Abhishek Banerjee Update: ‘ভোট দিতে না পারলে বাড়ি গিয়ে ফোন করে মতামত জানান’, ব্যালট বাক্স-বিশৃঙ্খলার পর ফোন নম্বর দিলেন অভিষেক
Abhishek Banerjee: ঘুঘুমারিতে সভায় দলীয় নেতৃত্বকেই বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন দলের এই কর্মসূচি কেনই বা হচ্ছে তৃণমূলের নবজোয়ার কর্মসূচি কেনই বা নির্বাচনের আগে এই ভোটগ্রহণ পর্ব, তার কারণও ব্যাখ্যা করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
কোচবিহার: ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচির আজ দ্বিতীয় দিন । ঘুঘুমারিতে সভায় দলীয় নেতৃত্বকেই বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন দলের এই কর্মসূচি কেনই বা হচ্ছে তৃণমূলের নবজোয়ার কর্মসূচি কেনই বা নির্বাচনের আগে এই ভোটগ্রহণ পর্ব, তার কারণও ব্যাখ্যা করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, “কেউ যদি নতুন করে রাজনীতিতে এসে পঞ্চায়েতে জেতে, সার্বিকভাবে আমার এলাকার গ্রাম উপকৃত হবেন। আপনি তাঁকে মান্যতা দিয়ে যদি আমাদের কাছে মতামত জানান, তৃণমূল কংগ্রেস সব শক্তি প্রয়োগ করে গণতান্ত্রিকভাবে তাঁকেই জেতাবে।” ব্যালট বাক্স ভাঙচুর, হাজারও বিতর্কের মাঝে আরও একবার বার্তা দিলেন অভিষেক। তিনি আর কী কী বললেন দেখুন…
KEY HIGHLIGHTS
- কেন কোচবিহার থেকে যাত্রা শুরু করলাম? আমি গতকাল দিনহাটায় ছিলাম। সেখান থেকে সাহেবগঞ্জে সভা করেছি। তারপর সিতাই, গোসাইমারি, শীতলকুচি গেছি। তারপর রাতে মাথাভাঙায় গিয়েছি। সেখানে অধিবেশন ছিল। আজ এখানে। মানুষ যে সংখ্যায় আসছেন, এটা প্রমাণ করে তৃণমূলের নবজোয়ার এসেছে। আজ এ কর্মসূচি স্বার্থক।
- আগামী দিনে পঞ্চায়েত স্তরে প্রার্থী তৃণমূল কংগ্রেস কিংবা তৃণমূলের কোনও নেতা করবে না, প্রার্থী আপনারা ঠিক করবেন। সাধারণত দেখবেন, যে দল ক্ষমতায় থাকে, সে দল কোনওদিন রাস্তায় নামে না। যারা জনসংযোগ যাত্রা করে, তারা সাধারণত বিরোধী হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আপনারা তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী করেছেন। আমরা পারতাম, জেলাস্তর, ব্লক স্তরে নেতাদের থেকে মতামত নিয়ে বদ্ধ করে বসে প্রার্থী নির্ধারণ করতে। কিন্তু কেন এসেছি?
- আমি বরাবরই বলেছি, মানুষ যাঁকে সার্টিফিকেট দেবে, তাঁকেই টিকিট দেব। মানুষ ঠিক করবে প্রার্থী কে হবেন?
- অনেক রাজনৈতিক নেতাই অনেক কথা বলেন। কিন্তু ৬০ দিন বউ-বাচ্চা-বাবা-মা সংসার ছেড়ে রাস্তায় পড়ে রয়েছি। আপনাদের সঙ্গে থাকছি, এত গরমেও রাস্তায় থাকছি। আমার আজই চারটে সভা রয়েছে. তারপর তুফানগঞ্জ যাব।
- আপনাদের বুথে এলাকায় ভাল লোক কিংবা মহিলা রয়েছেন, আপনি তাঁকে মান্যতা দিয়ে যদি আমাদের কাছে জানান, তাহলে তৃণমূল সব শক্তি দিয়েই তাঁকেই জেতাবে।
- নীল রঙের একটা ছোট্ট ক্যাম্প করা হয়েছে। সেখানে তিন চারটে ব্যালট বক্স থাকবে। সেখানে আপনাদের ব্যালট পেপার দেওয়া হবে। যারা বয়স্ক, ভোট দিতে পারবেন না, তাঁরা বাড়ি ফিরে যাবেন। আপনাদের একটা নম্বর দিচ্ছি, সেখানে বাড়ি থেকে ফোন করেও আপনাদের মতামত জানাতে পারবেন। আপনাদের গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা, পিএস থেকে যাঁকে জেতাতে চান, সেটা জানাতে পারবেন।
- ৭৮৮৭৭৭৮৮৭৭ এই নম্বরে ফোন করে মতামত জানাতে পারবেন।
