক্ষ্যের পথে এগোনো। : রাজনাথ
- এভাবেই আমরা এগোতে থাকলে সেই দিন দূরে নয়, যেদিন আমাদের দেশের অর্থনীতি অন্যতম দেশ হিসাবে শীর্ষে পৌঁছে যাবে। আমাদের অর্থনীতি বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি হিসাবে প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাচ্ছে। : রাজনাথ
- আমার মনে হয় ২০৪৭ সালের মধ্যে আমাদের দেশ তৃতীয় বা দ্বিতীয় নয়, ‘টপ ইকোনমি’ রূপে বিশ্বের সামনে আসবে। : রাজনাথ
- রাজনাথের বক্তব্যে উঠে আসে অষ্টদশ শতাব্দীর কথা। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রাজা রামমোহন রায়ের কথাও উঠে আসে তাঁর বক্তব্যে।
- গুরুদেবের বিশ্বাস ছিল, সোশ্যাল ট্রান্সফরমেশন না হলে, সমাজ থেকে কুসংস্কার না দূর হলে, মহিলাদের ক্ষমতায়ন না হলে দেশের পক্ষে এগোনো কঠিন। : রাজনাথ
- নতুন এডুকেশন পলিসি নিয়েও এদিন বলেন রাজনাথ। বলেন, নতুন National Education Policy তে বাচ্চাদের পার্সোনালিটি ডেভেলপমেন্ট, শিক্ষক-পড়ুয়ার অনুপাতেও নজর দেওয়া হয়েছে।
- রাজনাথের মুখে ‘চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির’।
- আমি সকলকে বলব, প্রত্যেকে জীবনে কিছু ভাল করুন, নতুন চিন্তাভাবনা রাখুন, জীবন ও সমাজের প্রতি কিছু ভাল কাজ করে এগিয়ে চলুন। জীবনে যাই করবেন, ভাববেন, এর জন্য দেশ ও মানবতা কতটা উপকৃত হবে। : রাজনাথ
- আপনারা সকলে জানান, মহাত্মা গান্ধীর রাজনৈতিক গুরু গোপালকৃষ্ণ গোখলে বলেছিলেন, ‘What Bengal thinks today, India thinks tomorrow’। এই কথনকে আরও একবার প্রমাণ করা দরকার। এই দায়িত্ব আপনাদের মতো যুবাদের কাঁধেই। : রাজনাথ
- আমার মনে হয় বাংলা ‘re-awakening’ দরকার। যাতে এই ভূমি আরও একবার গোটা দেশকে জ্ঞান বিজ্ঞান, দর্শনের ক্ষেত্রে নতুন পথ দেখাবে। : রাজনাথ
- এখানকার ফ্যাকাল্টিদের কাছেও আমার অনেক প্রত্যাশা। একবার আমি একটা লেখা পড়েছিলাম। যার অর্থ, কোনও বাচ্চা যেমন, তার সঙ্গে যদি আপনিও সেই ব্যবহারই করেন, তাহলে সেও একই থাকবে। বরং তার সঙ্গে এমন ব্যবহার করা উচিত, যা ও ভবিষ্যতে হতে পারে। তাহলে সেও ভবিষ্যতে তেমনই হবে। একটা বাচ্চার বড় হওয়া নির্ভর করবে ওর বেড়ে ওঠার উপর। : রাজনাথ
- জীবনে এগোতে স্বপ্ন দেখা দরকার। তবে সেই স্বপ্ন যেন আপনাকে নিয়ন্ত্রণ না করে। জীবনে ওঠাপড়া আসবে। তবে দিকভ্রষ্ট হলে হবে না। সকলে মিলে কাজ করতে হবে। : রাজনাথ
- সমাজের প্রতি সবসময় কৃতজ্ঞ থাকুন। আপনার সাফল্যে যে মানুষটা জামা বানান, যে মানুষটা ফসল ফলান, যে মানুষটার জুতোর কারখানা থেকে জুতো আসে, যার চাষ করা চা আপনি খান, সকলের অবদান আছে। যে ঋণ শুধুমাত্র টাকা দিয়ে কেনা হয় বলেই মিটিয়ে যাওয়া যায় না। : রাজনাথ
- কোনও ইগো রাখবেন না। কোনও কাজ করতে চাইলে বড় মনে কাজ করুন, ছোট মনে কিছু করবেন না। যার মন বড়, তার সুখের প্রাপ্তিও অনেক বেশি। : রাজনাথ
- আপনারা সকলে এখন ‘লাইফ অব ক্যাম্পাস’ থেকে ‘ক্যাম্পাস অব লাইফ’-এ প্রবেশ করবেন। এখানে আপনাদের নাম, আপনাদের অভিভাবকদের নামের সঙ্গে এই বিশ্বভারতীর নামও জুড়ে গেল। আপনারা ভবিষ্যতে ভাল বা মন্দ করলে, তার সঙ্গে বিশ্বভারতীর নামও কিন্তু থাকবে। : রাজনাথ