Firhad Hakim: ‘অনুপ্রবেশকারী নিশীথ, চোর বিএসএফ’ নির্ঘোষ ফিরহাদের
WB By-Election 2021: কিছু সময় আগে নাগরিকত্ব ইস্যুকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের নাগরিকত্ব নিয়ে একটি বিতর্ক সৃষ্টি হয়।
কোচবিহার: পুজো মিটলেও বঙ্গে এ বার উপনির্বাচনের ডঙ্কা বেজেছে। সেই উপলক্ষ্যে দিনহাটায় রবিবার প্রচার করতে যান রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম। প্রচারমঞ্চ থেকে সরাসরি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিককে তোপ দাগার পাশাপাশি সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে ‘চোর’ বলে কটাক্ষ করলেন ফিরহাদ (Firhad Hakim)।
এদিন, তৃণমূল নেতা বলেন, “এখানকার নেতা একজন অনুপ্রবেশকারী। সেই নেতা নিশীথ প্রামাণিক এখন নিজেকে বাঁচাতে মোদীর পায়ে গড়াগড়ি দিচ্ছেন। আর কেন্দ্রের সেই প্রধানমন্ত্রী গোটা দেশ তো বেচে দিয়েইছে, এখন বলছে সীমান্তেও নাকি বিএসএফরা আরও বেশি এলাকা জুড়ে পাহারা দেবে। বিএসএফ তো চোর বটেই এ বার আরও বেশি চুরি করবে। আগে মায়েরা বাচ্চাদের ভয় দেখাতে বলতেন, ‘সো যা বেটা নেহি তো গব্বর আ যায়েগা’ আর এখন মায়েরা বলেন, ‘সো যা বেটা নেহি তো মোদী আ জায়েগা।’ এই হচ্ছে দেশের অবস্থা! জনগণের কাছে অনুরোধ করব, আপনারা মনে রাখুন এই ভোট টা কিন্তু ববি হাকিমের নয়, পরেশ অধিকারীর নয়, এই ভোট টা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোট। জনগণই ঠিক করবেন, অনুপ্রবেশকারীকে জায়গা দেবেন না বাংলার মানুষকে।”
উল্লেখ্য, কিছু সময় আগে নাগরিকত্ব ইস্যুকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের নাগরিকত্ব নিয়ে একটি বিতর্ক সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশের এক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়, নিশীথ ভারতের মন্ত্রী হয়ে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন। নীচে অবশ্য উল্লেখ করা হয়, নিশীথের পূর্বপুরুষ বাংলাদেশের বাসিন্দা। কিন্তু নিশীথের জন্ম, বেড়ে ওঠা সবই ভারতে। তিনি পরিপূর্ণভাবেই ভারতের নাগরিক। তবে, এই একটিমাত্র উক্তির জেরে বিতর্ক কম হয়নি। নিশীথের নাগরিকত্বকে কেন্দ্র করে বিস্তর জলঘোলাও হয়।
অন্য়দিকে, পাকিস্তান লাগোয়া পাঞ্জাব এবং বাংলাদেশ লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গ ও অসমে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) ‘অপারেশনাল’ ক্ষমতার চৌহদ্দি বাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। গত সোমবার, ১১ অক্টোবর, একটি গেজেট নোটিফিকেশন জারি করে কেন্দ্র। তাতেই বিএসএফের ‘ক্ষমতা’ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে এই তিন রাজ্যে সীমান্ত থেকে মূল ভূখণ্ডের ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় অপারেশনাল কাজকর্ম অর্থাৎ অনুসন্ধান, আটক এবং গ্রেফতার করতে পারবে সীমান্তরক্ষী বাহিনী। আগে এই চৌহদ্দি ছিল মাত্র ১৫ কিলোমিটার। পাশাপাশি, গুজরাতে বিএসএফের অপারেশনাল কাজের পরিধি ৮০ থেকে কমিয়ে ৫০ কিলোমিটার করা হয়েছে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক।
বঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমানা রয়েছে ২২১৭ কিলোমিটার। কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দুই দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া এবং উত্তর ২৪ পরগনার বেশ কিছু অংশের এলাকাবাসী বিভিন্ন সময়েই কেন্দ্রীয় বাহিনীর অত্যাচারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে এসেছেন। বিএসএফের কাজের পরিধি বৃদ্ধিতে এই সংঘাত আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্ট মহলের। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি নিয়ে ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তৃণমূলের পক্ষ থেকেও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। সেই বিতর্কই ফের উস্কে দিলেন এ বার রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৬৮’এর ১৩৯ ধারা অনুযায়ী, বিএসএফ অ্যাক্টে অপারেশনাল কাজকর্মের চৌহদ্দির সীমানা বাড়ানোর ক্ষমতা রয়েছে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর। এই ধারা ২০১৪ সালে শেষবার সংশোধন করা হয়েছিল। সেখানে বিভিন্ন রাজ্যের ক্ষেত্রে পরিধি ভিন্ন ছিল। কিন্তু সেই পরিধিকে এক অঙ্কের তলায় আনতে এই সংশোধন। এরফলে গোরু, মাদক, জাল নোট পাচার এবং অনুপ্রবেশ রোধ করা যাবে বলেই অনুমান কেন্দ্রের।