নন্দীগ্রামে ভোট মিটলেও জারি সন্ত্রাস, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে থানায় ডেপুটেশন জমা বিজেপির

এই ঘটনায়, জেলা তৃণমূল কো অর্ডিনেটর ও মৎসমন্ত্রী অখিল গিরি বলেন, "নন্দীগ্রামে কোথাও কোনও সন্ত্রাস হচ্ছে না। বিজেপি মিথ্যাই অভিযোগ করছে। বিজেপি একটি তালিকা তৈরি করে দিক। নিরাপত্তা নিয়ে ভাবতে হবে না।"

নন্দীগ্রামে ভোট মিটলেও জারি সন্ত্রাস, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে থানায় ডেপুটেশন জমা বিজেপির
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 08, 2021 | 7:46 PM

পূর্ব মেদিনীপুর: ভোট মিটলেও জারি সন্ত্রাস। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ভরকেন্দ্র নন্দীগ্রামও (Nandigram) তার ব্যতিক্রম নয়, এমনটাই অভিযোগ বিজেপির। ভোটের পরে শাসক শিবিরের লাগামহীন সন্ত্রাস ও পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার, নন্দীগ্রাম থানায় ডেপুটেশন জমা দিল পদ্ম শিবির।

তমলুকের সাংগঠনিক জেলা বিজেপি (BJP) নেতৃত্বের অভিযোগ, ভোটের ফলাফলের পর থেকেই কার্যত অশান্ত নন্দীগ্রাম। এলাকার ১ ও ২ নম্বর ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাণ্ডব চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। বিজেপি কর্মীদের ঘরবাড়ি দোকান জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দুষ্কৃতীদের হামলায় চিল্লগ্রাম এর বাসিন্দা দেবব্রত মাইতি নামে বিজেপি কর্মীর মৃত্যুও হয় বলে অভিযোগ। রাজনৈতিক হিংসার ভয়ে ঘরছাড়া একাধিক বিজেপি কর্মী। এত কিছুর পরেও পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলেই অভিযোগ পদ্ম শিবিরের।

তমলুক সাংগঠনিক বিজেপি জেলা সভাপতি নবারুণ নায়েক এদিন বলেন, “আমাদের কর্মীদের মারধোর করা হচ্ছে। ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছে। প্রায় শতাধিক কর্মী আজ ঘরছাড়া। তারা ভয়ে ফিরতে পারছে না। ফিরলেই তাদের উপর ফের হামলা করা হচ্ছে। আমাদের দলীয় কর্মীদের কোনও নিরাপত্তা নেই। পুলিশ কিছুই করছে না। আমরা তাই আজ ডেপুটেশন জমা দিয়েছি। প্রশাসন এর বিচার করুক।” ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের একাধিক ঘটনার জবাব চেয়ে ও হাইকোর্ট এর নির্দেশে পুলিশ বিজেপি কর্মীদের বাড়ি ফেরাতে কি ব্য়বস্থা নিয়েছে তা জানতে চেয়ে নন্দীগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দেয় গেরুয়া শিবির। উপস্থিত ছিলেন তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি নবারুণ নায়েক, প্রলয় পাল ,সাহেব দাস-সহ অন্যান্য বিজেপি নেতৃত্বরা।

এই ঘটনায়, জেলা তৃণমূল কো অর্ডিনেটর (TMC) ও মৎসমন্ত্রী অখিল গিরি বলেন, “নন্দীগ্রামে কোথাও কোনও সন্ত্রাস হচ্ছে না। বিজেপি মিথ্যাই অভিযোগ করছে। বিজেপি একটি তালিকা তৈরি করে দিক। নিরাপত্তা নিয়ে ভাবতে হবে না। বিজেপি কর্মীরা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন সে দায়িত্ব আমাদের। ওঁদের কোনও ক্ষতি হবে না।”

বঙ্গ নির্বাচনের এপিসেন্টার ছিল নন্দীগ্রাম। কারণ, নন্দীগ্রামের মাটিতে লড়ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যাঁর বিপরীতে ছিলেন তাঁরই একদা অনুগামী, ‘সেনাপতি’ অধুনা বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। কার্যত এই নন্দীগ্রাম থেকেই একদিন লড়াই করেছিলেন দুই হেভিওয়েট নেতৃত্ব। তবে একসঙ্গে। প্রায় চোদ্দ বছর পর সেই মাটিতেই সেই দুই নেতৃত্বই পরস্পরের বিরোধী হয়ে লড়তে নামেন। যার জেরেই বঙ্গ ভোটে কার্যত মমতা-শুভেন্দু দ্বৈরথ কেবল রাজ্য রাজনীতিতে নয়, প্রভাব ফেলেছিল জাতীয় রাজনীতিতেও। নির্বাচনে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোটোফিনিশে হারিয়ে নন্দীগ্রামের বিধায়ক নির্বাচিত হন শুভেন্দু। শুধু বিধায়কই নন, রাজ্যের একমাত্র বিরোধী দলনেতা হিসেবেও বিধানসভায় জায়গা করে নেন অধিকারী পুত্র। বাংলার রাজনীতিতে, শুধু দলীয় ক্ষমতায় আসীন না থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একক মুখ হিসেবেও পরিচিত হন নন্দীগ্রামের ‘নায়ক’।

আরও পড়ুন: ‘তৃণমূলের নামে মিথ্যা অপবাদ ও কুৎসা প্রচারের জন্য দুঃখিত’, মাইকিং করে ‘ভুল স্বীকার’ বিজেপি কর্মীদের!