- কাউকে একটু প্রভাবিত করে, সুপারিশ করে একটা ব্যালট পেপারে নিজের নামটা দেওয়ানোর চেষ্টা করলে, সেটা কিন্তু নয়। যদি আমার নামেই ১০ টা রেকমেনডেশন পড়ে, প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে আমি এগিয়ে থাকলাম, এটা ভাবলে ভুল। যে নম্বরটা দিলাম, সেখানে তৃণমূল সমর্থকরা তো ফোন করলাম, সাধারণ জনগণও ফোন করছেন। তাই যাঁরা ভাবছেন নিজেদের নামে ২০টা ভোট বেশি ফেলিয়ে আমার জায়গা সুরক্ষিত করলাম, তাঁরা মুর্খের স্বর্গে বাস করছেন।
- এই প্রক্রিয়া দুর্নীতিমুক্ত পঞ্চায়েত গড়ার লক্ষ্যে। এটা তার প্রাথমিক ধাপ।
- আপনাদের পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন থাকবে। কারোর বাবার নাম, বাড়ির ঠিকানা, ফোন নম্বর থাকবে না। নিশ্চিন্তে ভোট দিন। কেউ জানতে পারবেন না। তবে শৃঙ্খলাপরায়ণ হয়ে ভোট দেবেন।
- মোদী যবেথেকে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, কোচবিহারে একটা পর্যালোচনা বৈঠকও করেনি বিজেপি। যদি এখানে কোথাও করে থাকে, তাহলে আমি এখানে যাত্রা বন্ধ করে দেব। সেখানে আমি পা রাখব না। যদি কেউ দেখাতে পারে ৯ বছরে একটাও মিটিং করেছে বিজেপি, সেখানে আমি ভোট চাইতে যাব না।
- পঞ্চায়েতে তৃণমূল জিতলেও রাস্তা হচ্ছে, হারলেও হচ্ছে। একশো দিনের টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র। বাংলাই একমাত্র রাজ্য, যেখানে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে পারেনি বিজেপি।
- ২০১৯ কিংবা ২০২১এ যাঁরা ভোট দিয়েছিলেন, প্রথমে ৯ টার মধ্যে ৭টায় হেরেছিলাম, পরে দিনহাটা উপনির্বাচনে আমরা ১ লক্ষ ৬৪ হাজার ব্যবধানে সেটি জিতেছি। আজ ৯টা বিধায়কের মধ্যে ৬ বিধায়ক বিজেপি। কিন্তু একদিন দেখান বিধানসভায় গিয়ে আপনাদের স্বার্থে একজনও কেউ প্রশ্ন করেছেন? গলায় গেরুয়া উত্তরীয় জড়িয়ে বিধানসভায় গিয়ে এক মিনিটের মধ্যে ওয়াকআউট করে বিধানসভা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন। কলকাতায় গিয়ে ফুর্তি করছেন। এই বিধায়ক নির্বাচিত করেছিলেন?
- আপনারা যে সাংসদকে নির্বাচিত করেছিলেন, তিনি দুটো মন্ত্রকের দায়িত্বে রয়েছেন, তিনি যুবকল্যাণ ও ক্রীড়া ও স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রতিমন্ত্রী। সেই স্বরাষ্ট্র দফতরের অধীনে বিএসএফ। বিএসএফ কীভাবে কোচবিহারের মানুষের ওপর, রাজবংশীদের ওপর অত্যাচার করেছে, আপনারা দেখেছেন।
- আপনারা ধর্মের নামে ভোট দিয়েছিলেন, আপনারা রামমন্দিরের নামে ভোট দিয়েছিলেন, আপনারা ভোট দিয়েছিলেন মোদীজির ৫৬ ইঞ্চি ছাতি দেখে। আর এখন আপনারা কী দেখছেন? আপনার বাড়িতে ছাদ নেই, আপনার পাড়ার রাস্তার টাকা মোদী আটকে দিয়েছে। কিন্তু রামমন্দির হচ্ছে। আগামীদিনে ধর্মের নামে ভোট নয়। ভোট মানুষের ন্যায্য অধিকারকে সামনে রেখে করতে হবে।
- কিছু লোকের অসুবিধা হবে। কিছু লোক তো রয়েছেন, যাঁরা ভেবেছেন, আমার সুপারিশ ব্লক প্রেসিডেন্ট কিংবা বিধায়ক করে দেবেন, আমি টিকিট পেয়ে যাব। ১০০ জনের মধ্যে ৫-৭ জনের তো অসুবিধা হবেই। দীর্ঘদিন ধরে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে সন্ত্রাসের বাতাবরণ দেখেছি….২০১৮ কিংবা ২০১৩ বা ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নয়, ৭২ সালের পঞ্চায়েতও যদি মনে করে দেখেন, কী সন্ত্রাস হয়েছিল। আর সিপিএম ৭৭ সালে আসার পর তো কী হয়েছিল, না বলাই ভাল। একটা ভোটকে কেন্দ্র করে কত লোকের মৃত্যু। সেই পরিস্থিতি বদলাতেই শাসকদলের প্রতিনিধি হয়ে রাস্তায় নেমেছি।
- টিভি খুললেই দেখছেন মোদীজির ৫৬ ইঞ্জি ছাতি আর হাতির শুঁড়ে হাত বোলাচ্ছেন। আপনি যদি ধর্মের ভিত্তিতে ভোট দেন, তাহলে ধর্মের ভেদাভেদ হবেই। আর যদি উন্নয়নের ভিত্তিতে ভোট দেন, উন্নয়ন হবে।