Human Trafficking: ৫০ লাখ খরচ করলেই ‘পিছন দরজা’ দিয়ে আমেরিকায় ঢুকে যাবেন! জানুন কীভাবে

কানাডার মতো একটা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যেভাবে মানব-পাচার চক্রে জড়িয়ে রয়েছে, সেটা দুনিয়ায় বিরল। আর কানাডার সরকার যেভাবে সব জেনেশুনেও এতে ইন্ধন দিয়ে যাচ্ছে, তারও কোনও তুলনা সম্ভবত কোথাও মিলবে না।

Human Trafficking: ৫০ লাখ খরচ করলেই 'পিছন দরজা' দিয়ে আমেরিকায় ঢুকে যাবেন! জানুন কীভাবে
৫০ লাখ খরচ করলেই 'পিছন দরজা' দিয়ে আমেরিকায় ঢুকে যাবেন! জানুন কীভাবেImage Credit source: Canva
Follow Us:
| Updated on: Jan 11, 2025 | 12:17 PM

বছর তিনেক আগের কথা। কানাডা থেকে অবৈধভাবে আমেরিকায় ঢুকতে গিয়ে ঠাণ্ডায় জমে মারা গিয়েছিল বাবা-মা-মেয়ে। মাইনাস ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ঠাণ্ডায় টানা তিনদিন মানিটোবায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিল। দালাল জানিয়েছিল, ওখানে থাকতে, সুযোগ পেলেই আমেরিকায় ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। সেই সুযোগ আর হয়নি। ওখানেই ঠাণ্ডায় জমে মারা যায় গুজরাটি পরিবারটি। ভাগ্যের পরিহাস বোধহয় একেই বলে।

সম্প্রতি ওই পরিবারের এক সদস্যের বিরুদ্ধে আমেরিকায় অবৈধ পথে টাকা পাঠানোর অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনার তদন্ত শুরু করে ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। ইডি-র তদন্তে উঠে আসছে, ২০২২ সালে কানাডার এক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির নথি দিয়ে ওদেশে পাঠানো হয়েছিল গুজরাটের বাসিন্দা জনৈক জগদীশ প্যাটেলকে। এই জগদীশই এক মাস পরে স্ত্রী ও মেয়ে সহ আমেরিকায় ঢুকতে গিয়ে ঠান্ডায় জমে মারা যান।

ইডির তদন্ত একটা জমাট রহস্যের উপর থেকে পর্দা সরিয়ে দিয়েছে। বিষয়টা এখন জলের মতো স্পষ্ট। কানাডার ছোট-বড় বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রীতিমতো সক্রিয় আন্তর্জাতিক মানুষ পাচার চক্র। তাও আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিতরে। আর সেই চক্রে জড়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী, এজেন্টদের একটা অংশ। ইডি অফিসারদের দাবি, কানাডার অন্তত ২৬০টি কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়ে এই চক্র সক্রিয়। এর মধ্যে অনুমোদিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কম নয়। এদের মোডাস অপারেন্ডি খুব সহজ। হয় ছাত্র সাজিয়ে ভিসার বন্দোবস্ত করে দেওয়া। নয়তো ডাঙ্কি রুট অর্থাত্‍ অবৈধভাবে কানাডায় ঢোকার বন্দোবস্ত করা। এবং কানাডা থেকে সুযোগ মতো অন্যান্য দেশে পাঠিয়ে দেওয়া।

স্বভাবতই কানাডা থেকে আমেরিকায় অবৈধ প্রবেশের খরচ সবথেকে বেশি। মাথাপিছু ৫০ থেকে ৭৫ লাখ টাকা। জার্মানি, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডসে ঢোকার খরচও কম নয়, কমবেশি ৩৫ থেকে ৫০ লাখ টাকা। দীর্ঘদিন ধরেই কানাডার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে এই পাচার চক্র চলছে। সবাই সবটা জানে, আবার কেউ কিছু জানেও না। তদন্তে নেমে গত ১০ ও ১১ ডিসেম্বর দেশের ৮টি কোম্পানির অফিসে তল্লাশি চালিয়েছে ইডি। সবকটাই স্টুডেন্ট ও ভিসা কাউন্সেলিং পরিষেবা সংস্থা। এইসব খতিয়ে দেখে ইডির চোখ কপালে উঠেছে। দেখা যাচ্ছে, একেবারে কানাডার নির্দিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোটা ধরে ধরে পড়ুয়া পাঠাচ্ছে এই সব সংস্থা।

কানাডা থেকে কোথায়, কোথায় তাঁদের নিয়ে যাওয়া হবে, সেই সবও ঠিক হয়ে রয়েছে। অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে অবৈধ ভাবে আমেরিকায় চরম বিপদের মুখে রয়েছেন কয়েক হাজার ভারতীয়। প্রতি বছরই দলে, দলে ভারতীয়কে ফেরত পাঠাচ্ছে আমেরিকা। বাইডেনের জমানায় গত ৪ বছরে ৩৮ হাজার ভারতীয় পড়ুয়াকে ঘাড় ধরে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এদের অনেকেই ঘটিবাটি বিক্রি করে আমেরিকায় গিয়েছিলেন। ট্রাম্প পদে বসার পর তো সাড়ে সর্বনাশ। কানাডার মতো একটা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যেভাবে মানব-পাচার চক্রে জড়িয়ে রয়েছে, সেটা দুনিয়ায় বিরল। আর কানাডার সরকার যেভাবে সব জেনেশুনেও এতে ইন্ধন দিয়ে যাচ্ছে, তারও কোনও তুলনা সম্ভবত কোথাও মিলবে না।